Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home সুস্থতার প্রথম ধাপ: সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার কেন অপরিহার্য?
    লাইফস্টাইল ডেস্ক
    লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য

    সুস্থতার প্রথম ধাপ: সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার কেন অপরিহার্য?

    লাইফস্টাইল ডেস্কMynul Islam NadimJuly 16, 202512 Mins Read
    Advertisement

    ভোরবেলার আলো ফোটার আগেই ছুটছেন অফিসের দিকে? স্কুলের বাস ধরতে দৌড়াচ্ছেন শিশুটি? নাকি ঘরের কাজে ব্যস্ত হয়ে এক কাপ চায়ে চুমুক দিয়েই সারাটা সকাল? থামুন একটু! এই ছুটে চলার মাঝেই হারিয়ে ফেলছেন না তো জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি? হ্যাঁ, সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার শুধু পেট ভরানোর মাধ্যম নয়, এটি আপনার সারাদিনের শক্তি, মনোযোগ, এমনকি দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতার ভিত্তিপ্রস্তর। গবেষণা বলছে, যারা নিয়মিত পুষ্টিকর সকালের নাস্তা খান, তাদের স্থূলতা, টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায় (American Heart Association, 2023)। কিন্তু কেন এই এক বেলার খাবার এতটা গুরুত্বপূর্ণ? আর কোন খাবারগুলো বেছে নিলে তা হয়ে উঠবে “সুস্থতার প্রথম ধাপ”? চলুন, গভীরে ডুব দেই।

    সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার

    সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার: কেন এটি আপনার দিনের সেরা সিদ্ধান্ত?

    রাতের দীর্ঘ উপবাসের পর সকালের খাবারই প্রথম বার্তাবাহক যা বলে, “জাগো! শরীর, এখন কাজের সময়!”। সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার শুধু ক্ষুধা মেটায় না, এটি জটিল শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াকে সচল করে:

    • মেটাবলিজমের ইঞ্জিন স্টার্ট: রাতভর ঘুমানোর সময় আমাদের বিপাক হার প্রায় ১৫-২০% কমে যায়। পুষ্টিকর সকালের নাস্তা এই “ঘুমন্ত” মেটাবলিজমকে জাগিয়ে তোলে, সারাদিন ক্যালরি পোড়ানোর গতি বাড়ায়। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তা খান, তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা তুলনামূলকভাবে সহজ (Harvard T.H. Chan School of Public Health, 2022)।
    • মস্তিষ্কের শক্তি জোগান: গ্লুকোজই মস্তিষ্কের প্রাথমিক জ্বালানি। সকালের নাস্তা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পুনরুদ্ধার করে, মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এবং সৃজনশীলতা বাড়ায়। বাংলাদেশের জাতীয় পুষ্টি সেবার (National Nutrition Services) তথ্য অনুসারে, স্কুলগামী শিশুদের ক্ষেত্রে পুষ্টিকর সকালের নাস্তা তাদের শ্রেণিকক্ষের পারফরম্যান্স উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করে।
    • ক্ষুধা ও খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ: সকালে ভালো করে খেলে দুপুরের আগেই তীব্র ক্ষুধা লাগে না। এটি অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্সিং বা দুপুরে অতিভোজন রোধ করে, রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে। গবেষণা নিশ্চিত করে, সকালের নাস্তা বাদ দিলে দুপুর ও রাতের খাবারে উচ্চ-ক্যালরি ও কম পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
    • পুষ্টির ঘাটতি পূরণ: সকালের নাস্তা দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় ভিটামিন (বি ভিটামিন, ভিটামিন সি, ডি), মিনারেল (ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক), ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, যেখানে অনেকেরই পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে, সকালের নাস্তা এই ঘাটতি মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
    • মেজাজের ভারসাম্য: খালি পেটে কাজ করলে সহজেই বিরক্তি, ক্লান্তি বা উদাসীনতা চেপে বসে। পুষ্টিকর সকালের নাস্তা সেরোটোনিনের মতো “ফিল-গুড” হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে, মেজাজ উন্নত করে এবং মানসিক চাপ মোকাবিলার ক্ষমতা বাড়ায়।

    বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি উদ্বেগজনক তথ্য: বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ (BDHS) ২০২২ এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশের প্রায় ৩৫% নারী এবং ২৫% পুরুষ নিয়মিত সকালের নাস্তা বাদ দেন বা অপর্যাপ্ত গ্রহণ করেন, যা পুষ্টিহীনতা ও দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকিকে বাড়িয়ে তুলছে।

    স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তার অপরিহার্য উপাদানগুলো কী কী?

    সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার মানে শুধু পেট ভরা নয়, বরং শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য সঠিক পুষ্টি সরবরাহ করা। একটি আদর্শ সকালের নাস্তায় এই তিনটি ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টের সমন্বয় থাকা চাই:

    1. জটিল শর্করা (Complex Carbohydrates): এগুলোই শক্তির প্রাথমিক উৎস। তবে সহজ শর্করা (সাদা রুটি, চিনি, মিষ্টি) এড়িয়ে চলুন। বেছে নিন:

      • পুরো দানাশস্য: ওটস (ভেজানো বা রান্না করা), বার্লি, লাল আটার রুটি/পরোটা, ব্রাউন রাইসের ভাত/চিঁড়া, কর্নফ্লেক্স (চিনি ছাড়া, পুরো দানার)।
      • ফল: কলা, আপেল, পেয়ারা, পেঁপে, আম, জাম্বুরা (ভিটামিন সি ও ফাইবারের ভালো উৎস)।
      • শাকসবজি: পালংশাক, লাউশাক, মিষ্টিকুমড়া দিয়ে পরোটা বা ভাজি (বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কিন্তু পুষ্টিকর)।
    2. প্রোটিন (Protein): প্রোটিন পেশি গঠন, টিস্যু মেরামত এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখার জন্য অত্যাবশ্যক। সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার তালিকায় অবশ্যই যোগ করুন:

      • ডিম: সেদ্ধ, পোচ, অমলেট, ভাজি – সবচেয়ে সহজলভ্য ও সম্পূর্ণ প্রোটিনের উৎস।
      • দই/দুধ: প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের দুর্দান্ত উৎস। টক দইয়ে থাকে উপকারী প্রোবায়োটিক্স।
      • ডাল/শিম জাতীয় খাবার: ছোলার ডাল, মুগ ডালের খিচুড়ি, সেদ্ধ ছোলা, নানারকম শিমের ভাজি/তরকারি (সাশ্রয়ী ও পুষ্টিকর)।
      • পনির/কটেজ চিজ: দুধ থেকে তৈরি অন্যান্য পণ্য।
      • বাদাম ও বীজ: চিনাবাদাম, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, তিল, ফ্ল্যাক্সসিড, চিয়া সিড (এক মুঠো দই বা ওটসের সাথে মিশিয়ে নিন)।
    3. সুস্বাস্থ্যকর চর্বি (Healthy Fats): চর্বি ভয় পাওয়ার কিছু নেই, বেছে নিতে হবে সঠিক চর্বি। এগুলো শক্তি দেয়, হরমোন উৎপাদনে সাহায্য করে এবং ভিটামিন শোষণে সহায়তা করে।
      • অসম্পৃক্ত চর্বি: বাদাম, বীজ, অ্যাভোকাডো, অলিভ অয়েল, সরিষার তেল (মেপে ব্যবহার করুন)।
      • ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্সসিড, আখরোট।

    এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ:

    • ফাইবার (Fiber): হজমশক্তি ঠিক রাখে, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে, দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। ফল, শাকসবজি, পুরো দানাশস্য, বাদাম ও বীজে প্রচুর ফাইবার থাকে।
    • জল: সকালে উঠেই এক থেকে দুই গ্লাস পানি পান করা রাতের ডিহাইড্রেশন কাটাতে এবং বিপাক সচল করতে জরুরি। সকালের নাস্তার সাথেও পানি বা হার্বাল চা পান করুন।

    সকালে খাওয়ার জন্য ৫টি সহজ, পুষ্টিকর ও বাঙালিয়ানা সমৃদ্ধ খাবার আইডিয়া

    সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার নির্বাচন করতে হবে বাস্তবসম্মত, সহজলভ্য এবং আমাদের স্বাদের অনুকূল। এখানে রইলো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাস্তবায়নযোগ্য কিছু দারুণ বিকল্প:

    1. ওটস বা ডালিয়া দিয়ে শুরু হোক দিন:

