জুমবাংলা ডেস্ক : পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে অসময়ে তরমুজ চাষ করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। সবজির আইলের পাশে কিংবা পতিত জমিতে মালচিং পদ্ধিতিতে তারা তরমুজ চাষ করছেন। এটি গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও এবার মির্জাগঞ্জে এর চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তারা। এমন অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন মির্জাগঞ্জের তিন কৃষক। অসময়ে তাদের চাষকৃত রঙ-বেরঙয়ের তরমুজ ঝুলছে মাঁচাতে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, অসময়ে উপজেলার প্রায় এক হেক্টর জমিতে সাইদুল, সুদীপ ও মনির মৃধা নামে তিন কৃষক মাচান পদ্ধতিতে সাগর কিং, কালাচান, রঙধনু, গোল্ডেন কিং’সহ বিভিন্ন জাতের সুস্বাদু তরমুজের আবাদ করেছেন। উচ্চমূল্যে অসময়ে তরমুজ চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন তারা। সারা বছরই এখন চাষ হবে উচ্চমূল্যের অফসিজন তরমুজ। এসব তরমুজ দেখতে গাঢ় সবুজ। আর কাটলে ভেতরে লাল আবার হলুদ রঙয়ের হয়ে থাকে। খেতেও ভালো ও বেশি দামে বিক্রিও করতে পারবে কৃষকরা। এক সময় বছরে তিন মাস বাজারে তরমুজ পাওয়া গেলেও এখন মিলবে সারাবছরই।
কিসমত ছৈলাবুনিয়া গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক সমির অধিকারী নিজ ক্ষেতে তরমুজ পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। তরমুজের মাচার নিচে সারি সারি রঙ-বেরঙয়ের তরমুজ ঝুলে আছে। বালাইমুক্ত রাখতে তরমুজ বাগানে ফাঁদ বসানো হয়েছে। গত জুন মাসের শুরুতে তরমুজের চারা রোপণ করেন এবং যখন ফুল থেকে তরমুজ ধরতে শুরু করে, ঠিক তখনই বাঁশ দিয়ে তিন ফুট উঁচু মাঁচা তৈরি করা হয়েছে। তরমুজগুলোকে নেটের ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে। পতিত জমিতে বাঁশের মাচার ওপর নেটের ছাউনি দিয়ে চাষ করা হয়েছে বাহারি জাতের তরমুজ। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহযোগিতায় আধুনিক পদ্ধতিতে তরমুজের চাষাবাদ করা হয়েছে। সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতের তরমুজের ফলনও বেশ ভালো।
আরেক কৃষক উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামের সাইদুর রহমান জানান, আমার পতিত ৫০ শতাংশ জমিতে মাচা দিয়ে কৃষি অফিসারের সহায়তায় ও পরামর্শে রঙিন তরমুজের আবাদ করেছি। তরমুজ গাছের বয়স প্রায় তিন মাস। বর্তমানে তরমুজের ওজন দুই থেকে আড়াই কেজি। কিছুদিনের মধ্যে তরমুজ বিক্রি শুরু হবে।
কিসমত ছৈলাবুনিয়া গ্রামের সুদীপ কুমার বলেন, ‘অসময়ে তরমুজ চাষে কৃষিতে আমরা নতুন কিছু করে দেখাতে পেরেছি। পরীক্ষামূলকভাবে তরমুজের এ বাগান তৈরিতে কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা সফল হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আরাফাত হোসেন বলেন, অসময়ে তরমুজ চাষে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে ওই তিনজন কৃষকে সার্বিক সহায়তা ও তাদের বিনামূল্যে সার, বীজ এবং পরমর্শ প্রদান করা হয়েছে। উন্নত জাতের বীজ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করে কৃষকদের অসময়ে তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা এবং কৃষকরা চাষ করে সফলও হয়েছেন। তরমুজ একটি অর্থকরী ফসল। তরমুজ ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ। অর্থনৈতিকভাবে বেকার যুবক ও কৃষককে স্বাবলম্বী করে তুলতে তরমুজ চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ফলন বেশি হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।