অনেকেই দেশের বাইরে পড়তে চাইলেও সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা না থাকার কারণে অনাকাক্সিক্ষত ভুল করে ফেলেন, যা সংশোধন করতে অপচয় হয় মূল্যবান সময় ও অর্থ। তাই বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে চাইলে প্রয়োজন আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া। বিদেশে পড়তে চাইলে লক্ষ্য রাখতে হয় এমন পাঁচ বিষয় নিয়ে লিখেছেন এনাম-উজ-জামান
কাগজপত্র ঠিক করুন
ইশরাত রহমান নাদিয়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা দেয় এমন একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি জানান, শিক্ষার্থীরা হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নেন যে তারা দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে যাবেন।
এর ফলে অনেক সময় পাসপোর্ট থেকে শুরু করে অন্যান্য কাজপত্রে তথ্যবিভ্রাট থাকে, যা ঠিক করতে দীর্ঘসময় লেগে যায়। যারা দেশের বাইরে পড়তে যেতে ইচ্ছুক তাদের উচিত কমপক্ষে এক বছর আগে থেকেই এই কাজগুলো করে রাখা।
যেমন, পাসপোর্ট, বিভিন্ন সনদ, বাবা-মায়ের বিভিন্ন সনদে ব্যবহৃত হয়েছে এমন তথ্যগুলো যেন মিল থাকে সেটি খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষার্থীর পাসপোর্টে বাবা-মায়ের নামের যে বানান রয়েছে সনদেও একই বানান থাকতে হবে।
দেখে নিন শর্ত
দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির বিষয়ে ইশরাত রহমান জানান, শিক্ষার্থীদের প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয়, বিভাগ আর সেশন ঠিক করে নিতে হবে। এগুলো ঠিক করে নেওয়ার পর সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে।
যেহেতু একেক দেশের প্রক্রিয়া একেক রকম, তাই বিশ্ববিদ্যালয় ও বিষয় ঠিক করে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিতে হবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সেশনে আবেদনের শেষ দিন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ প্রভৃতি। প্রথমেই এগুলো না দেখে নিলে পরে ভুগতে হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাথমিক শর্ত মনোযোগের সঙ্গে পড়–ন। আপনার চাহিদার সঙ্গে সেগুলো সামঞ্জস্য কি না, তা লক্ষ্য করুন। স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যে রকম শর্তারোপ করে, স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি পর্যায়ের জন্য শর্ত তা থেকে ভিন্নতর হয়ে থাকে।
তাই কোর্স অনুসারে নিজেকে প্রস্তুত করুন। বিদেশে পড়তে যেতে চাইলে ইংরেজিতে দক্ষতা থাকতে হবে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাচ্ছেন তার খরচ বহন করা আপনার পক্ষে সম্ভব কি না, সেটাও মাথায় রাখুন। আর-এজঊ, ঝঅঞ, এগঅঞ এবং ওঊখঞঝ বা ঞঙঋঊখ-এ ভালো স্কোর না থাকলে বৃত্তি পাওয়া কঠিন।
কাক্সিক্ষত কোর্স বাছাই
পেশাগত উন্নতির পাশাপাশি সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে কোন পেশা আপনার জন্য উপযুক্ত তা খুঁজে বের করুন। কাক্সিক্ষত কোর্সে পড়াশোনা শেষে কোথায় কর্মক্ষেত্র গড়ে তুলবেন এবং সেখানে এর সুবিধা বা সম্ভাবনা এবং অসুবিধা ও প্রতিবন্ধকতার মাত্রা কতটুকু তা যাচাই করুন। পড়াশোনা শেষে পেশাজীবনের শুরু কোথায় হলে ক্যারিয়ারের জন্য ভালো হবে সে ব্যাপারেও চিন্তা করুন।
ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুবিধা
হয়তো দেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কোর্সে কিছুদিন পড়াশোনা করেছেন বা করছেন। এখন ওই কোর্সেই বিদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহী হলে দেশে সম্পন্নকৃত কোর্সটির ক্রেডিট গ্রহণের কোনো নিয়ম ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে কি না, তা খোঁজ নিতে পারেন। ক্রেডিট ট্রান্সফারের পদ্ধতিটি কী তা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেনে নিন। ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রেডিট ট্রান্সফারের পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
খোঁজ নিন স্কলারশিপের
অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই স্কলারশিপ দেওয়া হয়। সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের খোঁজখবর নিন। আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী স্কলারশিপের জন্য আবেদন করুন। সম্পূর্ণ না পেয়ে আংশিক স্কলারশিপ পেলেও আর্থিক ব্যয় অনেকটাই কমবে।
প্রায় প্রতিটি দেশেরই প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে। নির্দিষ্ট দেশের নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট খুঁজে ভিজিট করুন এবং সেখানকার শিক্ষাব্যবস্থা, খরচ, স্কলারশিপ তথ্য, আবাসন ব্যবস্থা, জীবনধারা, আবহাওয়া, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত জেনে সে অনুযায়ী প্রস্তুতি ও সিদ্ধান্ত নিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।