বিনোদন ডেস্ক : সাত বছর পর করণ জোহর তাঁর পরিচালনা জীবনের সুবর্ণজয়ন্তীতে ফিরে এসেছেন পুরোনো ছন্দের জায়গায়। গতকাল মুক্তি পেয়েছে তাঁর পরিচালিত ‘রকি অউর রানী কি প্রেম কাহানি’। এই সিনেমার ‘রানী’ অর্থাৎ আলিয়া ভাটকে ছবি মুক্তির আগের দিন পাওয়া গেল মুম্বাইয়ে।
আপনার ‘রকি অউর রানী কি প্রেম কাহানি’ দেখলাম। পর্দায় আপনাকে এত চার্মিং লাগার গোপন রহস্য কী? [হাসি] এর আবার রহস্য কী? মন ভালো থাকলে সবই ভালো থাকে। ‘রকি অউর রানী কি প্রেম কাহানি’ সিনেমার শুরুর সময় থেকে খুব কমফোর্ট জোনে কাজ করেছি। কারণ, ধর্ম প্রোডাকশনস নিজের বাড়ির মতো। এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকেই অভিনেত্রী হিসেবে আমার জন্ম। আর করণ জোহর আমার মেন্টর। সম্প্রতি অন্য ধরনের কিছু সিনেমায় অভিনয়ের পর রোমান্টিক সিনেমায় ফেরার কারণে নিজেকে খুব ফ্রেশ লাগছে।
৯ বছরের অভিনয় জীবনে আপনি বেশ সফল। এই সাফল্যের জন্য কোনো অঙ্ক কি আপনার মনে কাজ করে? কোনো অঙ্ক নেই। ইটস সো সিম্পল। জীবন কখনও অঙ্ক কষে এগোয় না [হাসি]। চলচ্চিত্র হলো কিছু মানুষের সমষ্টিগত কল্পনার ফসল। যারা সিনেমা এনজয় করতে আসেন অর্থাৎ দর্শক, তা গ্রহণ করবেন কি করবেন না, সেটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার। সুতরাং আমরা কয়েকজন মানুষ সমষ্টিগতভাবে যা তৈরি করলাম, তার ফলাফল আমাদের হাতে নেই। আমি একজন পারফরমার হিসেবে ক্রিয়েটিভ কর্মযজ্ঞে অংশ নিচ্ছি মাত্র। আমাকে ক্যামেরার সামনে সাজিয়ে তোলার জন্য রূপসজ্জাকর, অভিনয় কীভাবে হবে– সেটা বোঝানোর জন্য পরিচালক, নৃত্যের জন্য কোরিওগ্রাফার আর ছবির বিষয়বস্তুর জন্য গল্পকার রয়েছেন। এই পুরো পরিকল্পনার মধ্যে একজন পারফরমার হিসেবে আমি আমার এই কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা দিয়ে বর্তমান চরিত্রকে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। এটাই মোদ্দা কথা। যেটাকে আপনি অঙ্ক বলতে চাইছেন। [হাসি]
এই সিনেমায় আপনার চরিত্রটি বাঙালি। একজন বাঙালি মেয়ের চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তুতি কেমন ছিল? আমি মুম্বাইয়ে বড় হয়েছি, কলেজে পড়েছি বা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি। এই সময়ের মধ্যে আমি কিন্তু বেশ কয়েকজন বাঙালির সংস্পর্শে এসেছি এবং তাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে জেনেছি। বলিউডে আমার এবং স্বামী রণবীরের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু কিন্তু বাঙালি; অয়ন মুখোপাধ্যায়। অয়নের সঙ্গে ওঠাবসার কারণে আমি বাঙালির আচার-অনুষ্ঠান, জীবনযাত্রা, জীবনবোধসহ খুঁটিনাটি বিষয়ে জানতে পেরেছি। মুম্বাইয়ে