জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকার লোকোশেডে ইঞ্জিন ঘোরানোর যন্ত্র (টার্ন টেবিল) বহু দিন ধরে নষ্ট থাকায় তা উল্টো লাগিয়ে মালবাহী ট্রেন চালানো হতো। এর ফলে চালকের সিগন্যাল দেখতে সমস্যা হওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে ঢাকার বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলীকে (লোকো) চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে টার্ন টেবিল দ্রুত মেরামতের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
রোববার ঢাকার বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলীকে (লোকো) রেলের চট্টগ্রামের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) সাজিদ হাসান নির্ঝর স্বাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়, ঢাকার লোকোশেডের টার্ন টেবিলটি নষ্ট। তাই লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ঘোরানো সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণে ২৬০০, ২৯০০ এবং ৩০০০ সিরিজের ইঞ্জিনগুলো পেছনের দিক সামনে রেখে ট্রেন চালাতে হয়। অনেক স্থানে নিরাপদ দূরত্ব থেকে সিগন্যাল এবং লেভেল ক্রসিং দেখা যায় না।
চিঠিতে টার্ন টেবিলটি দ্রুত মেরামত করার তাগিদ দেওয়া হয়। বলা হয়, বিশেষ করে ৩০০০ সিরিজের ইঞ্জিনগুলো দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় এই ঝুঁকি আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। ফলে যেকোনো সময়ে সিগন্যাল ওভারশ্যুট বা লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
এই ঘটনার একদিন পর সোমবার (২৩ অক্টোবর) ভৈরব স্টেশনের আউটারে যাত্রীবাহী এগারোসিন্দুর গোধূলি এক্সপ্রেসে উল্টো ইঞ্জিনের মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় ২৩ নিহত হয়েছেন। তবে এ বিষয়ে রেলওয়ে বলছে, প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী মালবাহী ট্রেনের চালকের ভুলে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভৈরব বাজার ফায়ার স্টেশনের ফাইটার মোশাররফ। তিনি জানান, দুর্ঘটনাকবলিত এগারোসিন্ধুর গোধুলীর তিনটি বগি থেকে একে একে মরদেহ বের করা হচ্ছে। বগির নিচে অনেকে চাপা পড়েছেন। তাদের উদ্ধারে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এদিকে এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। ইতোমধ্যে উদ্ধারকাজ শুরু করছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এতে হতাহতের সংখ্যা শতাধিক হতে পারে বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। এক খুদে বার্তায় এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে একটি কনটেইনারবাহী ট্রেন ভৈরব স্টেশনে প্রবেশ করছিল। তার আগ মুহূর্তে ভৈরব থেকে এগারোসিন্দুর ট্রেন ঢাকার দিকে রওনা হয়েছিল। জগন্নাথপুর রেলক্রসিং এলাকায় এগারোসিন্দুর ট্রেনের শেষের দুই-তিনটি বগিতে কনটেইনারবাহী ট্রেন আঘাত করে। মূলত সিগনালিংয়ের কোনো জটিলতার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে।
ভৈরব বাজার ফায়ার স্টেশনের ফাইটার রাসেল বলেন, আমরা বিকেল ৪টার দিকে দুর্ঘটনার খবর পাই। হতাহতদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে কাজ করছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। দুর্ঘটনায় কতজন নিহত হয়েছেন তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন। আরও হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।