জুমবাংলা ডেস্ক : চলতি মৌসুমে সিলেটে সুপারির ফলন কম হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও খরা উভয় করণেই সুপারির ফলন কমেছে। তবে সুপারির ফলন কমলেও দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। সুপারির দ্বিগুণ দামে বাগানিরা খুশি হলেও হতাশ ক্রেতারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেটের জকিগঞ্জ, জৈন্তা, কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় সুপারির ব্যাপক চাষ হয়। এই সকল উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই সুপারির গাছ রয়েছে। অনেকে বাণিজ্যিকভাবেও সুপারির বাগান করেছেন। চারা রোপনের ৩ বছর পর থেকে গাছে সুপারি ধরতে শুরু করে। বছরের বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে সুপারি গাছে ফুল আসে আর কার্তিক মাস থেকে ফসল পাকা শুরু হয়। অগ্রহায়ণ থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত সুপারি সংগ্রহের মৌসুম।
সরেজমিনে সিলেটের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয়ভাবে সুপারি ‘ঘা’ ও ‘ভি’ হিসেবে ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। ১২টি সুপারিতে এক ঘা আর ৪০ ঘায়ে এক ভি। গত বছর ৫০০-৬০০ টাকা ভি সুপারি বিক্রি হয়েছে। এ বছর ওই সুপারি ১২০০-১৪০০ টাকা ভি বিক্রি হচ্ছে।
সিলেট অঞ্চলের বড় সুপারির হাট কানাইঘাট উপজেলার সুরইঘাট বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কার্তিক, অগ্রহায়ণ ও পৌষ এই তিন মাস এ বাজারে সুপারি বেচাকেনা জমে ওঠে। সপ্তাহে প্রতি মঙ্গলবার বসে এই সুপারির বাজার। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখানে সুপারি কিনতে আসেন।
সুরইঘাট বাজারের ব্যবসায়ী উমর আলী বলেন, আগে স্থানীয় সুপারির পাশাপাশি ভারত থেকেও সুপারির এই হাটে আসতো। এবছর স্থানীয় সুপারির ফলন কম হয়েছে এবং ভারত থেকেও সুপারি আসা বন্ধ। তাই সুপারির দাম বেড়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলার নকশিয়াপুঞ্জি এলাকার বাগান মালিক ওয়েলকাম লম্বা বলেন, আমার ৮টি সুপারির বাগান রয়েছে। প্রতি বছর সুপারি বিক্রি করে ১৫-২০ লাখ টাকা আয় করতে পারি। তবে এ বছর সুপারির ফলন কম। অনেক গাছে সুপারিই আসেনি। আশা করছি এবছর ৫-৬ লাখ টাকার সুপারি বিক্রি করতে পারবো।
কানাইঘাট উপজেলার সুনাতনপুঞ্জির সুপারি বাগানমালিক আবদুস সালাম বলেন, এ বছর সুপারির গাছে ফল আসার সময়ে অধিক বৃষ্টি হয়েছে। আবার পরে অধিক খরা ছিল। তাই তাঁর বাগানের অধিকাংশ গাছে সুপারি ধরেনি।
গোয়াইনঘাট উপজেলার আলীরগাঁও ইউনিয়নের সুপারি ব্যবসায়ী রফিক আহমদ বলেন, আমি স্থানীয় অন্যান্য ছোট বাজারগুলো থেকে সুপারি সংগ্রহ করে সিলেটেরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। এবছর সুপারির ফলন কম ও ভারত থেকে সুপারি আসেনি তাই বাজারে সুপারির দাম অনেক বেশি। আমি ইতোমধ্যে কয়েকটি বাজার ঘুরে এসেছি। বাজারগুলোতে দাম খুব চড়া। গত বছর যে সুপারি ৫০০ টাকা ছিল, এবার সেটা ১২০০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ব্যবসা করতে সাহস পাচ্ছি না।
সিলেট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন বলেন, সিলেট জেলায় ২ হাজার ২৩৮ হেক্টর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছে। গত মৌসুমে ১৩ হাজার ৭৭৪ মেট্রিক টন শুকনা ও ২০ হাজার ৬৫৭ মেট্রিক টন কাঁচা সুপারি সংগ্রহ করা হয়েছে। এবছর সমপরিমান চাষ হলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন কম। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পর্যাপ্ত সুপারির না থাকায় দাম বাড়তি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।