লাইফস্টাইল ডেস্ক : ঘুম প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন। তবে অনেকের চোখেই নিদ্রা নেই। তাঁরা সারারাত জেগে কাটিয়ে দেন। যদিও মনে রাখতে হবে, এই অভ্যাস কিন্তু আদতে একটি অসুখ। এর থেকে শরীরে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে ত্রাতা হল ঘুমের ওষুধ। তবে অনেকের মনে এই ওষুধ নিয়ে নানা ধারণা রয়েছে। তার সত্যি মিথ্যে আজ যাচাই হবে।
ঘুম আমাদের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার অঙ্গ। ঘুমের মধ্যে শরীর নিজেকে সারিয়ে নেয়। এই সময় কোষ নিজের মেরামতি করে। এছাড়া মস্তিষ্ক সারাদিন ধরে গৃহীত তথ্য যাচাই করে থাকে। তাই আমরা পরের দিন ঠিকমতো কাজ করতে পারি।
অনেকের দুই চোখের পলক এক হয় না। এই কারণে দেখা দেয় সমস্যা। তখন ঘুমের ওষুধ দিয়ে থাকেন চিকিৎসক। এর মাধ্যমে মানুষ ভালো থাকেন। এখন প্রচুর রোগী এই ওষুধ খান।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা শহরের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: রুদ্রজিৎ পাল জানালেন, ঘুমের ওষুধ মস্তিষ্কের উপর কাজ করে। সেখানে কিছু নিউরোট্রান্সমিটারের কাজের ধরনে অদলবদল ঘটায়। ফলে ঘুম আসে। এই ড্রাগকে স্নায়ুর ওষুধ হিসাবে চিহ্নিত করা যায়।
১. কাদের দেওয়া হয়?
ডা: পাল বলেন, ঘুমের ওষুধ দিতে হয় কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে। এই যেমন যাঁদের নিদ্রাহীনতা বা ইনসোমনিয়া রয়েছে। এনারা দিনের পর দিন ঘুমাতে পারেন না। তাই তাঁদের ওষুধ দিতে হয়। এছাড়াও অনেক সময় অতিরিক্ত উৎকণ্ঠার জন্য ঘুম আসে না। এদের দিতে হয় ঘুমের ওষুধ। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্লিপ সাইকেল নষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ যেই সময় ঘুমানোর কথা সেই সময় চোখ বন্ধ হচ্ছে না। এই পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করতেও দেওয়া হয় ওষুধ।
২. ঘুমের ওষুধ খেলে কি নেশা হয়?
ডা: পালের মত হল, না নেশা হয় না। এই ওষুধে কোনও প্রকার নেশা হওয়ার কারণ নেই। তবে একটা সমস্যা হয়ে থাকে। আসলে এই ওষুধ খাওয়ার অনেকের অভ্যাস হয়ে যায়। তাই ওষুধ থামিয়ে দিতে বলা হলেও নিজেই কিনে খেতে থাকেন রোগীরা। এটা দুর্ভাগ্যের বিষয়। এটাকে ড্রাগ ডিপেন্ডেন্সি বলা হয়। তাই চিকিৎসকরা খুব ভেবে চিন্তে এই ওষুধ দিয়ে থাকেন। রোগীর যেন অভ্যাস না তৈরি হয়, সেই দিকটা নজরে রাখা প্রয়োজন।
৩. পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে
এই ওষুধ চিকিৎসক একটি নির্দিষ্ট ডোজে খেতে বলে থাকেন। আর তা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খেতে হয়। তার বাইরে গেলেই সমস্যা তৈরি হতে পারে, এমনটাই মত ডা: পালের। দেখা গিয়েছে যে এই ওষুধের নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। সেক্ষেত্রে গাড়ি চালানো থেকে শুরু করে যন্ত্র ব্যবহার সম্ভব হয় না। কারণ চোখে ঘুমের রেশ লেগে থাকে। এটা খারাপ দিক। তাই আপনাকে এই ওষুধ খাওয়ার আগে সতর্ক হতে হবে। এছাড়া শরীরের নানান অঙ্গে এর প্রভাব রয়েছে। বিশেষত, লিভার ও মস্তিষ্কের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।
৪. একটু সচেতনতা
চিকিৎসক তাঁদেরই ঘুমের ওষুধ খেতে হবেন, যাঁদের প্রয়োজন আছে। নির্দিষ্ট ডোজে, নির্দিষ্ট দিন পর্যন্ত খেতে হবে। তার বেশি খেলেই মুশকিল। তাই সতর্ক হয়ে যান। এক্ষেত্রে অভ্যাস ছাড়তে গেলে আবার কাঠখড় পোড়াতে হবে। ঘুমের আগে মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না, টিভি দেখার অভ্যাস ছাড়তে হবে রাতের দিকে ইত্যাদি। তবেই আপনি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন। তাই এই বিষয়গুলি মনে রাখতে হবে।
৫. কাদের দেওয়া যায় না?
ডা: পালের মতে, প্রেগন্যান্সির সময় এবং ছোটদের এই ওষুধ দেওয়া চাপের। খুব প্রয়োজন না হলে এড়িয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া লিভারের অসুখ থাকলেও এই ওষুধ যতটা সম্ভব না লেখার চেষ্টা করা হয়। তবে শরীরের প্রয়োজন হলে আপনাকে ওষুধ খেতেই হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।