      • কেন ভালো: ওটসে প্রচুর দ্রবণীয় ফাইবার (বিটা-গ্লুকান) থাকে যা কোলেস্টেরল কমাতে ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এতে আছে প্রোটিন ও জটিল কার্বোহাইড্রেট।
      • বাংলাদেশি টুইস্ট: সাধারণ ওটস বা ডালিয়া (সুজি/গমের) সেদ্ধ করুন দুধ বা পানিতে। মিশিয়ে নিন এক মুঠো কাটা আম/কলা/পেঁপে, এক চিমটি দারুচিনি গুঁড়ো, এক চা চামচ চিনাবাদাম বা তিলের বাটা, এবং সামান্য গুড় বা মধু (ঐচ্ছিক)। গরম গরম পরিবেশন করুন। চাইলে সেদ্ধ ছোলা বা একটি ডিমের সাদা অংশ যোগ করে প্রোটিন বাড়ান।
      • দ্রুত প্রস্তুতি: রাতে ওটস, দুধ/পানি, ফল ও বাদাম একটি জারে রেখে ফ্রিজে ঢাকনা দিয়ে রাখুন। সকালে সরাসরি খেয়ে নিন (Overnight Oats)।
    2. ডিম: প্রকৃতির পাওয়ার হাউস:

      • কেন ভালো: ডিমে আছে উচ্চমানের সম্পূর্ণ প্রোটিন, ভিটামিন ডি, বি ভিটামিন, কোলিন (মস্তিষ্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ) এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি স্যাচুরেশন ইনডেক্সে সর্বোচ্চ স্কোর করে, মানে পেট ভরা রাখে দীর্ঘক্ষণ।
      • বাংলাদেশি টুইস্ট: শুধু সেদ্ধ ডিম নয়! বানান পুষ্টিকর অমলেট: ১-২ টি ডিম ফেটিয়ে নিন, মিশিয়ে নিন কুচি করা পেঁয়াজ, টমেটো, শিম, পালংশাক বা যে কোনও সবজি। সামান্য তেলে বা ঘিয়ে হালকা করে ভেজে নিন। এক টুকরো লাল আটার রুটির সাথে খান। অথবা, ডাল-ভাতের সাথে সেদ্ধ ডিম বা ডিমভাজিও ভালো বিকল্প।
      • দ্রুত প্রস্তুতি: সেদ্ধ ডিম সিদ্ধ করে রেখে দিতে পারেন ফ্রিজে। সকালে খোসা ছাড়িয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নিন।
    3. দই ও ফলের মিশ্রণ: প্রোবায়োটিকের উৎস:

      • কেন ভালো: দই (বিশেষ করে টক দই) প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং উপকারী প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ায় ভরপুর, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। ফল যোগ করলে ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবারের মাত্রা বাড়ে।
      • বাংলাদেশি টুইস্ট: এক বাটি টক দই বা মিষ্টি দইয়ে মিশিয়ে নিন কাটা কলা, পেঁপে, আম, আপেল বা মৌসুমি ফল। ছড়িয়ে দিন এক মুঠো কাঠবাদাম/চিনাবাদাম কুচি, তিল বা ফ্ল্যাক্সসিড। চাইলে এক চিমটি জিরা গুঁড়ো বা চাট মসলা দিয়ে স্বাদ বাড়ান (বাংলাদেশি টুইস্ট!)।
      • দ্রুত প্রস্তুতি: ফলগুলো আগের রাতেই কেটে ফ্রিজে রাখুন। সকালে দই ও বাদামের সাথে মিশিয়ে নিন।
    4. লাল আটার রুটি/পরোটার সাথে পুষ্টিকর তরকারি:

      • কেন ভালো: লাল আটা (গমের আটা) সাদা আটার চেয়ে বেশি ফাইবার, ভিটামিন ও মিনারেল ধারণ করে। এর সাথে প্রোটিন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ তরকারি যোগ করলে এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ সকালের নাস্তা হয়ে ওঠে।
      • বাংলাদেশি টুইস্ট: ১-২ টি লাল আটার রুটি বা পরোটা। সাথে নিন:
        • ডাল: মুগ ডালের ঝোল, মসুর ডাল ভাজি, বা সেদ্ধ ছোলা আলু ও পেঁয়াজ দিয়ে মেখে।
        • শাকসবজি: পালংশাক ভাজি, লাউশাক ভাজি, মিষ্টিকুমড়া ভাজি, আলু-বেগুন ভর্তা।
        • ডিম: ডিম ভাজি বা ডিমের কারি।
        • সবজি ওমলেট: সবজি দিয়ে ওমলেট বানিয়ে রুটির মধ্যে রোল করে নিন।
      • দ্রুত প্রস্তুতি: ডাল বা শাকসবজির তরকারি আগের রাতের বেঁচে যাওয়া খাবার থেকে গরম করে নিন। রুটি বা পরোটা তাজা বানানো ভালো, তবে সময় না থাকলে গরম করে নেওয়া যায়।
    5. স্থানীয় ও মৌসুমী খাবারের সমাহার:
      • কেন ভালো: স্থানীয় ও মৌসুমী খাবার সাধারণত তাজা, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব। এগুলোতে পুষ্টির ঘনত্বও বেশি থাকে।
      • বাংলাদেশি টুইস্ট:
        • খিচুড়ি: মুগ ডাল-ভাতের হালকা খিচুড়ি (চাল কম, ডাল বেশি) সাথে সেদ্ধ ডিম বা আলু ভর্তা।
        • পান্তা ভাত: গতকালের ভাত পান্তা করে (জলে ভিজিয়ে) সাথে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, শুকনো মরিচ ভাজা, মাছ ভাজা বা আলু ভর্তা। প্রোবায়োটিকের ভালো উৎস (যদিও অতিরিক্ত লবণ ও ঝাল নিয়ন্ত্রণে রাখুন)।
        • চিঁড়া: ভিজানো চিঁড়ার সাথে কলা/আম, গুড়/মধু, দুধ/দই এবং বাদাম কুচি মিশিয়ে নিন। দ্রুত প্রস্তুত, হালকা কিন্তু পুষ্টিকর।
        • মৌসুমী ফল: প্রচুর পরিমাণে মৌসুমী ফল (আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস, পেয়ারা, কলা) দিয়ে শুরু করুন দিন। সাথে এক মুঠো বাদাম বা একটি ডিম সেদ্ধ খেতে পারেন।

    বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন বলেন, “আমাদের অনেকেরই ধারণা, রুটি-পরোটাই সকালের নাস্তা। কিন্তু শাকসবজি, ফল, ডাল, ডিম, দই এবং বাদামকে গুরুত্ব দিতে হবে। একটি রুটি বা পরোটার সাথে প্রচুর শাকসবজির ভাজি বা ডাল রাখুন। এক বাটি দই-ফল বা একমুঠো ভেজানো ছোলাও হতে পারে দারুণ বিকল্প। মূল কথা হলো, বৈচিত্র্য আনুন এবং প্রোটিন-ফাইবারকে প্রাধান্য দিন।”

    ব্যস্ত সকালেও পুষ্টি: সময় বাঁচানোর কৌশল

    সময়ের অভাবে সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার বাদ পড়ে যায়? এই সহজ টিপসগুলো মেনে দেখুন:

    1. আগের রাতেই প্রস্তুতি: রাতেই সকালের নাস্তার কিছু কাজ সেরে রাখুন। যেমন: ফল কেটে রাখা, ডাল সিদ্ধ করে রাখা, ওটস জারে ভিজিয়ে রাখা (Overnight Oats), শাকসবজি ধুয়ে কেটে রাখা।
    2. সরলতা বেছে নিন: জটিল রেসিপি নয়, সহজ জিনিস বেছে নিন। একটি সেদ্ধ ডিম, একটি কলা, এক মুঠো বাদাম – এটাও তো শুরু! দই-ফল মিশ্রণ তৈরি করতে মাত্র ২ মিনিট লাগে।
    3. পোর্টেবল বিকল্প: যদি সত্যিই সময় না থাকে, এমন কিছু তৈরি করুন যা সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবেন। যেমন: লাল আটার রুটি মুড়ে সবজি ওমলেট, ফল ও বাদামের একটি ছোট প্যাক, স্যান্ডউইচ (লাল আটার ব্রেডে ডিম/পনির সাথে শসা-টমেটো), বা ওভারনাইট ওটসের জার।
    4. সপ্তাহান্তে ব্যাচ প্রস্তুতি: সপ্তাহান্তে কিছু খাবার আগে থেকে প্রস্তুত করে ফ্রিজে রাখুন। যেমন: পুরো গমের মাফিন (ডিম, কলা, ওটস দিয়ে), ডালের বড়া (বেক করা), বা সুপের স্টক।
    5. ১০ মিনিটের নিয়ম: নিজেকে বলুন, “আমি সকালের ১০ মিনিট শুধু নাস্তা তৈরির জন্য রাখব।” এই ১০ মিনিট আপনার সারাদিনের উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে দেবে।

