চিকিৎসা বিদ্যায় একটা প্রচলিত ধারণা আছে, ভাত মানেই অতিরিক্ত শর্করা ও ক্যালোরি। অর্থাৎ যাঁরা স্বাস্থ্য সচেতন, এবং যাঁরা রোগা হওয়ার চেষ্টা করছেন, ভাত তাদের কাছে বর্জনীয়। কিন্তু এ বার এই ধারণার একেবারে মূলে কুঠারাঘাত করল ‘আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকল নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র। ভাত খেলে ওজন বাড়ে, এমন ধারণাকে শুধু যে এই গবেষণাপত্রে নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে, তা-ই নয়, বরং পাশাপাশি এমন দাবিও করা হয়েছে যে, ভাত খাওয়ার মাধ্যমে বরং ওজন কমিয়ে ফেলা সম্ভব।
তবে হ্যাঁ, সে ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন আনতে হবে। যে সাদা চালের ভাত খেতে আপামর বাঙালি অভ্যস্ত, তাকে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে তার জায়গায় খয়েরি রং-এর ব্রাউন রাইস খাওয়া শুরু করতে হবে। সাদা রং-এর যে চালের ভাত বাঙালি প্রতিদিন খেয়ে থাকে, তাকে বলা হয় রিফাইন্ড রাইস। রাইস মিলে চালকে প্রসেস করে তৈরি হয় সাদা চাল। আর আনপ্রসেসড রাইস হল ব্রাউন রাইস। পশ্চিমী দুনিয়ায় অনেক দিন থেকেই জনপ্রিয় এই চাল এখন ভারতীয় বাজারে যথেষ্ট সুলভ। সিদ্ধ হতে সাদা চালের একটু বেশি সময় নেয় ব্রাউন রাইস। স্বাদেও সাদা ভাতের চেয়ে খয়েরি ভাত অনেকটাই আলাদা। একটু বাদাম-বাদাম গন্ধ থাকে এই চালে। কিন্তু গবেষকদের দাবি, এই চালের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি।
গবেষণাপত্র জানাচ্ছে, ব্রাউন রাইসে শর্করার পরিমাণ সাদা চালের চেয়ে অনেকটাই কম। ফলে যাঁরা সাদা চালের ভাত খান, তাঁরা যদি খয়েরি ভাত খাওয়া শুরু করেন, তা হলে তাঁদের শরীরে ক্যালোরি ইনটেক কমে যায় অনেকটাই। শরীরের মেটাবলিজমও এক ধাক্কায় অনেকখানি বেড়ে যায়। তার ফলে যে পরিবর্তন আসে শরীরে, গবেষকদের দাবি, তা আধ ঘন্টা জগিং করার প্রভাবের সমতুল।
গবেষকরা দাবি করছেন, যাঁরা সাদা চালের ভাতে অভ্যস্ত, তাঁরা যদি আচমকা খয়েরি চালের ভাত খেতে শুরু করেন, তা হলে দ্রুত হ্রাস পায় তাঁদের শরীরের অতিরিক্ত মেদ। খাদ্যাভ্যাসে এই সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে দু’সপ্তাহে অন্তত পাঁচ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলা সম্ভব বলেই মনে করছেন গবেষকরা। কাজেই ভাত-প্রিয় যে সমস্ত বাঙালি স্থূলতার সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা খয়েরি ভাতের মাধ্যমে অতি সহজেই খুঁজে পেতে পারেন রোগা হওয়ার রাস্তা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।