আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই মোটরসাইকেলকে বেশ রোমাঞ্চকর একটি বাহন হিসেবেই দেখেন। কারণ যার একটি মোটরসাইকেল থাকে তাহলে তিনি পাড়ি দিতে পারেন দূর অজানায় সুদীর্ঘ কোনো অভিযাত্রায়।
গায়ে লেদার জ্যাকেট, পায়ে বুট- পুরো অভিযাত্রীর সাজে দুর্দান্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে ঠান্ডা বাতাস গায়ে মেখে মোটরসাইকেলে চলে সারাবিশ্ব চরে বেড়ানো যায়।
কে না যেতে চায় এমন মোটরসাইকেল অভিযাত্রায়? যদি আপনি যেতে চান তাহলে আজকের লেখাটি আপনার জন্য। আজকের লেখায় থাকছে বিশ্বসেরা শিহরণ জাগানিয়া কিছু রাস্তার কথা, যেগুলোর বাঁকে আপনি মোটরসাইকেলে করে হারিয়ে যেতে পারবেন।
টেইল অব ড্রাগন
নর্থ ক্যারোলিনা ও টেনেসীর সীমান্ত ঘেঁষে চলে ডিলস গ্যাপ গিরিপথ। ডিলস গ্যাপে ইউএস ১২৯ ও এনসি ২৮ হাইওয়ে দুটি একে অপরকে অতিক্রম করেছে। ডিলস গ্যাপ গিরিপথের যে অংশে হাইওয়ে দুটি পরস্পরকে ছেদ করেছে, সেই অংশটিকে বলা হয় মোটরসাইকেলপ্রেমীদের স্বর্গ। কারণ এই ডিলস গ্যাপ পেরিয়ে টেনেসীতে গিয়ে পড়লে পড়বেন ‘টেইল অব ড্রাগন’ সড়কে। ১১ মাইলের এই সড়কে আছে ৩১৮টি বাঁক।
ট্রল ল্যাডার
নরওয়ের রমা মিউনিসিপ্যালিটিতে অবস্থিত ট্রল ল্যাডার একটি সর্পিলাকার গিরিপথ। এটি মূলত নরউইজান কাউন্টি রোড ৬৩ এর একটি অংশ, যা আন্দালসনেস শহর ও ভালদাল গ্রামকে সংযুক্ত করেছে। খাড়া পাহাড়ের ১১টি উঁচু-নিচু হেয়ারপিন স্টাইলের বাঁকের এই রাস্তাটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ। ট্রল ল্যাডারের অবিশ্বাস্য উচ্চতা এবং ভয়াবহ বাঁক অতি দুঃসাহসী মোটরসাইকেল আরোহীদেরও বুক কাঁপিয়ে দেয়।
লস কারাকোলেস পাস
পাসো দা লস লিবারতাদোরেস। আর্জেন্টিনা-চিলি সীমান্তে অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে নান্দনিক সড়কগুলোর একটি। আন্দেজ অধ্যুষিত আর্জেন্টিনা-চিলি সীমান্তের অনেক জায়গাই দুর্গম ও জন-মানবহীন। ৩,২০৭ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই গিরিখাতটিও তেমন। এটি চিলির রাজধানী সান্তিয়াগো থেকে আর্জেন্টিনার মেন্দোজা এলাকায় যাওয়ার প্রধান পথ। তাই প্রচুর যানবাহনের ভিড় থাকে। তবে অত্যধিক উচ্চতা ও বাঁকের কারণে সাবধানে গাড়ি চালাতে হয়। বেশিরভাগ সময়ই রাস্তা তুষারে ঢাকা থাকে। তবে যদি বিপদজনক বাঁক ও তুষারঢাকা রাস্তা পেরিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যেতে পারেন পুরোটা পথ, মিলবে উপযুক্ত পুরষ্কার।
আমালফি কোস্ট
একপাশে খাড়া পাহাড়, একপাশে নীল সাগর। মাঝখান দিয়ে চলে গেছে আঁকাবাঁকা কালো রাস্তা। বলছি বিশ্বের অন্যতম সেরা উপকূলবর্তী রাস্তা আমালফি কোস্টের কথা। ইতালির দক্ষিণে সরেন্তো থেকে সালের্নো উপকূল জুড়ে বিস্তৃত ৬০ কি.মি. দীর্ঘ এই রাস্তাটি। আমালফি কোস্ট ধরে চলতে গিয়ে চোখে পড়ে ভূমধ্যসাগরীয় চিরচেনা দৃশ্য- বিস্তীর্ণ নীল সাগর, পাহাড়ের কোলে বাড়িঘর, ব্যস্ত শহর, সবুজ বন।
প্যাসিফিক কোস্ট হাইওয়ে
প্রশান্ত মহাসাগরের তীর ঘেঁষে চলে যাওয়া এই সড়কটি ক্যালিফোর্নিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘে সড়ক। ১,০৫৬ কি.মি. দীর্ঘ এই সড়ক দশ ঘণ্টায় পাড়ি দেয়া যায়। তবে থেমে থেমে কয়েকদিন ধরে মোটরসাইকেল চালিয়ে ঘুরে দেখলে আপনি এর অসাধারণ সামুদ্রিক দৃশ্য, সমুদ্র তীরবর্তী গ্রাম, বিশুদ্ধ বনভূমির দেখা পাবেন খুব কাছ থেকে। প্যাসিফিক কোস্ট হাইওয়ে ভ্রমণ শুরু করতে পারেন ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত শহর সানফ্রানসিসকো থেকে। সানফ্রানসিসকোতে পা রাখা মানে আপনাকে গোল্ডেন গেট পার্ক দেখতেই হবে।
গ্রেট ওশন রোড
দক্ষিণ মহাসাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ, শান্ত-সৌম্য সমুদ্রতটবর্তী শহর, সবুজের ছাউনি ঘেরা রেইনফরেস্ট, গাছে গাছে কোয়ালার লাফঝাঁপ, চুনাপাথরের পর্বত প্রভৃতির জন্য গ্রেট ওশন রোড বিখ্যাত। প্রায় ৬০০ কি.মি. দীর্ঘ এই রাস্তা সরাসরি মোটরসাইকেলে করে কয়েক ঘণ্টায় ঘুরে দেখা যায়, তবে তাতে এর আশেপাশের আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানগুলোর সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন আপনি। তাই আস্তে আস্তে ঘুরে দেখাই ভালো হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।