জুমবাংলা ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে ঘেরের বাঁধ ভেঙে এক চাষির প্রায় এক লাখ টাকার চিংড়ি মাছ ভেসে গেছে। নিজের ব্যবসার সম্বল হারিয়ে অঝোরে কাঁদছেন রামপাল উপজেলার এক চিংড়ি চাষি।
এদিকে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বাগেরহাটে দমকা থেকে ঝড়ো হওয়া বয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। রাত থেকেই পুরো জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিপর্যয় ঘটেছে মোবাইল নেটওয়ার্কিং সিস্টেমেরও।
জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ভেঙে পড়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি ও ভেসে গেছে মাছের ঘের।
রবিবার (২৬ মে) রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি ও ঝড়ো হওয়া সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বয়ে গেছে। জেলার মোংলা, রামপাল, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলাসহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সম্পূর্ণ বাগেরহাট জেলা।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাগেরহাটের নদ-নদীগুলোয় স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পানগুছি নদীর তীরবর্তী মোড়লগঞ্জ উপজেলা, বলেশ্বর তীরবর্তী শরণখোলা উপজেলা, পশুর নদীর তীরবর্তী মোংলা উপজেলা, রামপাল উপজেলা ও বাগেরহাট সদরের বেশ কিছু গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার লোকালয়ে পানি ঢুকে মানুষের ঘরবাড়ি, চিংড়ি ঘের তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রামপাল উপজেলার এক চিংড়ি চাষি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, রাতে জোয়ারের পানিতে ঘেরের বাঁধ ভেঙে আমার প্রায় এক লাখ টাকার চিংড়ি মাছ ভেসে গেছে। আমি কি করবো বুঝতে পারছি না।
মোড়েলগঞ্জ উপজেলার এক ঘের ব্যবসায়ী বলেন, ‘রাতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নদী ও খালে জোয়ারের পানি ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে মুহূর্তেই আমার ঘের পানিতে তলিয়ে যায়। রাত থেকে আমার ঘেরসহ এখানকার প্রায় ৫০টি মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।’
এ দিকে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের বিষয়ে কথা বলেন তাফালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাজিব।
তিনি বলেন, জোয়ারের পানিতে আমার ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের একটি বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ওই এলাকা ৩ থেকে ৪ ফুট পানিতে প্লাবিত রয়েছে। সেখানকার মানুষ অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে এখনও অনেকে নিজেদের বাড়িঘরে অবস্থান করছেন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এখনও প্রচণ্ড বাতাস ও বৃষ্টি হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাগেরহাটের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, রোববার দুপুরের পর থেকে এ পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বাঁধ উপচে কিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অনেক এলাকার মানুষ। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে দুর্যোগ পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।