হাসান ভুঁইয়া, সাভার (ঢাকা) : সাভারের পৌর এলাকায় সরকারের ভর্তুকি মূল্যে বিক্রয় করা টিসিবির পন্য ক্রয় করতে গিয়ে কাউন্সিলরের পিএস শফিকের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন দুই নারী ক্রেতা। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে সাভার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের পঞ্চবটী আশ্রমে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার নারীরা হলেন- সাভারের ওয়াবদা রোডের স্বামী পরিত্যাক্তা বিউটি আক্তার (৩৫) ও হোসনে আরা বেগম (৫০)। তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে বিউটি আক্তারের হাত ভেঙ্গে গেছে বলে জানা গেছে।
হামলার শিকার বিউটি আক্তার বলেন, আমি স্বামী নাই। সব পন্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমার চলতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। আমি কমদামে পন্য কেনার জন্য আজই প্রথম স্লিপ (টোকেন) পেয়েছি। কোনদিন যাইনি। আজ গিয়ে দেখি মুদি ব্যবসায়ীরা বস্তায় বস্তায় পন্য নিয়ে যাচ্ছে। দুপুর ২ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত চেষ্টা করেও কিছু কিনতে পারিনি। আমাদের কেনার সুযোগই দেওয়া হয়নি। পরে আমরা বলেছি আমাদের স্লিপ (টোকেন) দেওয়া হয়েছে আমরা পন্য চাই। স্লিপ (টোকেন) অনুযায়ী পন্য বিতরণ করলে তো আমরাও পাবো। এসব কথা বললে শফিক নামের এক ব্যক্তি আমাদের ওপর চড়াও হন। পরে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর শুরু করে। এসময় শফিকের স্ত্রী বাঁশ দিয়ে আমার হাতে আঘাত করলে আমার হাত ভেঙে যায়। কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন গরীব জন্য আমাদের ওপর এই অত্যাচার করার সাহস পেয়েছে।
আহত হোসনে আরা বলেন, আমাকে পিছন থেকে কে যেন ধাক্কা দেয়। আমি পড়ে গেলে শফিক ও তার স্ত্রী আমাকে মারধর করে। এসময় শফিক আমার বুকে লাথি মারলে বুকে ব্যাথা পাই। পরে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছি।
এ বিষয়ে সাভার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের পিএস শফিক বলেন, ‘আমার মাল হলো ১৩০০। আমি স্লিপ দিয়েছি ১২০০। অনেক পরিচিত ব্যক্তি থাকে তারা এসে স্লিপ ছাড়াই মাল চায়। তাদের আমাকে মাল দিতে হয়। এই ১২০০ স্লিপের মাল আমি বিতরণ করেছি। কিন্তু আমার মাল শেষ হলেও স্লিপ শেষ হচ্ছিলো না। এর কারনও আমি বুঝি না। যারা পায় নি তাদের বলেছি যে এর পরের বার তাদের দেওয়া হবে। কিন্তু কিছু লোক মাল নিয়েই যাবে নাছোরবান্দা। এসময় তাদের সাথে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে ওই নারী ইট নিয়ে আমাকে ধাওয়া দিলে মাচার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে হাত ভেঙে যায়। আমি কাউকে মারধর করি নি। এটা মিথ্যা অভিযোগ।
এব্যাপারে সাভার পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও সাভার পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক মোল্লা বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না, তবে শুনেছি। এখানে ১০০০ জনের পন্য ছিল। প্রায় তিন থেকে ৪ হাজার লোক পন্য কিনতে এসেছিলেন। পাবলিক ফাংশন তো একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।
টিসিবির ডিলার সিরাত ট্রেডিং এর মালিক মো. সিরাত বলেন, মারামারি হয়েছে এধরনের কিছু আমি শুনি নাই। আমাদের ১০০ মাল বিক্রি করা বাকি আছে। হামলার ব্যাপারে আমি কিছু শুনি নাই।
এ বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, এব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।