লাইফস্টাইল ডেস্ক : বর্ষাকালে রোগভোগ বাড়ে। চিকিৎসকেরা এই সময়টাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সুস্থ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ এই সময়ই সব চেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে জীবাণুরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর অন্যতম উৎস হচ্ছে ভিটামিন সি। আর এই উপকারি উপাদানটি এই সময়ে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে লটকনে। লটকন স্বল্প সময়ের ফল। বর্ষায় এই ফলটি বাজারে পাওয়া যায়। এখন রাস্তাঘাটে সব জায়গায় মিলছে এই ফলটি। লটকন এমন সব উপাদানে ঠাসা যাতে কোলন ক্যান্সারসহ নানান জটিল ও কঠিন অসুখ সেরে ওঠে। তাই এ সময়ে সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমাণে লটকন খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
দৈনিক মাত্র ২-৩টি লটকন খেলে প্রতিদিনের ভিটামিন সি’র চাহিদা পূরণ হবে। সেই সঙ্গে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। জানলে অবাক হবেন, লটকন খেলে বিভিন্ন রোগ থেকে নিস্তার পাবেন। সেইসঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও রক্তে হিমোগ্লোবিনের পারমাণও বাড়বে।
হলুদ রঙের ছোট্ট গোলাকার ফল লটকন। এটি দেখতেও যেমন সুন্দর; খেতেও অতি সুস্বাদু। টক-মিষ্টি রসালো এই ফলটি ছোট হলেও এর পুষ্টিগুণ আছে হাজারও। লটকনে কোনো ক্ষতিকর উপাদান নেই। ছোট বড় সবাই এই ফলটি খেতে পারেন। আসুন এবার জেনে নেই লটকনের অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি’র জুড়ি নেই। একইভাবে মন-মেজাজ প্রফুল্ল রাখতেও ভিটামিন সি’র ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভিটামিন সি’য়ে ভরপুর লটকন খেলে রোগ-বালাই যেমন দৌড়ে পালাবে, তেমনি শরীরে নতুন রোগও বাসা বাঁধতে দেবে না। তাই সুস্থ্য থাকতে, নিজেকে ফিট রাখতে নিয়মিত খেতে হবে স্বাস্থ্যকর এই ফলটি।
১০০ গ্রাম লটকনে ক্যালরির পরিমাণ ৯২। যেখানে ১০০ গ্রাম কাঁঠালে ক্যালরি পাওয়া যায় ৪৬। অর্থাৎ কাঁঠালের দ্বিগুন ক্যালরি আছে ছোট্ট এই লটকন ফলে। যারা প্রচুর পরিশ্রমের কাজ করেন কিংবা দুর্বলতায় ভোগেন তারা নিয়মিত লটকন খেলে শরীরে শক্তি পাবেন।
ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ সমৃদ্ধ ফল লটকন। লটকনে ভিটামিন বি-১ এর পরিমাণ হল ১০.০৪ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন বি-২ আছে ০.২০ মিলিগ্রাম। বেরিবেরি রোগ সারাতে লটকনের ভূমিকা বেশ কার্যকর। শারীরিক দূর্বলতা, বুক ধড়ফড় করা, হাত-পায়ে ব্যথা, ঠোঁট এবং পায়ের তালু ফাটা, ঠোঁট ও মুখের ঘা এবং বারবার গলা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যায় যারা ভুগছেন লটকন তাদের জন্য আদর্শ পথ্য।
লটকনে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। দৈনিক মাত্র ২-৩ টি লটকন খেলে প্রতিদিনের ভিটামিন সি’র অভাব পূরণ হয়ে যাবে। দাঁত-মাড়ি ও ত্বকের যেকোনো সমস্যার পেছনে ভিটামিন সি’র অভাবকে দায়ী করা হয়। তাই নিয়মিত লটকন খেলে এ ধরনের সব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
লটকনে আরও আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম। যা দেহ গঠন ও কোষকলার সুস্থতায় কাজে লাগে। এসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
লটকনে কিছু পরিমাণে প্রোটিন ও ফ্যাট পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ১.৪২ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৪৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে।
নিয়মিত লটকন খেলে বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন চর্মরোগ থেকেও রক্ষা পাবেন। কারণ লটকন একটি ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল। এতে ভিটামিন সি থাকায় চর্মরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়ামসহ লটকনের নানান সব উপাদান মানবদেহে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় বলে নিশ্চিত করেছেন গবেষকরা। তাই চিকিৎকরা বলেন, বর্ষার এই ফলটি খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে।
বমি বমিভাব দূর করতে পারে লটকনে থাকা পুষ্টিগুণ। পাশাপাশি মানসিক অবসাদ দূর করতেও সাহায্য করে লটকন।
এ ছাড়াও গরমে তৃষ্ণা মিটাতেও সক্ষম লটকন। কারণ এতে জলীয় অংশের পরিমাণ বেশি। এমনকি ডিহাইড্রেশন কাটিয়ে উঠতেও লটকন সাহায্য করে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে লটকন। কারণ এই ফলের মধ্যে অতিরিক্ত চিনি নেই। এর ফলে ডায়াবেটিস রোগীরাও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন এই ফলল খেয়ে।
ফলের পাশাপাশি লটকনের পাতাও ওষুধি কাজ করে। এর পাতা ও শিকড় খেলে পেটের নানারকমের অসুখ ও জ্বর ভালো হয়ে যায়।
লটকনের বীজ গনোরিয়া রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। ডায়ারিয়া দূর করতে লটকনের পাতার গুঁড়া কার্যকরী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।