জুমবাংলা ডেস্ক : কাগজ-কলমে গ্রামের নাম উল্লেখ থাকলেও নেই কোনো জনবসতি। এমনকি কোনো ভোটারও নেই এই গ্রামে। শুধু তাই নয়, জনমানবহীন এই গ্রামটি ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও। এমন একটি গ্রামের খোঁজ মিলেছে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায়।
যেদিকেই চোখ যায়, নেই কোনো জনবসতি। চারদিকে শুধু বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। উপজেলার ৬ নং ধাপের হাট ইউনিয়নের পশ্চিম ভবানীপুর গ্রাম নামেই পরিচিত এই জনপদ। আনুমানিক ১২শ একর আয়তনের এই গ্রামটিতে স্বাধীনতার আগ থেকেই মানুষের বসবাস নেই। এই ইউনিয়নের ২২টি গ্রামের মধ্যে পশ্চিম ভবানীপুরও একটি গ্রাম। অথচ নেই কোনো জনবসতি।
স্থানীয়রা বলছেন, স্বাধীনতার আগে পশ্চিম ভবানীপুর গ্রামজুড়েই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের (হিন্দু) বসবাস ছিল। দেশ স্বাধীনের আগেই তারা পাড়ি জমান পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। তখন থেকেই জনমানবহীন হয়ে পড়ে গ্রামটি।
পার্শ্ববর্তী আলীনগর গ্রামের মনসুর আলী বলেন, এই গ্রামে আমার জমি আছে। কিন্তু কোনো বাড়ি নেই। বাপ-দাদার মুখে শুনেছি এই গ্রামে হিন্দু জমিদারদের বসবাস ছিল। স্বাধীনতার অনেক আগেই তারা দেশ ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চলে যায়। তখন থেকেই এই গ্রামটি জনমানবশূন্য হয়ে পড়ে।
নুরুন্নবী মিয়া নামে একজন জানান, আমার জন্ম থেকে এই এলাকায় ভোটার নেই। এই গ্রামটিতে এখন বিভিন্ন ফসলের আবাদ হয়। কিন্তু কেউ এখানে বসবাস করেন না। সবাই পার্শ্ববর্তী আলীনগর গ্রামে বসবাস করেন। শুধু ফসল ফলানো কিংবা কাজকর্মের জন্য দিনের বেলা এই গ্রামে আসে মানুষরা। মানুষজন না থাকায় এই গ্রামে নেই কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ভবানীপুর গ্রাম ঘুরেও চোখে পড়েনি কোনো জনবসতির। সম্প্রতি এই গ্রামে কয়েকটি পরিবার পরিবার বসবাস করা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। তবে বসবাস করা এসব পরিবারের মানুষেরাও পাশের আলিনগর গ্রামের ভোটার। তারা বলছেন, পশ্চিম ভবানীপুর গ্রামে বসবাস করলেও নিজের নাম-পরিচয় আর ভোটার হিসেবে পরিচয় দিতে হয় আলিনগর গ্রামের। এমন অবস্থায় এই গ্রামে জনবসতি না থাকায় নাগরিক সুবিধাও মিলছে না।
সুলতান নামে স্থানীয় এক যুবক জানান, জনমানবহীন পশ্চিম ভবানীপুর গ্রামে গড়ে ওঠেনি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা। তবে এই গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে থাকেন পাশের আলিনগর গ্রামসহ আশপাশের এলাকার মানুষ। গ্রামটি যেহেতু বসবাসের উপযুক্ত তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এদিকে নজর দেওয়া। যে দু-চারজন এই গ্রামের মানুষ রয়েছে তাদেরকে এই গ্রামের ভোটার করা উচিত।
ধাপেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন জানান, এই ইউনিয়ন পরিষদের ২২টা মৌজা, তার মধ্যে পশ্চিম ভবানীপুর গ্রামে কোনো ভোটার নেই। মূলত এই এলাকাটি কৃষিনির্ভর। সম্প্রতি চার-পাঁচজন এখানে বসবাস করা শুরু করেছেন। যারা এখানে বসবাস করেন তারা আবার পাশের আলিনগর গ্রামের ভোটার। আমরা চেষ্টা করছি পশ্চিম ভবানীপুর গ্রামে যারা বসবাস করছেন যেন এই গ্রামের পরিচয় দিতে পারেন সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছি।
৬নং ধাপেরহাট ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মিন্টুর মৃত্যুতে শূন্য হয় চেয়ারম্যান পদটি। আগামী ৯ মার্চ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।