জুমবাংলা ডেস্ক : বগুড়ার শেরপুর উপজেলার পাইকারী বাজারে এক টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে বেগুন। এর কিছুক্ষণপর আর বিক্রয় করতে না পেরে বেগুন রেখে চলে গেলেন কৃষক তারিকুল ইসলাম।
শনিবার (১৬ মার্চ) সকালে চান্দাইকোনা হাটে এ ঘটনা ঘটে।
তিনি সুঘাট ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে। এছাড়া তাদের অভিযোগ কৃষিবিভাগ থেকে প্রকৃত কৃষকরা সহযোগিতা তেমন পান না।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারী বাজাররে এক থেকে তিন টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রয় হয়েছে। মির্জাপুর, রেজিষ্ট্রিঅফিস, শেরুয়া বটতলা, বিকেল বাজার, সকাল বাজার ও দশমাইল বাজারে খুচরা ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রয় করা হচ্ছে। কৃষক এক টাকা কেজি বিক্রয় করলেও ভোক্তার ক্রয় করতে হচ্ছে ১০ গুন বেশি দিয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি।
কথা হয় কৃষক তারিকুল ইসলামরে সাথে। তিনি জানান, আমি এই প্রথম পাঁচ মন বেগুন তুলেছি। বেগুনগুলো ৬০ টাকা খরচ করে চান্দাইকোনা পাইকারী বাজারে নিয়ে গিয়েছি। সেখানে এক টাকা কেজি বিক্রয় হচ্ছিল। তখন আমি বিক্রয় করিনি। এর এক ঘণ্টা পর আর বেগুন ক্রয়করার জন্য ক্রেতা নেই। তখন বাজারেই বেগুন রেখে পালিয়েছি। কারণ খাজনা বা জায়গা পরিস্কার করার জন্য বেগুন ফেরত নিয়ে আসতে হবে। আমি কষ্ট করে বেগুন চাষ করে বাজারে নিয়ে বিক্রয় করতে পারছিনা। এর চেয়ে কষ্ট একজন কৃষকের আর কি হতে পারে।
কৃষক আলম জানান, ক্ষেতের বেগুন নিয়ে বাজারে গিয়েছিলাম। প্রতি মণ বিক্রি করেছেন ৪০ টাকা দরে। এতে তার তোলার খরচ ও আড়তের খরচও উঠছে না। দাম না থাকায় কৃষকের ক্ষেতেই বেগুন পঁচে যাবে। আমরা বেগুন চাষ করে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। সরকারি সহযোগিতা করে হলেও কৃষকরা যেন তাদের ন্যায্য দাম পায়। সেদিকে সরকারের নজর দিতে হবে। কথায় আছে কৃষক বাঁচলে বাচবে দেশে।
কৃষক ফুরকান আলী বলেন, বেগুনের ফলন ভালো হয়েছে। একজন শ্রমিক নিলে ৪০০-৫০০ টাকা গুণতে হয়। এই টাকা মজুরি দিয়ে বেগুন ক্ষেত থেকে তুলে বাজারে এনে যে দাম মিলছে, তাতে কোনো খরচই উঠছে না। এতে করে আমাদের মতো চাষিদের করুণ দশা হয়ে পড়েছে। এমন যদি হয় তাহেল কৃষকরা কৃষি আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। পাইকারী আড়তের আড়তদারা জানান, বেগুনের ব্যপাক আমদানি ও রমজানের কারণে বেগুনের তেমন চাহিদা নেই।
শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা আক্তার বলেন, এই উপজেলায় এবার ২২০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। বেগুনের ফলন এবার খুব ভালো হয়েছে। প্রতি বছর রমজানে বেগুনের চাহিদা বেশি থাকে। এবার কেন কমিয়ে দাম এত কম হলো বিষয়টি দেখতে হবে। যদি কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহেল কৃষি বিভাগ থেতে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে সহায়তা করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।