লাইফস্টাইল ডেস্ক : মানুষের মনের মতো ঘোরাঘুরির ধরনও বিচিত্র। কেউ আছেন ঘুরতে গিয়ে অ্যাডভেঞ্চারের পেছনে ছোটেন, বনবাদাড়ে ঘুরে বেড়ান। আবার এমন মানুষও দেখা যায়, যারা ভ্রমণে গিয়ে শুধুই ঘুমাতে পছন্দ করেন! ভ্রমণে গিয়ে আরাম করে আর ঘুমিয়েই তারা উদ্দীপনা বোধ করেন। এদের সংখ্যা এতো বেড়ে গেছে যে, তাঁদের কেন্দ্র করে রীতিমতো আলাদা এক ধরনের পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।
একে বলা হচ্ছে ‘স্লিপ ট্যুরিজম’ বা ঘুমের পর্যটন। পর্যটকেরা যেন ভ্রমণে রোজকার কর্মব্যস্ততা আর চাপ থেকে দূরে গিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে পারেন, সে ধারণা থেকেই গড়ে উঠেছে এ পর্যটন।
তবে ২৪ ঘণ্টা নিশ্চয়ই কারো পক্ষে একটানা ঘুমিয়ে কাটানো সম্ভব নয়। যোগব্যায়াম, সাঁতার, স্পা ট্রিটমেন্ট, পারলার সেশন আর বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর খাবার চেখে দেখাও তাই এমন ভ্রমণের অন্তর্ভুক্ত। যেসব পেশাজীবীকে সব সময় প্রচণ্ড চাপের মধ্যে থাকতে হয়, মূলত তারাই এই পর্যটনের টার্গেট গ্রাহক।
কর্মজীবীদের জন্য এই ঘুমময় ভ্রমণের যেসব উপকারিতা রয়েছে তা হলো-
কাজের চাপ থেকে মুক্তি
গবেষণা বলে, একজন প্রাপ্তবয়স্কের দিনে গড়ে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। অথচ মানুষ প্রতিদিন ৭ ঘণ্টাও ঘুমানোর সুযোগ পায় না। ঘুমের অভাব মানুষের কর্মশক্তি হ্রাস করে। ৬৭ শতাংশ নারী এবং ৫৬ শতাংশ পুরুষ কর্মক্ষেত্রে ঘুমকাতুরে হয়ে পড়েন, যা তাঁদের কাজে বাজেভাবে প্রভাব ফেলে। কাজের চাপকে ঝেড়ে ফেলে চনমনে অনুভবের জন্য স্লিপ ভ্যাকেশন তাই দারুণ কার্যকর।
উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি
ঘুম ভালো হলে মানুষের কর্মোৎপাদনশীলতা বাড়ে। ঘুমময় ভ্রমণের সময়টায় মানুষ ইয়োগা, মেডিটেশন, স্পা, প্রকৃতির মধ্যে হাঁটা ইত্যাদি কার্যক্রমে অংশ নেয়। এমন ভ্রমণ শেষে কর্মক্ষেত্রে ফেরার পর কাজের গতি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। কাজে মনোযোগও বাড়ে।
স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
সমন্বিতভাবে স্লিপ ট্যুরিজম এমন একটি ব্যবস্থা যার ইতিবাচক প্রভাবে শরীর ও মন উভয়ই সুস্থ থাকে। এই ভ্রমণ স্ট্রেস হরমোনের পরিমাণ কমিয়ে শরীরের সম্ভাব্য সমস্যাগুলোর সমাধানের পথ সহজ করে।
ঘুরতে গিয়ে ঘুমানোর মতো কিছু জায়গা এখন আমাদের দেশেও রয়েছে যেখানে আপনি থাকবেন একদম প্রকৃতির মাঝে, আপনাকে বিরক্ত করার জন্য যেখানে থাকবে না কোনো কোলাহল আর কর্মব্যস্ততা।
সেন্টমার্টিন: বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের চারপাশে সাগর আর আকাশের নীল মিলেমিশে একাকার। সৈকতের সারি সারি নারিকেল গাছ ও গাঙচিলের ঝাঁক দেখতে দেখতে স্নিগ্ধ বাতাসে গা জুড়িয়ে নিতে পারবেন।
শ্রীমঙ্গল: বাংলাদেশের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থানগুলোর তালিকা করলে চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গলের নাম ওপরের দিকেই থাকবে। ধুলা-ধোঁয়ার শহর ছেড়ে স্বস্তির বাতাস নিতে এখানে ঘুরতে যেতে পারেন। পর্যটকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে শ্রীমঙ্গলে গড়ে উঠেছে পাঁচতারকা মানের প্রচুর রিসোর্ট, যেখানে আপনি অনায়াসে ক’টা দিন ঘুমিয়ে আসতে পারবেন। দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট, গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, বালিশিরা রিসোর্ট, দুসাই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
রাঙ্গামাটি: স্বচ্ছ লেকের বুকে ভেসে পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে রাঙ্গামাটি ভ্রমণে যেতে পারেন। এখানকার কিছু রিসোর্টে লেকপাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি কায়াকিং করতে পারবেন।
টাঙ্গুয়ার হাওর: দিন দিন ভ্রমণপিপাসুদের ভিড় বাড়ছে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে। কয়েক বছর যাবত হাওরে ভাসছে ‘হাউসবোট’ নামে পরিচিত বিশেষায়িত নৌযান। লেকের সৌন্দর্য দেখার পাশাপাশি সারাদিন রিল্যাক্স করতে পারবেন এতে। এর বাইরেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকেরা ছুটে আসেন এখানকার যাদুকাটা নদী, নিলাদ্রী লেক, হাওর বিলাস, পাহাড় বিলাস, বারেকটিলা, শিমুল বাগান দেখতে।
গেম প্রেমিকদের ভিন্নমাত্রা দিতে ইনফিনিক্স হট সিরিজের তিন স্মার্টফোন
তবে যারা ঢাকার বাইরে ভ্রমণ করতে চান না, তারা ঢাকার অদূরে গাজীপুর এবং মুন্সিগঞ্জে যেতে পারেন। সাম্প্রতিক সময়ে খুব ভালো মানের কিছু রিসোর্ট গড়ে উঠেছে সেখানে। গাজীপুরের আকর্ষণীয় ও বিলাসবহুল রিসোর্টগুলোর মধ্যে রয়েছে সারাহ রিসোর্ট, ছুটি রিসোর্ট, ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা, নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট, রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট প্রভৃতি। আবার মুন্সিগঞ্জ জেলার পদ্মা রিসোর্ট, ঢালী’স আম্বার রিসোর্ট, সুবর্ণভূমি রিসোর্ট ইত্যাদি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ইতিবাচক রিভিউ চোখে পড়ে।
তথ্যসূত্র- বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।