জুমবাংলা ডেস্ক : জামালপুরে দিনে দুপুরে গায়েব হয়ে গেছে কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের একটি পরিত্যক্ত ভবন। কে বা কারা এই ভবন ভেঙে নিয়ে গেছে তা জানে না স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির দায়িত্বরতরা। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খানের নির্দেশে ভাঙা হয়েছে এই ভবন।
জামালপুর-সরিষবাড়ী মহাসড়কের কালিবাড়ী বাজারের আগে কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের অবস্থান। এমন একটি জনবহুল জায়গা থেকে গত শুক্রবার দুপুরে হাওয়া হয়ে গেছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিত্যক্ত একটি ভবন। আর কে এই ভবন ভেঙেছে তা জানে না স্বাস্থ্য বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মচারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরিত্যক্ত ভবনটি এক সময় দাতব্য চিকিৎসালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আর ভবনটিতে ছিল তিনটি কক্ষ।
রোববার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রধান গেটের সামনে পড়ে রয়েছে কিছু ইটসহ ভবনের ভাঙা কিছু অংশ।
কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার রিপন রায় বলেন,‘আমরা বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে চলে যাই। এরপর শনিবার আবারও অফিসে এলে দেখি যে পরিত্যক্ত ভবনটি কে বা কারা ভেঙে নিয়ে গেছে। পরে আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। এ ঘটনায় জামালপুর সদর থানায় একটি সাধারন ডায়েরি (জিডি) করি।’
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে বসবাসকারী খালেদা বেগম বলেন, ‘আমরা হাসপাতালের পাশে থাকি। শুক্রবার চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের লোকজন এসে বেলা ১১ টার দিকে ভবন ভাঙা শুরু করে। রাত একটা পর্যন্ত ভবন ভাঙার কাজ চলে। আমার ছেলে জিজ্ঞেস করতে গেছে। পরে তারা আমার ছেলেকে মারধর করতে আসছিল।’
স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহিন বলেন, ‘চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের নির্দেশে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহকারী সাজু ভবনটি ভাঙার কাজ করে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই ভবনটি এই এলাকার মাদক ব্যবসার একটি কারখানা ছিল। এই ভবনটি ভাঙার জন্য আমি স্বাস্থ্য বিভাগ, উপজেলা প্রশাসনসহ সংসদ সদস্য মহোদয়কে কয়েকবার অবগত করেছিলাম। কে এই ভবন ভেঙেছে তা আমরা জানি না। ভবন ভাঙার পর আমি ভবনের অবশিষ্ট অংশটুকুর নিরাপত্তার জন্য বাজারে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করেছি। ’
জামালপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উত্তম কুমার সরকার বলেন, ‘রোববার দুপুরের দিকে আমি ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আর এই বিষয়ে জামালপুর সদর থানায় জিডি করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর ভবনের যেটুকু অবশিষ্ট রয়েছে, সেটুকুর জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ ২০২২ সালে টেন্ডারের মাধ্যমে এই ভবন ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু একটি পক্ষের মামলায় আইনি জটিলতার কারণে এই ভবন ভাঙা যায়নি। ’
এসব বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবির বলেন, ‘স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবন ভাঙার বিষয়ে একটি জিডি করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।