বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : সন্ধ্যাবেলায় কোনো পার্কে বসে আছেন। আশেপাশে মশার দল ভনভন করছে। হঠাৎ খেয়াল করলেন আপনার সঙ্গীদের ছেড়ে সব মশা যেন আপনাকে বেশি পছন্দ করেছে। আপনার পায়ে একটার পর একটা কামড় বসাচ্ছে।
অনেকেরই হয়ত এইরকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। এমনকি দেখা যায়, একই পরিবারের একজনকে অন্যদের তুলনায় বেশি মশা কামড়ায়। বিজ্ঞানীদের মতে, ২০ শতাংশ মানুষ অন্যদের চেয়ে বেশি মশার কামড়ের শিকার হন। কিন্তু এর পেছনে কারণ কী?
কারণ অনেকটাই জিনগত।
মানুষসহ সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীরাই বিপাক ক্রিয়ার উপজাত হিসেবে কার্ব ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ করে। উৎপন্ন এই কার্বন ডাইঅক্সাইডই মশার প্রধান আকর্ষণ। কার্বন ডাইঅক্সাইডের উপস্থিতি টের পেলেই মশা আশেপাশে মানুষ আছে তা বুঝে যায়।
সাধারণত বিপাক ক্রিয়ার হার নিয়ন্ত্রিত হয় জিন দ্বারা।
তাই কার শরীরে কতটা কার্বন ডাইঅক্সাইড তৈরি হবে, সেটাও নির্ভর করে ওই ব্যক্তির জিনের ওপর। উল্লেখ্য, জিন হচ্ছে কোষের ডিএনএ-এর অংশ। আমাদের দৈহিক কার্যাবলী নিয়ন্ত্রিত হয় এই জিন দ্বারা। সুতরাং যাদের বিপাক ক্রিয়ার হার বেশি, তাদের দেহে কার্বন-ডাই-অক্সাইডও তৈরি হয় বেশি পরিমাণে। তাই তাদের মশাও কামড়ায় বেশি বেশি।
যদিও বিপাক প্রক্রিয়া জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম এই প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। যারা মদ্য পান করেন কিংবা শরীরচর্চা করেন, তাদের বিপাক ক্রিয়ার হার বেশি থাকে। তাই তাদের মশা কামড়ানোর সম্ভাবনাও বেশি। গর্ভবতী নারীদেরও মশা বেশি কামড়ায়। কারণ, তারা স্বাভাবিকের তুলনায় গর্ভকালে একজন নারী ২১ শতাংশ বেশি কার্বন ডাইঅক্সাইড নিষ্কাশন করেন। তাছাড়া এ অবস্থায় তাদের শরীরের তাপমাত্রাও বেশি থাকে, এটাও মশা বেশি কামড়ানোর একটা কারণ।
তবে একটা নতুন গবেষণা বলছে, মানুষের শরীরের গন্ধও এজন্য দায়ী। প্রত্যেকের শরীরেরই একটা নিজস্ব গন্ধ আছে। গন্ধের বিভিন্নতার কারণ ভিন্ন ভিন্ন রাসায়নিক। গবেষকরা বলছেন, যাদের ত্বকে বেশি পরিমাণে কার্বক্সিলিক অ্যাসিড তৈরি হয় তাদের শরীরের গন্ধ মশার বেশি প্রিয়। সবার ত্বকেই কম বেশি সেবাম তৈরি হয়। সেবাম একটি তৈলাক্ত উপাদান, যা ত্বককে আবৃত করে রাখে এবং বিভিন্ন অ্যান্টিজেনের হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
সেবাম থেকে তৈরি হয় কার্বক্সিলিক অ্যাসিড। কেবল মানুষের ত্বকেই কার্বক্সিলিক অ্যাসিড তৈরি হয়। অন্য কোন প্রাণীর শরীরে হয় না। যাদের ত্বকে কার্বক্সিলিক অ্যাসিড বেশি তৈরি হয় তাদের মশা কামড়ায় বেশি।
সূত্র: সায়েন্টিফিক অ্যামেরিকান
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।