দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় এ বছর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে পানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নের মাধবপাড়া গ্রামজুড়ে এখন সবুজে মোড়া পানের বরজ। তবে, এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে চাষিদের দীর্ঘশ্বাস। ভালো ফলন সত্ত্বেও বাজারে দাম কমে যাওয়ায় পান চাষিদের আনন্দ পরিণত হয়েছে হতাশায়।

কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে হাকিমপুরে প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছ। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৫৪০ মেট্রিক টন পান। এ অঞ্চলের বহু পরিবার প্রজন্ম ধরে পানচাষের ওপর জীবন-জীবিকা চালিয়ে আসছেন।
বাংলার সংস্কৃতি, আতিথেয়তা ও সামাজিক আড্ডায় পান এক অপরিহার্য উপাদান। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা ভেবেছিলেন, এবার হয়তো দীর্ঘদিনের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন। বাজারে পানের দাম না থাকায় তাদের সব হিসাব-নিকাশ পানিতে ভেসে গেছে।
মাধবপাড়া গ্রামের পানচাষি মাইদুল শেখ বলেন, “এখন পান বিক্রি করে লাভ তো নেই, উল্টো খরচই উঠছে না। সার, কীটনাশক, সেচ সবকিছুর দামই বেশি। আগে ৫০ টাকায় যে পান বিক্রি হতো, এখন সেই পান ২৫ টাকায় দিতে হচ্ছে।”
পান চাষি তারিকুল ইসলাম বলেন, “১০০ পিস পান ২৫-৩০ টাকায় বেচতে হচ্ছে। গত বছর এই দামে অর্ধেক পানও পাওয়া যায়নি। খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছি।”
ইমরান হোসেন নামে অপর চাষি বলেন, “পানচাষ আমাদের বাপ-দাদার পেশা। ফলন খুব ভালো, কিন্তু পাইকাররা ইচ্ছামতো দাম বলেন। বিক্রি না করলে তো পচে যাবে, তাই কম দামেই দিয়ে দিতে হচ্ছে।”
সোহরাব আলী বলেন, “পানের এমন ফলন বহুদিন দেখিনি। এমন খারাপ দামও কখনো দেখিনি। পান রাখার জায়গা নেই, বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।”
দামের কারণে বরজে কাজ কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর শ্রমিকরাও। আগে প্রতিদিন কাজ মিললেও এখন অনেক বরজেই কাজ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, “চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ মৌসুমে পানের ফলন ভালো হলেও দামের বিষয়টি বাজারের চাহিদা ও যোগানের ওপর নির্ভর করে। কৃষকের ক্ষতি যাতে কম হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