    বিশেষ স্বাস্থ্য অবস্থায় সকালের নাস্তা: কিছু পরামর্শ

    সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার বাছাইয়ের সময় স্বাস্থ্যের বিশেষ অবস্থাগুলো বিবেচনায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ:

    • ডায়াবেটিস থাকলে (Diabetes):

      • জটিল কার্বোহাইড্রেট ও উচ্চ ফাইবারকে প্রাধান্য দিন (লাল আটা, ওটস, ঢেঁকিছাটা চালের ভাত/চিঁড়া, প্রচুর শাকসবজি)।
      • সহজ শর্করা (চিনি, সাদা রুটি, মিষ্টি ফল রস) এড়িয়ে চলুন।
      • প্রোটিন (ডিম, দই, ডাল, বাদাম) অবশ্যই যোগ করুন। এটি রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
      • স্বাদের জন্য গুড়/মধুর বদলে ডায়াবেটিক সুইটনার বা অল্প পরিমাণে ফল ব্যবহার করুন।
      • খাওয়ার পর হালকা হাঁটাচলা উপকারী। (তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি – BADAS)
    • ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে (Weight Management):

      • প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান যা পেট ভরা রাখবে (ডিম, দই, ডাল, ওটস, শাকসবজি, বাদাম)।
      • ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ করুন, তবে খালি পেটে যাবেন না। সকালের নাস্তা বাদ দিলে পরে অতিভোজন হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
      • স্বাস্থ্যকর চর্বি (বাদাম, বীজ, অ্যাভোকাডো) পরিমিত পরিমাণে রাখুন। এগুলো স্যাটিয়েটি দেয়।
      • তেল-চর্বি ও অতিরিক্ত লবণ কমিয়ে খান। ভাজাপোড়া কমিয়ে সেদ্ধ, গ্রিলড বা কম তেলে রান্না করুন।
      • পানি পান করুন পর্যাপ্ত।
    • হৃদরোগের ঝুঁকি থাকলে (Heart Health):
      • সম্পৃক্ত চর্বি ও ট্রান্স ফ্যাট এড়িয়ে চলুন (ঘি/মাখনের অতিরিক্ত ব্যবহার, প্রক্রিয়াজাত মাংস, প্যাকেটজাত ভাজা স্ন্যাক্স)।
      • অসম্পৃক্ত চর্বির উৎস (বাদাম, বীজ, অ্যাভোকাডো, মাছ) বেছে নিন।
      • ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার (ওটস, ফল, শাকসবজি, পুরো শস্য) কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
      • লবণ (সোডিয়াম) গ্রহণ সীমিত করুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্যাকেটজাত সস, আচার কম খান।
      • ডাল, বাদাম, মাছ, পাতাজ শাকসবজি (পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের উৎস) রাখুন নাস্তায়।

    সকালের নাস্তা ও শিশু-কিশোরদের বিকাশ: স্কুলে যাওয়া শিশুর জন্য সকালে খাওয়ার উপযোগী খাবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শারীরিক বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের বিকাশ, শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাদের নাস্তায় অবশ্যই রাখুন: ডিম/দুধ/দই, ফল, পুরো শস্যের রুটি/চিঁড়া/ওটস, এবং বাদাম। রঙিন ও আকর্ষণীয়ভাবে (ফল কেটে আকৃতি দিয়ে, ছোট ছোট স্যান্ডউইচ) পরিবেশন করুন। শিশুরা যা দেখে খায়, তাই খেতে চায় – তাই অভিভাবকদেরও পুষ্টিকর নাস্তা খাওয়া উচিত।

    বাংলাদেশি মায়েদের জন্য টিপ: ঢাকার একটি নামকরা স্কুলের ডায়েটিশিয়ান সায়মা আক্তার বলেন, “অনেক মা অভিযোগ করেন, বাচ্চা সকালে খেতে চায় না। তাদের জন্য টিপস: রাতের খাবার খুব দেরিতে বা খুব ভারি করবেন না। সকালে উঠে এক গ্লাস হালকা গরম পানি বা লেবু পানি খাওয়ান। খাবারে রং আর ক্রাঞ্চ যোগ করুন – গাজর কুচি, শসা স্লাইস, রংবেরঙের ফল। তাদের সাথে বসে খান। ছোট ছোট অংশে শুরু করুন।”