দুর্গাপূজার মঞ্চে এসেছি। এই পূজা ঘিরে বাঙালির উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করেছি। সুতরাং যখন জানলাম, রকি অউর রানীতে একটি বাঙালি মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করতে হবে, তখনই বুঝেছি, এটা নিয়ে খুব একটা না ভাবলেও চলবে। অভিনয় করতে গিয়ে ব্যাপারটা আপনিতেই এসে যাবে। এ ছবির শুটিংয়ে কয়েকজন কিংবদন্তির সঙ্গে কাজের সুযোগ পেলাম, যা এক অমূল্য অভিজ্ঞতা এবং সুখস্মৃতি হয়ে থাকবে।
এই অভিজ্ঞতাটা যদি একটু… আমার প্রথম দিনের শুট ছিল কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্র স্যারের সঙ্গে। জীবনে কখনও ভাবিনি, কোনোদিন ক্যামেরার সামনে ধর্মেন্দ্র স্যারের মতো ব্যক্তিত্বের সঙ্গে অভিনয় করব। এটা কল্পনা ও স্বপ্নের অতীত। কিন্তু বাস্তবে যখন ঘটল এবং আমাকে ক্যামেরার সামনে ধর্মেন্দ্র স্যারের সঙ্গে শট দিতে হলো, সেই ঘটনা আমার কাছে বাস্তব মনে হয়নি। মনে হয়েছে অতিপ্রাকৃত। ধর্মেন্দ্র স্যারের প্রজন্ম আর আমার প্রজন্মের ফারাকটা শুধু কল্পনা করুন। ডায়ালগ বলব কী, আমার জিভ শুকিয়ে আসছিল। ধর্মেন্দ্র স্যারের স্বাভাবিক ব্যবহার সেটে আমাকে ধাতস্থ হতে সাহায্য করেছে। এটা একটা লাইফটাইম এক্সপেরিয়েন্স।
কিছুদিন আগে মা হয়েছেন। নিজের কাজ সামলে মাতৃত্বের দায়িত্ব কতটুকু পালন করতে পারছেন? মা হতে যাওয়ার সময় থেকেই জানতাম, আমি ওয়ার্কিং মাদার হতে চলেছি। তাই শুরু থেকেই চেষ্টা করেছি আমার কাজ এবং ঘরোয়া জীবনের মধ্যে কীভাবে ব্যালান্স রেখে চলা যায়। এখন আমি আমার কন্যা রাহার বড় হওয়ার সঙ্গে মানবজীবনের শিশু থেকে ধীরে ধীরে বড় হওয়ার প্রতিটি ধাপ দারুণ উপভোগ করছি। এই অভিজ্ঞতা প্রথম এবং নতুন। প্রথমে মেয়ে, তার পর স্ত্রী এবং মা হওয়ার এই পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে জীবনের যে অসাধারণ অভিজ্ঞতা এভাবে লুকিয়ে থাকতে পারে, তা আমার জানা ছিল না। রাহা বড় হচ্ছে। সবাইকে চিনতে শিখছে। এমনকি ঘরে থাকা প্রতিটি জিনিসও চিনতে শিখছে। ওর প্রতিদিনের বড় হওয়া, নতুন নতুন আবিষ্কারের সাক্ষী থাকাটাও আমার জীবনের অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে।
২০২৩ আপনার কাছে বেশ উল্লেখযোগ্য বছর মনে হচ্ছে। আগামী মাসেই আসছে আপনার প্রথম হলিউড ছবি ‘হার্ট অব স্টোন’। রিলিজ পাচ্ছে বিশ্বব্যাপী…
এক, আমার বিবাহিত জীবন; দুই, আমার মেয়ের বড় হওয়া; তিন, অনেক দিন পর করণ জোহরের রোমান্টিক স্টোরিতে অভিনয়ের ফ্রেশনেস; চার, প্রথম হলিউড সিনেমা রিলিজ। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, জীবনের সেরা সময়ের ওপর দিয়ে হাঁটছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।