আমাদের শরীরে দুইটি কিডনি প্রতিনিয়ত নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। কিডনি শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে বর্জ্য ও টক্সিন ছেঁকে শরীরকে সুস্থ রাখে। কিন্তু কোনও কারণে এই অঙ্গগুলো যখন ধীরে ধীরে দুর্বল হতে শুরু করে, তখন শরীরে জমতে থাকে ক্ষতিকর উপাদান। এর ফলেই দেখা দেয় দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ ‘ক্রনিক কিডনি ডিজিজ’। এই রোগকে বিশেষজ্ঞরা নীরব ঘাতক বলে থাকেন, কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে বেশিরভাগ সময়ই কোনো লক্ষণ বোঝা যায় না।

ক্রনিক কিডনি ডিজিজের লক্ষণ: ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা জানান কিডনির ফিল্টারিং ক্ষমতা কমে গেলে রক্তের বর্জ্য যথাযথভাবে বের হয় না। পাশাপাশি হরমোন উৎপাদন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তকণিকা তৈরি ও হাড়ের স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ ব্যাহত হয়। এতে শরীরে ধীরে ধীরে নানা জটিলতা দেখা দিতে শুরু করে। রোগ অগ্রসর হলে যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে:
- ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রয়োজন;
- অল্পতেই ক্লান্তি ও দুর্বলতা;
- ক্ষুধামন্দা;
- হাত-পা বা চোখের পাতা ফোলা;
- প্রস্রাব বুদবুদযুক্ত বা ফেনা হওয়া;
- ত্বক শুষ্ক বা চুলকানি;
- মনোযোগের সমস্যা, ঘুমে ব্যাঘাত;
- বমি ভাব, পেশি টান;
- রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া।
প্রধান কারণ: দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের সবচেয়ে বড় দুই কারণ হলো
- ডায়াবেটিস
- উচ্চ রক্তচাপ
এছাড়াও—
- গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস
- পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ (জেনেটিক)
- প্রস্রাবের পথ বাধাগ্রস্ত হওয়া (পাথর, প্রস্টেট বড় হওয়া, টিউমার)
- দীর্ঘদিন ব্যথানাশক ওষুধ সেবন
- বারবার কিডনি ইনফেকশন
এসব সমস্যার ফলে অ্যানিমিয়া, হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া, গাউট, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্নায়ুর ক্ষতি, শরীরে অতিরিক্ত পটাশিয়াম বা ফসফরাস জমা হওয়া এমনকি পানি জমে শ্বাসকষ্টও দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা: ক্রনিক কিডনি ডিজিজ সম্পূর্ণ সারানো না গেলেও সঠিক পরিচর্যায় কিডনির কার্যক্ষমতা দীর্ঘদিন ধরে রাখা সম্ভব।
- নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ;
- ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ;
- কিডনি-বান্ধব খাদ্যাভ্যাস;
- ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন;
- নিয়মিত ব্যায়াম ও ওজন নিয়ন্ত্রণ।
- প্রতিরোধই সবচেয়ে বড় সুরক্ষা
- বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা;
- রক্তচাপ ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ;
- সুষম খাদ্যাভ্যাস;
- ধূমপান-মদ্যপান থেকে দূরে থাকা;
- নিয়মিত ব্যায়াম;
- অকারণে ব্যথানাশক না খাওয়া।
একই ব্যাংকে একাধিক একাউন্ট, এফডিআর ও ডিপিএস করা যাবে? জেনে নিন
ক্রনিক কিডনি ডিজিজ একবার শুরু হলে তা দীর্ঘমেয়াদী হয়। তবে সচেতনতা, সময়মতো পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন কিডনিকে অনেকদিন সুস্থ ও কার্যকর রাখতে সাহায্য করে। তাই নিজের ও পরিবারের কিডনির যত্নে আজই সচেতন হন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



