সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের ঘিওরে এক আওয়ামী লীগ নেতার নিকট চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে মেরে লাশ গুম করে দেয়াসহ তার স্কুল পড়ুয়া নাতনীকে জড়িয়েও হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেন তিনি।

এ ঘটনায় রবিবার (১১ মে) মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই আওয়ামী লীগ নেতা মো. হারান মিয়া। তিনি ঘিওরের বানিয়াজুরি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
অভিযুক্ত ওই ছাত্রদল নেতার নাম মো. সোহেল। তিনি ঘিওরের বানিয়াজুরি ইউনিয়নের করচাবাধা গ্রামের আজিমুদ্দির ছেলে। কোন পদ পদবী না থাকলে দীর্ঘদিন ধরে জেলা ছাত্রদলের এক সিনিয়র নেতার অনুসারী হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন তিনি। একইসাথে ঘিওর উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাত আটটার দিকে ১০ থেকে ১২ জনকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্রদল নেতা সোহেল আওয়ামী লীগ নেতা মো. হারান মিয়ার বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে দুই দিনের মধ্যে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে কিভাবে টাকা উঠাতে হবে তা আমার জানা আছে বলে হুমকি দেয় এবং বলে তোমাকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলবো তারপরও আমি টাকা উঠিয়ে ছাড়বো। সোহেল আরো বলে যে, তোমার নাতনি কানিজ ফাতেমা স্কুলে পড়াশোনা করে, কখন কি হয়ে যাবে বুঝতেও পারবে না।
অভিযোগে আরো বলা হয়, বিগত ৪ বছর আগে আওয়ামী লীগ নেতা হারান মিয়ার ছেলের সাথে সোহেলের কথা কাটাকাটি নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হয়। সেসময় হারান মিয়ার ছেলে আনিসুর রহমানের সাথে সোহেলের হাতাহাতি হয়। পরবর্তীতে কিছু গুন্ডা প্রকৃতির লোকজন নিয়ে আনিসুর রহমানের ওপর হামলা করে এবং তাকে মারধর করে জখম করে। এরপর তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। মামলা করার পর সোহেল প্রতিনিয়ত হারান মিয়াকে ও তার পরিবারকে মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য হুমকি দিতো। এক পর্যায়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। তখন সিদ্ধান্ত হয় ছাত্রদল নেতা সোহেল হারান মিয়ার ছেলে আনিসুর রহমানকে মারধর করা ও চিকিৎসা ব্যয় হিসেবে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করবে। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগ নেতা হারান মিয়ার উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন ছাত্রদল নেতা সোহেল।
আওয়ামী লীগ নেতা মো. হারান মিয়া বলেন, সোহেল আমার কাছে দেড় লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। টাকা না দিলে আমাকে মেরে লাশ গুম করার হুমকি সহ আমার নাতনীকে জড়িয়েও হুমকি দিয়েছে। তার ভয়ে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছি। তাদের ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারি না। আমার নাতনীর পড়াশোনা সংকটের মধ্যে পড়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা মো. সোহেল বলেন, হারান মিয়া একজন আওয়ামী লীগ নেতা। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাবস্থায় তিনি প্রভাব খাটিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিচার করে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল। তখন আমার যে ক্ষতি করেছিল আমি সেই ক্ষতিপূরণ চাইতে গিয়েছিলাম গতকাল। তার নাতনিকে হুমকি দেয়ার যে কথা বলেছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোসা. ইয়াছমিন খাতুন বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।