    জেনে রাখুন (FAQs)

    1. প্রশ্ন: সকালের নাস্তা না খেলে কি আসলেই কোনো ক্ষতি হয়?
      উত্তর: হ্যাঁ, ক্ষতি হয়। নাস্তা বাদ দিলে দেহ রাতের দীর্ঘ উপবাসের পরেও পর্যাপ্ত জ্বালানি পায় না। এর ফলে মেটাবলিজম ধীর হয়ে যায়, ক্লান্তি, বিরক্তি, মনোযোগের অভাব দেখা দেয়। দীর্ঘমেয়াদে নিয়মিত নাস্তা বাদ দেওয়া স্থূলতা, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং পুষ্টির ঘাটতির ঝুঁকি বাড়ায়। সারাদিন অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্সিং বা অতিভাবনের প্রবণতাও বেড়ে যায়।

    2. প্রশ্ন: ডায়াবেটিস রোগীরা সকালের নাস্তায় কী কী খেতে পারেন?
      উত্তর: ডায়াবেটিস রোগীদের নাস্তায় জটিল কার্বোহাইড্রেট (লাল আটার রুটি/পরোটা, ওটস, ঢেঁকিছাটা চালের ভাত/চিঁড়া) এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার (শাকসবজি, ফল – আম/আঙুরের বদলে পেয়ারা/জাম্বুরা/আপেল) রাখা উচিত। প্রোটিনের জন্য ডিম (সাদা অংশ বেশি), দই (টক দই ভালো), ডাল, সেদ্ধ ছোলা বা বাদাম রাখুন। চিনি, মধু, গুড়, সাদা ময়দা, মিষ্টি ফল ও রস এড়িয়ে চলুন। খাওয়ার পর হালকা হাঁটাচলা উপকারী।

    3. প্রশ্ন: ওজন কমানোর জন্য সকালের নাস্তায় কী খাব?
      উত্তর: ওজন কমানোর জন্য সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া নয়, বরং সঠিক খাবার বেছে নেওয়া জরুরি। প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খান যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখবে: ডিম (সেদ্ধ/পোচ), টক দই বা গ্রিক ইয়োগার্ট, ওটস (চিনি ছাড়া), ডালের স্যুপ, ফল ও বাদাম। প্রচুর শাকসবজি যোগ করুন। পরিমিত স্বাস্থ্যকর চর্বি (আধা চামচ অলিভ অয়েল, এক মুঠো বাদাম) রাখুন। ভাজাপোড়া, মিষ্টি, সাদা রুটি/পরোটা, চিনিযুক্ত সিরিয়াল এড়িয়ে চলুন। পানি পান করুন পর্যাপ্ত।

    4. প্রশ্ন: শিশুদের সকালের নাস্তায় কোন খাবারগুলো অবশ্যই রাখা উচিত?
      উত্তর: শিশুদের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য পুষ্টিকর সকালের নাস্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই রাখুন:

      • প্রোটিন: ডিম, দুধ/দই, পনির, ডাল, সেদ্ধ ছোলা।
      • শক্তি ও ফাইবার: পুরো শস্যের রুটি/পরোটা, ওটস, চিঁড়া (দুধ/দই/ফলের সাথে), ফল (কলা, আপেল, পেয়ারা, মৌসুমী ফল)।
      • ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন: দুধ, দই, পনির, সবুজ শাকসবজি (পরোটায় মিশিয়ে)।
      • স্বাস্থ্যকর চর্বি: বাদাম বাটা বা কুচি (দুধ/দই/ওটসে মিশিয়ে)। রঙিন ও আকর্ষণীয়ভাবে পরিবেশন করুন।
    5. প্রশ্ন: খুব অল্প সময়ে প্রস্তুত করা যায় এমন সকালের নাস্তার আইডিয়া কী?
      উত্তর: হ্যাঁ, দ্রুত প্রস্তুত করার জন্য:

      • ওভারনাইট ওটস: রাতে ওটস, দুধ/দই, ফল, বাদাম জারে মিশিয়ে ফ্রিজে রাখুন। সকালে খেয়ে নিন।
      • ফল ও বাদাম/দই: কলা/আপেল/পেয়ারা কেটে এক মুঠো বাদাম বা এক বাটি দইয়ের সাথে খান।
      • সেদ্ধ ডিম + ফল: ২টি সেদ্ধ ডিম (রাতে সিদ্ধ করে রাখুন) সাথে একটি ফল।
      • স্যান্ডউইচ: লাল আটার রুটিতে পনির/ডিমের সাদা অংশ/ছোলা ভর্তা ও শসা/টমেটো স্লাইস দিয়ে স্যান্ডউইচ বানান।
      • চিঁড়া-দই-ফল: এক বাটি চিঁড়ায় টক দই বা দুধ, কাটা ফল ও এক চিমটি গুড়/মধু মিশিয়ে নিন।
    6. প্রশ্ন: সকালের নাস্তায় কত ক্যালোরি গ্রহণ করা উচিত?
      উত্তর: সকালের নাস্তায় ক্যালোরির পরিমাণ ব্যক্তির বয়স, লিঙ্গ, শারীরিক গঠন, কর্মতৎপরতা এবং সারাদিনের মোট ক্যালোরি চাহিদার উপর নির্ভর করে। সাধারণত, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এটি দৈনিক ক্যালোরি চাহিদার ২০-২৫% হওয়া উচিত। যেমন, যদি কারো দৈনিক চাহিদা ২০০০ ক্যালোরি হয়, তবে সকালের নাস্তায় ৪০০-৫০০ ক্যালোরি রাখা যেতে পারে। পুষ্টি গুণাগুণ (প্রোটিন, ফাইবার) ক্যালোরির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন ডায়েটিশিয়ানের কাছ থেকে ব্যক্তিগত পরামর্শ নেওয়া ভালো।

    

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    Bengali breakfast Breakfast foods Child nutrition Diabetes breakfast Healthy breakfast Nutritious diet weight loss breakfast অপরিহার্য উপযোগী ওজন কমানোর নাস্তা কেন খাওয়ার’ খাবার ডায়াবেটিস ডায়েট ধাপ পুষ্টিকর খাবার প্রথম বাংলাদেশি নাস্তা লাইফস্টাইল শিশুর পুষ্টি সকালে সকালের খাবার রেসিপি সকালের নাস্তা সুস্থ জীবনযাপন সুস্থতার স্বাস্থ্য স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তা
    Related Posts
    Banana

    কলা কখন খেলে বেশি উপকার, দিনে না রাতে?

    July 16, 2025
    এলাচ

    বাড়িতে বসে এলাচ চাষ করার দুর্দান্ত উপায়, হবে বাম্পার ফলন

    July 16, 2025
    আসন্ন বলিউড সিনেমা তালিকা

    আসন্ন বলিউড সিনেমা তালিকা: অপেক্ষিত মুভির আপডেট!

    July 16, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Banana

    কলা কখন খেলে বেশি উপকার, দিনে না রাতে?

    ওয়েব সিরিজ

    ভরপুর রোমান্সের দৃশ্য নিয়ে মুক্তি পেল প্রাইম প্লের নতুন ওয়েব সিরিজ

    ওয়েব সিরিজ

    সামনে এলো ভরপুর মাস্তি নিয়ে নতুন ওয়েব সিরিজ, একা দেখুন

    এলাচ

    বাড়িতে বসে এলাচ চাষ করার দুর্দান্ত উপায়, হবে বাম্পার ফলন

    মঈন খান

    যারা সহিংসতা ঘটাচ্ছেন, তারা সঠিক পথে ফিরে আসুন : মঈন খান

    Interview

    কোন জিনিস ১ কেজি কিনলে হয়ে যায় ২ কেজি, আর ফেলে দেওয়ার সময় হয়ে যায় ৩ কেজি

    Hasan

    কর্মস্থলে অনুপস্থিত, বরখাস্ত ডিআইজি হাসানুজ্জামান

    Manikganj

    এনসিপি নেতাকর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মানিকগঞ্জে মহাসড়ক অবরোধ

    Nahid

    ব্লকেড তুলে নেওয়ার আহ্বান এনসিপির

    Selena

    প্রেমিকের সঙ্গে সেলেনার বিয়ে!

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.