জুম-বাংলা ডেস্ক : সাহিত্যে নোবেল পাওয়া বিশেষ মর্যাদার। পদার্থবিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার চেয়ে তুলনামূলক একটু বেশি বয়সেই নোবেল পান সাহিত্যিকরা। অবশ্য বিজ্ঞানীদের কেউ কেউ নব্বই বছর পেরিয়ে গিয়েও নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তবু পদার্থবিজ্ঞানে যেমন ২৫ বছর বয়সী, রসায়নে ত্রিশের কোঠার বিজ্ঞানীরাও যেমন নোবেল পেয়েছেন, সাহিত্যে সেখানে সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ীর বয়স ছিল ৪১ বছর।
তিনি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় চরিত্র মোগলির স্রষ্টা রুইডার্ড ক্লিপিলিং। সালটা ১৯০৭। সেবছরই তিনি নোবেল পুরস্কার মাত্র ৪১ বছর বয়সে। তিনি ছিলেন নোবেলজয়ী প্রথম ব্রিটিশ সাহিত্যিক। জন্ম ও বেড়ে ওঠা ভারতে হলেও তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন একজন ব্রিটিশ লেখক হিসেবে।
রুডইয়ার্ড কিপলিংয়ের জন্ম ১৮৬৫ সালে ভারতের বোম্বে (বর্তমান মুম্বাই) শহরে। তাঁর বাবা ছিলেন শিক্ষক, আর মা শখের বসে লেখালেখি করেন। ছোটবেলায় কিপলিং অনেকটা সময় ভারতে কাটান, যা তার লেখায় বিশেষ প্রভাব ফেলে। কিপলিংয়ের বয়স যখন ছয় বছর, তখন তাকে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয় শিক্ষার জন্য। তবে স্কুলের জীবন খুব একটা সুখকর ছিল না।ভারত ছেড়ে সেখানে গিয়ে মানসিকভাবে ভালো ছিলেন না। পরে আবার ভারতে ফিরে আসেন এবং সাংবাদিকতা শুরু করেন। তখন থেকেই আসলে তাঁর সাহিত্যচর্চা শুরু।
১৮৮৮ সালে ক্লিপলিংয়ের প্রথম ‘প্লেইন টেলস ফ্রম দ্য’ প্রকাশিত হয়—কলকতা থেকে। এই বইয়ে তিনি ব্রিটিশ ভারতের দৈনন্দিন জীবনের ছোট গল্পগুলো ফুটিয়ে তোলেন। পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে বইটি। কিন্তু তাঁকে বিশ্ব জুড়ে খ্যাতি এনে দেয় ‘মোগলি’কে প্রধান চরিত্র করে লেখা ‘দ্য জাঙ্গল বুক’ বইটি। বইটা প্রকাশ ১৮৯৪ সালে। সারা বিশ্বের শিশু কিশোরদের মন জয় করে নেয় বইটি।
এই গল্প জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া এক মানব শিশু মোগলি এবং তার বনের বন্ধুদের নিয়ে। এক শ ত্রিশ বছর পেরিয়ে এসেও আজও সেই বিশ্বাব্যাপী শিশুদের মধ্যে সমান জনপ্রিয়। কিপলিংয়ের লেখায় ব্রিটিশ ভারতের গল্প এবং সেখানকার মানুষের জীবন স্পষ্টভাবে উঠে আসে। যদিও তার কিছু লেখা ব্রিটিশ উপনিবেশবাদকে সমর্থন করে, এবং তার জন্য তিনি সমালোচিতও হয়েছেন। তবে তার গল্প বলার কৌশল, গল্পের ঢঙ এবং কাল্পনি শক্তি তাকে ইতিহাসের অন্যতম শক্তিশালী সাহিত্যিক স্থান করে দিয়েছে।
কিপলিং তার জীবনের শেষ সময়গুলো ইংল্যান্ডে কাটান। ১৯৩৬ সালের ১৮ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পরেও, তাঁর সাহিত্যকর্ম আজও জীবন্ত এবং সারা বিশ্বের পাঠকদের প্রেরণা জোগাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।