লাইফস্টাইল ডেস্ক : আমাদের মধ্যে অনেকেই ডিমের প্রেমে পাগল। তাই তো তাঁরা প্রায় রোজই ডিমের পোচ, হাফ বয়েল, ডিম সিদ্ধ বা ঝাল-ঝাল ডিমের কারি খেয়েই রসনাতৃপ্তি সারেন। আর ডিম ভক্ত এই মানুষদের দেখেই চোখ কপালে ওঠে কিছু সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞদের। এইসব স্বঘোষিত বিশেষজ্ঞদের কথায়, ডিমের মতো একটি উপকারী খাবারও নাকি রোজ রোজ খাওয়া উচিত নয়। এই ভুলের ফাঁদে পা দিলে নাকি একাধিক রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কাই বাড়ে।
আর সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞদের এহেন সাবধানবাণী শোনার পর অনেকের মনেই প্রশ্ন আসে যে, সত্যিই কি প্রতিদিন ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের আদৌ পক্ষে ক্ষতিকর? আর এই বিষয়ে বিশদে জানতে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম কলকাতা শহরের রুবি হাসপাতালের সিনিয়র ডায়েটিশিয়ান স্বাগতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। আসুন এই বিষয়ে তাঁর মতামত জেনে নেওয়া যাক।
পুষ্টির ভাণ্ডার ডিম
একটি ডিম থেকে পাওয়া যায় মোটামুটি ৭২ ক্যালোরি, ৫ গ্রাম ফ্যাট, ২০৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল, ৬৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ০৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ৬ গ্রাম প্রোটিন। সেই সঙ্গে এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়াম এবং আয়রনের মতো অত্যন্ত উপকারী কিছু ভিটামিন এবং খনিজের ভাণ্ডার। তাই নিয়মিত ডিম খেলে যে দেহে পুষ্টির ঘাটতি মিটে যাবে, তা তো বলাই বাহুল্য! এমনকী এই খাবারের গুণে একাধিক রোগব্যাধিও থাকবে দূরে। তাই সুস্থ থাকতে যত দ্রুত সম্ভব ডিমের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নিন।
প্রতিদিন কি ডিম খাওয়া উচিত?
এই প্রশ্নের উত্তরে স্বাগতা মুখোপাধ্যায় জানালেন, যে কোনও মানুষ দিনে একটা গোটা ডিম খেতেই পারেন। তাতেই শরীরে অ্যালবুমিন নামক একটি প্রোটিনের ঘাটতি মিটে যাবে। এমনকী ডায়াবিটিস, হাই প্রেশারের মতো অসুখ থাকলেও রোজ একটা গোটা ডিম খাওয়াই যায়। তাই এইসব অসুখ থাকলেও ডিম খাওয়া বন্ধ করবেন না যেন। এই ভুলটা করলে কিন্তু শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কাই বাড়বে।
কোলেস্টেরল থাকলেও ডিম খেতে পারেন
অনেকেই মনে করেন, ডিম খেলে বোধহয় কোলেস্টরল বাড়বে। তবে কথাটা আংশিক সত্য বলেই জানালেন স্বাগতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ডিমের কুসুমে খারাপ কোলেস্টেরল থাকলেও তা খুবই নগণ্য মাত্রায় রয়েছে। তাই দিনে একটা ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা তেমন একটা থাকে না বললেই চলে। তবে কোলেস্টেরল রোগীরা দিনে একটার বেশি ডিম খাবেন না। তাহলে কিন্তু সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।
দিনে কতকগুলি ডিম খাওয়া উচিত?
বয়স কম থাকলে দিনে ২ টো ডিম অনায়াসে খাওয়া যায়। তবে বয়স ৩৫-এর গণ্ডি পেরিয়ে গেলে ১টা ডিম গলাধঃকরণ করার মধ্যেই নিজেকে আটকে রাখার চেষ্টা করুন। তাতেই শরীর থাকবে সুস্থ-সবল। আর ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশন, কোলেস্টেরল থাকলেও দিনে একটা ডিমই খেতে হবে। নইলে শরীরের স্বাস্থ্য বিগড়ে যেতে সময় লাগবে না। তাই এবার থেকে ডিম খাওয়ার সময় সংখ্যার এই হিসাবটা মাথায় রাখবেন।
বিপদের নাম অ্যাভিডিন
অনেকেই হাফ বয়লে বা ডিমের পোচ করে খেতে ভালোবাসেন। তবে এভাবে অর্ধসিদ্ধ ডিম খেলে শরীরে প্রবেশ করতে পারে অ্যাভিডিন নামক একটি উপাদান। আর মুশকিল হল, আমাদের শরীর কিন্তু এই উপাদানটিকে হজম করতে পারে না। ফলে হাফ বয়েল বা পোচ খাওয়ার পর গ্যাস-অ্যাসিডিটির ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই এবার থেকে ডিম খেতে হলে তা সিদ্ধ করেই খাওয়ার পরামর্শ দিলেন স্বাগতা মুখোপাধ্যায়।
Disclaimer: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।