স্পোর্টস ডেস্ক : গত বছর নারী ফুটবল দলের মিয়ানমার সফর বাতিল নিয়ে বাহাস হয়েছিল বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের। দেশের দুই শীর্ষ ক্রীড়া সংস্থার প্রধানের মধ্যকার এই কথার লড়াই শুরু করেছিলেন বাফুফে সভাপতি, আর তাকে জবাব দেন বিসিবি বস। সে সময়ে সংবাদের শিরোনাম হয়ে উঠেছিল তাদের কথার লড়াই। তাদের মধ্যকার স্নায়ুযুদ্ধের পর পেরিয়ে গেছে প্রায় ১০ মাস।
https://inews.zoombangla.com/wp-content/uploads/2024/02/পাপন-ও-বাফুফে-সভাপতি-কাজী-সালাউদ্দিন.jpg
এদিকে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থার সভাপতির পাশাপাশি পাপন এখন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী। তবে আগের পদেই আছেন সালাউদ্দিন। সম্প্রতি বাইপাস সার্জারি হয়েছে কাজী সালাউদ্দিনের। এরপর থেকে বাসাতেই থাকছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সালাউদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে তার বারিধারার বাসায় যান যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল। এ সময়ে পাপনের সঙ্গে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তাকে দেখা যায়নি।
বৈঠক শেষে পাপনের দাবি, এতদিনের সম্পর্ক একদিনে নষ্ট হয় না।
প্রায় ২০ মিনিটের সাক্ষাৎ শেষে নাজমুল হাসানের ভাষ্য, ওনার যখন সার্জারিটা হয়, তখন তো নির্বাচনে (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন) শেষ মুহূর্ত। আমি তখন এলাকায় ছিলাম। তখন থেকেই ওনার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। ঢাকায় এসেই ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে দেখতে যেতে চাই, কী অবস্থা আমাকে জানাতে বলি। ওনারা বলেন, জানাবেন। আমি আবার বাইরে চলে গেলাম এসিসির এজিএমের জন্য। আসার পর বললেন যেকোনো সময় আসতে পারেন। পরশু দিন বলল, আমি আজ চলে এলাম দেখতে।
নাজমুল যোগ করেন, দেখে মনে হলো আল্লাহর রহমতে উনি খুব ভালো আছেন এখন। অনেক সুস্থ। হাঁটাচলা করছেন স্বাচ্ছন্দ্যে, সেটা দেখে ভালো লেগেছে। সার্জারির পর পুনর্বাসন দরকার আছে। আরও কিছুদিন সেটা করতে হবে।
সৌজন্য সাক্ষাতে ফুটবল নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রীর মন্তব্য, ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে আমি আগেই বসেছি। তখনই ওনাদের মূল ইস্যুগুলো শুনেছি। আজকে উনি (কাজী সালাউদ্দিন) কয়েকটি সমস্যার কথা বলেছেন। আমি বলেছি, ঠিক আছে আপনি একেবারে সুস্থ হয়ে আসেন। এর মধ্যে কিছু কাগজপত্র পাঠাতে বলেছি, আমি দেখব।
ক্রীড়ামন্ত্রী আরও বলেন, একই জিনিস। একটা হচ্ছে, খেলার মাঠ নেই। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম লম্বা সময় ধরে বন্ধ হয়ে আছে, ওনাদের খেলার কোনো জায়গা নেই। এটা বড় সমস্যা। পরশু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম দেখতে যাচ্ছি আমি। কীভাবে তাড়াতাড়ি শেষ করা যায়, আপ্রাণ চেষ্টা করব। খেলার কোনো জায়গা বের করতে পারি কি না, দেখব।
দুজনের বৈরিত প্রশ্নে নাজমুলের জবাব, এতো বছরের সম্পর্ক একদিনের কথায় তো আর শেষ হয়ে যায় না। ছোটবেলা থেকে মাঠে যেতামই ওনার খেলা দেখতে। এটা তো অস্বীকার করার পথ নেই। ওনার মতো কিংবদন্তি ফুটবলার বাংলাদেশে আর নেই। অনেক সময় অনেক কথায় উনি আহত হতে পারেন, আমিও পারি। সেটা ওখানেই শেষ।
এর আগে, গত বছরের মার্চে এক সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে আমাকে ফোন করেছিল। দল পাঠাতে আর্থিক সহায়তার কথাও জানিয়েছে। আর্থিক সমস্যার কথা প্রধানমন্ত্রীকে কেন জানাইনি, এ কথাও আমাকে বলা হয়েছে।
সে সময়ে নাজমুলকে খোঁচা দিয়ে সালাউদ্দিন বলেছিলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ফুটবলেরও প্রিয়। সবার ব্যক্তিত্ব তো এক নয়। আমি তো লোক দেখিয়ে বলব না, প্রধানমন্ত্রী ফোন দিয়েছে। আমি ফুটবল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছি। স্বাধীনতা থেকে আজ পর্যন্ত। আমি ওই নাটক করতে পারব না। লোক দেখাতে পারব না। দুঃখিত, এটাই আমার চরিত্র।
সালাউদ্দিনের কথার জবাবে বিসিবিপ্রধান বলেছিলেন, যে যত কথাই বলুক, এসব নিয়ে আমি মন খারাপ করি না। তবে আমার কাছে সবচেয়ে খারাপ লাগছে মেয়েরা (অলিম্পিক বাছাই) যেতে পারল না! তা–ও মাত্র ২০ লাখ টাকার জন্য! এর চেয়ে দুঃখ, কষ্ট… মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কী কষ্টটাই না পেয়েছেন!
নাজমুল তখন এ-ও বলেছিলেন, আমি জানি না, এটা নিয়ে কেন বলেছে। আমার মনে হয় সমস্যাটা আপনাদের (গণমাধ্যম), আপনারা (সাংবাদিক) এতো বাজে প্রশ্ন করলেন কেন। আপনারা হিসাব চাচ্ছেন, টাকা কী করেছেন। এমন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে যান কেন। এটা করলে তো উনার মাথা খারাপ হবে, এটা সবাই জানেন। এমন প্রশ্ন করেন কেন। করলে মাথা ঠিক থাকবে?
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।