ইতালির গবেষকরা জানিয়েছেন, স্বপ্ন মনে রাখাটা কোনো র্যান্ডম ঘটনা নয়, বরং এটি আমাদের অভ্যাস ও ঘুমের প্যাটার্নের উপর নির্ভরশীল। যারা বেশি দিনড্রিম বা মনোযোগী ভাবনার মধ্যে আছেন, যারা স্বপ্নকে গুরুত্ব দেন এবং যারা হালকা ঘুমের পর্যায়ে বেশি সময় কাটান, তারা স্বপ্ন আরও স্পষ্টভাবে মনে রাখতে সক্ষম। এছাড়া বসন্তকালে সূর্যের আলোও স্বপ্ন স্মৃতিতে ভূমিকা রাখে।
গবেষণায় দেখা গেছে, তরুণরা স্বপ্ন অনেক বেশি স্পষ্টভাবে মনে রাখতে পারে, যেখানে বয়স্করা প্রায়ই ‘সাদা স্বপ্ন’ বা কোনো বিশদ স্মৃতিহীন স্বপ্নের অভিজ্ঞতা পান।
স্বপ্ন মনে রাখার পার্থক্য কেন হয়?
IMT School for Advanced Studies Lucca-এর গবেষকরা ১৮ থেকে ৭০ বছর বয়সী ২০০ স্বেচ্ছাসেবীকে ১৫ দিন ধরে স্বপ্নের স্মৃতি নথিভুক্ত করতে বলেছেন। পাশাপাশি তাদের উদ্বেগ, স্বপ্নের প্রতি আগ্রহ এবং দিনড্রিম বা মনোভাবী ভাবনার প্রবণতা মাপা হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ Findings হলো, যারা বেশি দিনড্রিম বা ভাবনায় ভাসেন, তারা স্বপ্ন আরও সহজে মনে রাখতে পারেন। দিনড্রিম মস্তিষ্কের স্মৃতি ও কল্পনার নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করে, যা স্বপ্নের বিশদ কনসাসাসে আনার জন্য সহায়ক।
মনোভাব, ঘুমের পর্যায় এবং বয়সের প্রভাব
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা স্বপ্নকে আনন্দদায়ক বা গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন, তারা বেশি স্মরণশক্তি পান। যারা স্বপ্নকে গুরুত্ব দেন না, তারা প্রায়ই ভুলে যান।
ঘুমের প্যাটার্নও গুরুত্বপূর্ণ। হালকা ঘুমের দীর্ঘ সময় স্বপ্নের স্মৃতিকে তীব্র করে। হালকা ঘুম অচেতন স্বপ্ন ও সচেতন চেতনার মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করে।
বয়সভিত্তিক পার্থক্যও স্পষ্ট। তরুণরা স্বপ্ন স্মৃতিতে অনেক ভালো, যেখানে বয়স্করা ‘সাদা স্বপ্ন’ অভিজ্ঞতা পান—স্বপ্ন দেখার অনুভূতি থাকলেও কোনো বিশদ মনে থাকে না।
ঋতু ও সূর্যের আলোও প্রভাব ফেলে
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, বসন্তকালে অংশগ্রহণকারীরা বেশি স্বপ্ন মনে রাখতে পারেন। এটি সম্ভবত সূর্যের আলো বেশি থাকা এবং তার প্রভাবের সঙ্গে সম্পর্কিত। সূর্যের আলো সার্কেডিয়ান রিদম নিয়ন্ত্রণ, মুড বাড়ানো এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে, যা স্বপ্ন স্মৃতিতে সহায়ক।
স্বপ্ন গবেষণা এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য
গবেষক প্রফেসর জিউলিও বার্নার্দি বলেন, “স্বপ্ন মনে রাখা র্যান্ডম নয়, এটি ব্যক্তিগত মনোভাব, জ্ঞানগত বৈশিষ্ট্য এবং ঘুমের গতিশীলতার সঙ্গে সম্পর্কিত।” গবেষণাটি দেখায়, স্বপ্নের ধরন মস্তিষ্কের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। আগের গবেষণা ইঙ্গিত দিয়েছে, স্বপ্নের পরিবর্তন ডিমেনশিয়া বা পারকিনসনের মতো রোগের প্রাথমিক সংকেত হতে পারে।
উপসংহারে, স্বপ্ন মনে রাখা একাধিক সংযুক্ত কারণে নির্ধারিত হয়, শুধুমাত্র ভাগ্যের উপর নয়। যারা বেশি দিনড্রিম করেন এবং স্বপ্নকে গুরুত্ব দেন, তারা স্বাভাবিকভাবেই বেশি স্বপ্ন মনে রাখতে পারেন। তরুণরা, হালকা ঘুমের পর্যায়ে বেশি সময় কাটানো ব্যক্তিরা এবং বসন্তকালের সূর্যের আলো পেয়েও স্বপ্ন আরও স্পষ্টভাবে মনে রাখেন।
স্বপ্নের জগৎ অন্বেষণ করতে আগ্রহী যারা, তারা কৌতূহল বৃদ্ধি, দিনড্রিম এবং স্বাস্থ্যকর ঘুমের অভ্যাস বজায় রাখলে স্বপ্ন স্মৃতি উন্নত করতে পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।