জুমবাংলা ডেস্ক : ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়া নামে এক পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ বেশ আলোড়ন তোলে সম্প্রতি। ঘটনা গড়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী পর্যন্ত। গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। এবার সেই সেই অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে চার সদস্যের কমিটি, যাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া এ প্রতিবেদন উত্থাপন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে সকল তথ্য উপাত্ত সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ওএমআর শিট ছেঁড়ার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। বরং, পরীক্ষা দিয়ে ভর্তির সুযোগ লাভ অসম্ভব বুঝতে পেরে ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলার গল্প মঞ্চস্থ করেছেন হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়া নামে ওই শিক্ষার্থী।
তদন্ত কমিটি জানায়, অভিযোগকারী হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়া ও তার বাবা-মায়ের প্রদত্ত সাক্ষ্য বিবরণী পর্যালোচনায় স্পষ্ট হয় যে, শুরু থেকেই তার উপর পরিবার ও সমাজের ডাক্তার হওয়ার প্রত্যাশার চাপ ছিল। এমনকি এর আগের বছর এই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় পাশই করেননি; পাশ করেনি এ বছরও।
অভিযোগ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া বলেন, সব সাক্ষ্য পর্যালোচনা ও প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তদন্ত কমিটি নিশ্চিত হয় যে, অভিযোগকারীর সব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আরও ভালো ফলাফল করে বাবা-মায়ের কাছে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির মিথ্যা প্রত্যয় ব্যক্ত করেন হুমাইরা। কিন্তু বাস্তবে পরীক্ষায় ৫৭টি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যাবে না নিশ্চিত জেনে তার ব্যর্থতার দায় হল পরিদর্শকের উপর চাপিয়ে দেন। একই সঙ্গে ভর্তির সুযোগ লাভের আশায় এই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক গল্প সাজান।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, বর্তমান সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মহোদয়ের সঠিক দিক নির্দেশনায় বিগত বছরসমূহের ধারাবাহিকতায় সবার আন্তরিকতা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর পরীক্ষা পদ্ধতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াসে ওই পরীক্ষার্থী তৃতীয় কোনও পক্ষের চক্রান্তে প্রভাবিত হয়েছেন কি না, তা উন্মোচনের সুপারিশ করা হয়েছে।
পরিবারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাবা-মায়ের তাদের সন্তানদের এ ধরনের চাপ দেওয়া উচিত না।
উল্লেখ্য, গত ১১ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুরোনো ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২০২৩–২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে চলে যাওয়ার সময় হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা মন্ত্রীর পথ আগলে ধরেন।
তারা অভিযোগ করেন, ৯ ফেব্রুয়ারি ভর্তি পরীক্ষার সময় ওই পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলেন পরীক্ষাকেন্দ্রের একজন পর্যবেক্ষক। পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে তাকে নতুন ওএমআর শিট দেন পর্যবেক্ষক। তবে, তখন পরীক্ষা শেষ হতে আর মাত্র পাঁচ মিনিট বাকি ছিল। অনুরোধ করার পরও পরীক্ষা পর্যবেক্ষক তার জন্য পরীক্ষার সময় বাড়াননি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।