প্রস্রাব শুধু হলুদ রঙের নয়। লাল, কমলা, সবুজ, নীল, বেগুনি এমনকি রঙধনুর মতোও হতে পারে প্রস্রাবের রঙ। সম্প্রতি বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই রঙের ভিন্নতা শরীরের ভেতরের অবস্থার ইঙ্গিত দেয়।
প্রস্রাব মূলত শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করার প্রক্রিয়া। প্রোটিন, লোহিত রক্তকণিকা ও মাংসপেশি ভেঙে তৈরি হওয়া নাইট্রোজেনজাত বর্জ্য। যেমন ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিন প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
রঙ অনুযায়ী সম্ভাব্য সমস্যা
লাল: লাল রঙ সাধারণত প্রস্রাবে রক্ত মিশে থাকার ইঙ্গিত দেয়। কিডনি, প্রোস্টেট, মূত্রনালি বা মূত্রাশয়ে রক্তপাত থাকলে প্রস্রাব লাল হয়ে যায়। হালকা থেকে গাঢ় রঙ পর্যন্ত রক্তপাতের মাত্রা ভিন্ন হতে পারে। কারণ হতে পারে কিডনিতে পাথর, ক্যান্সার, আঘাত বা সংক্রমণ। তবে বেশি বিটরুট খেলে সাময়িকভাবে লালচে রঙ আসতে পারে।
কমলা ও হলুদ: স্বাভাবিক প্রস্রাব হলুদ রঙের হয়। গাঢ় হলুদ বা কমলা রঙ সাধারণত শরীরে পানির ঘাটতি নির্দেশ করে। প্রস্রাবের হলুদ রঙের জন্য দায়ী ইউরোবিলিন। কিডনি ও লিভার সম্পর্কিত সমস্যা থাকলে, যেমন পিত্তনালিতে ব্লক, প্রস্রাবের রং কমলা বা বাদামি হতে পারে।
সবুজ ও নীল: বিরল হলেও কিছু ক্ষেত্রে প্রস্রাব সবুজ বা নীল হতে পারে। খাদ্য, ওষুধ বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ যেমন সিউডোমোনাস অ্যারুগিনোসা এই রঙ পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। সংক্রমণের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের সঙ্গে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
বেগুনি বা গোলাপি: বেগুনি রঙের প্রস্রাব পোরফাইরিয়া বা ‘পার্পল ইউরিন ব্যাগ সিনড্রোম’-এর কারণে হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে সামান্য বিটরুট বা রক্তের উপস্থিতি প্রস্রাবকে গোলাপি বা রোজ ওয়াইনের মতো রঙ দিতে পারে।
গাঢ় বাদামি বা কালো: কোকা-কোলার মতো গাঢ় রঙে প্রস্রাব র্যাবডোমাইলাইসিস, কিডনির প্রদাহ বা অতিরিক্ত বিলিরুবিনের কারণে হতে পারে।
রংহীন বা পাতলা প্রস্রাব: রংহীন বা অত্যন্ত পাতলা প্রস্রাবও ডায়াবেটিস বা অতিরিক্ত মদপানের ইঙ্গিত দিতে পারে।
চিকিৎসকরা বলছেন, প্রস্রাবের রঙ শরীরের অবস্থা বোঝার একটি সূচক হলেও এটি সবসময় নির্ভুল নয়। অস্বাভাবিক রঙ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান করা ও স্বাস্থ্য সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।