জুমবাংলা ডেস্ক : ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের নদী শাসন কাজের ভেরিয়েশন বাবদ পূর্ত কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চীনের সাইনোহাইড্রো করপোরেশনকে (এসএইচসিএল) আরও ৮৭৭ কোটি ৫৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। সেতু নির্মাণের এক বছর পরে নির্মাতা সংস্থাকে ভেরিয়েশন বাবদ এই অর্থ পরিশোধ করার একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নদী শাসন কাজ একটি অত্যাবশ্যকীয় অংশ। পদ্মা নদী খরস্রোতা বিধায় সম্ভাব্য ভাঙনের হাত থেকে অ্যাপ্রোচ সড়কসহ পদ্মা সেতু রক্ষার জন্য সেতু নির্মাণের পাশাপাশি মাওয়া প্রান্তে ১.৮৩৫ কিলোমিটার এবং জাজিরা প্রান্তে ১১.০৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নদী শাসনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ম্যাউনসেল এইসিওএম থেকে মূল সেতু, নদী শাসন ও অ্যাপ্রোচ সড়ক কাজের ডিটেইল ডিজাইন করা হয়েছে। এফআইডিআইসি কন্ট্রাক্ট ডকিউমেন্ট অনুযায়ী পদ্মা সেতু সংলগ্ন নদী শাসন কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং ২০১৪ সালে ১৯ জুন তারিখে চূড়ান্ত দরপত্র গ্রহণ করা হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের নদী শাসন কাজের জন্য চীনা ঠিকাদার এসএইচসিএলকে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়। উক্ত প্রস্তাবটি অনুমোদনের পর এসএইচসিএল এর সঙ্গে ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর ৪৮ মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্নের লক্ষ্যে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। যার চুক্তিমূল্য ৮৭০৭ কোটি ৮১ লাখ ৪১ হাজার ৪৪৬ টাকা। উক্ত কাজ তদারকির জন্য কোরিয়ান এক্সপ্রেস করপোরেশন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস নিয়োজিত আছে।
সূত্র জানায়, নদী শাসন কাজের চুক্তির আওতায় মওয়া প্রান্তে ১.৮৩৫ কিলোমিটার এবং জাজিরা প্রান্তে ১১.০৮ কিলোমিটার। এর উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে (-) ২৫ মিটার গভীরতা পর্যন্ত ড্রেজিং, বালি ভর্তি ৮০০ কেজি জিও ব্যাগ দিয়ে লাউঞ্চিং অ্যাপ্রন নির্মাণ, স্লোপ এ লাউঞ্চিং অ্যপ্রোন পর্যন্ত ১২৫ কেজি জিও ব্যাগের উপরে রক রিপর্যাপ এবং সিসি ব্লক ডাম্পিং, বাঁধ নির্মাণ এবং স্লোপ এর উভয় দিকে সিসি ব্লক বসানো, বাঁধের ঢালে ভেটিবার লাগানো ও নদী শাসন কাজের সীমানায় পানি প্রবাহের জন্য ৫টি অফটেক নির্মাণ।
সূত্র জানায়, ক্রয় কমিটির অনুমোদিত এবং ঠিকাদারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় কিছু আইটেমের ব্যয় কাজ চলাকালে বৃদ্ধি পেয়েছে, কিছু আইটেমের কাজের পরিমাণ কমেছে এবং কিছু আইটেমের কাজের পরিমাণ অপরিবর্তিত রয়েছে। এ ধরনের প্রায় ১৩ কাজের পরিমাণ পরিবর্তন হয়েছে।
বেশ কিছু কারণে নদী শাসন কাজের চুক্তি মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সূত্র জানায়। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নদী শাসন সম্পন্ন করতে মূল চুক্তিপত্রের সময়সীমার অতিরিক্ত ৫৫ মাস সময় বেশি লাগে। প্রাকৃতিক কারণে বছরের বেশ কয়েক মাস ড্রেজার চলাচল করতে না পারায় নদী শাসনের কাজ ব্যাহত হয়। এই কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া, কোভিড-১৯ চলাকালে বিদেশ থেকে ঠিকাদারের জনবলসহ পাথর ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি আমদানি সীমিত হয়ে পড়ে। কোভিড-১৯ এর সময় ঠিকাদারের লোকবল কমে যাওয়াটাও অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হয়েছে।
পর্যটক আকৃষ্ট করার সব উপকরণই বাংলাদেশে বিদ্যমান: প্রধানমন্ত্রী
সূত্র জানায়, ৩য় সংশোধিত প্রকল্পটি একনেক গত ১৮ এপ্রিল তারিখে অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল। কাজের পরিমান বেড়ে যাওয়ায় ভেরিয়েশন প্রস্তাব মূল চুক্তিমূল্যের ১০.০৭৮ শতাংশ বেশি অর্থাৎ ঠিকাদার সংস্থাকে অতিরিক্ত ৮৭৭ কোটি ৫৩ লাখ ৫১ হাজার ৫৫৩ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।