স্পোর্টস ডেস্ক : অন্যতম ফেভারিট হিসেবে ২০২৩ বিশ্বকাপে খেলতে এলেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি পাকিস্তান। কাগজে-কলমে এখনও তাদের সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি।
তবে যে কঠিন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে তারা, তাতে সেই সম্ভাবনা আদতে নেই। পাকিস্তান দলের যতটা ছন্নছাড়া অবস্থা, তার দায় অনেকটাই অধিনায়ক বাবর আজমের- সমালোচকরা এমনটাই বলছেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোতেও চলছে তার তীব্র সমালোচনা। অথচ কিছুদিন আগেও অনেকে তাকে ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলির সঙ্গে তুলনা করতেন। তাছাড়া বিশ্বকাপের আগে বাবর ছিলেনও ফর্মের তুঙ্গে। কিন্তু মূল আসরে কোহলির ব্যাটে রানের ফোয়ারা ছুটলেও বাবর অনেকটাই নিষ্প্রভ। এ নিয়ে ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনেও প্রশ্নবাণে জর্জরিত হলেন বাবর।
আগামীকাল কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে পাকিস্তান। এই ম্যাচ দিয়েই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে পারে তারা। সেই ম্যাচের সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক বাবরের কাছে জানতে চান, কোহলি নেতৃত্ব ছেড়ে ভারতের জয়ে যেমন অবদান রাখছেন তেমন ভূমিকায় বাবরকে কেন দেখা যায় না? (নেতৃত্ব ছেড়ে) ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত করে ক্রিকেটে আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার জন্য। কারণ অনেক সময় নেতৃত্বের চাপ ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলে।
জবাবটা অবশ্য বড় করেই দিয়েছেন বাবর। যদিও কোথাও কোহলির নাম উল্লেখ করেননি, কিন্তু নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা যে হবে তা তিনি বুঝতে পারছিলেন। বিশেষ করে তার নিজ দেশ পাকিস্তানের সমর্থক এবং ক্রিকেট বিশ্লেষকদের তোপের মুখে পড়ার কথা আগেই ভেবে রেখেছিলেন তিনি। বাবর বলেন, ‘টিভিতে বসে পরামর্শ দেওয়া সহজ। (সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বিশ্লেষকদের উদ্দেশে) যদি কারও পরামর্শ দেওয়ার ইচ্ছে হয় তাহলে আমার নাম্বার তো আছেই। ‘
অধিনায়কত্ব নিয়ে সমালোচনাকে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছেন না বাবর। কোনো প্রকার চাপও অনুভব করছেন না তিনি। তার মতে, এত নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার কারণ পাকিস্তান দল এবং তার নিজের বাজে পারফরম্যান্স। বাবর বলেন, ‘প্রায় তিন বছর ধরে পাকিস্তান ফলের নেতৃত্ব দিচ্ছি এবং কোনোদিন এভাবে ভাবিনি। এটার পেছনে একমাত্র কারণ বিশ্বকাপে আমার যেমন পারফর্ম করার কথ ছিল তা পারিনি। একারণে লোকে বলে আমি চাপে আছি। আমার কোনো চাপ নেই। গত কয়েক বছর ধরে এটা (অধিনায়কত্ব) করছি। আমিই ছিলাম ভালো পারফর্মার এবং দলের অধিনায়কও। একই জিনিস আমি এখানেও (বিশ্বকাপে) চেষ্টা করেছি। আমি ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের সময় নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। ‘
এই জবাবের পরও বাবরের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন শেষ হয়নি। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় বিশ্বকাপে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন আফসোস করেন কি না? জবাবে বাবর বলেন, ‘আমি জানি না কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে বলছেন। আমরা এখানে যে সিদ্ধান্ত নিই, বিশেষ করে খেলোয়াড় নির্বাচন নিয়ে- তা কোচদের সঙ্গে সঙ্গে অধিনায়কেরও। কন্ডিশন এবং পরিস্থিতি মাথায় রেখেই আমরা সিদ্ধান্ত নিই। কখনো সফল হই, কখনো হই না। অধিনায়কত্ব নিয়ে বলবো- এই ম্যাচ পর পাকিস্তানে ফিরে দেখবো কী হয়। তবে এখন আমার মনোযোগ এসবে নেই, পরের ম্যাচে।
অনেক প্রত্যাশা নিয়ে বিশ্বকাপে এলেও এখন পর্যন্ত ৮ ম্যাচে ৪০ গড়ে ২৮২ রান করেছেন বাবর। কিন্তু তার অধিকাংশ ইনিংসের তেমন প্রভাব তেমন একটা পড়েনি। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে বাবর বলেন, ‘আমার লক্ষ্য ছিল ব্যাটিংয়ে ভালো ফিনিশিং। আমার ৫০ বা ১০০ করার লক্ষ্য নেই। আসল কাজ হচ্ছে দলের জয়। শুদু আম্র একার কেন, যে পারফরম্যান্সে দলের উপকার হয় হোক। আমি ধীরে কিংবা দ্রুত খেলি পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে। ‘
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।