বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ইউটিউব এখন শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়। বরং আয়ের অন্যতম এক ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটি। ইউটিউবের মাধ্যমে ঘরে বসেই অনলাইনে আয়ের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। অনেকেই ইউটিউবকেই পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন এবং তারা সফল ইউটিউবার হচ্ছেন।
বর্তমানে প্রতিদিন সারাবিশ্বে ৫০০ কোটি মানুষ ইউটিউবে ভিডিও দেখছেন। এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, একজন দর্শকের ইউটিউব দেখার গড় সময়কাল ৪০ মিনিট। দর্শক বিবেচনায় ইউটিউব পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সাইট। বিশ্বের সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর মধ্যেও ইউটিউব দ্বিতীয়।
তবে এখানে কাজের অনেক বাধা রয়েছে। ইউটিউবে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যায় পড়তে হয় তা হচ্ছে কপিরাইট সমস্যা। কপিরাইট মূলত একটা আইনি বিষয়, যা কারও অরিজিনাল কাজের স্বত্বাধিকার রক্ষা করে। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এই আইনকে মেনে চলে ইউটিউব। ফলে সব ইউটিউব ব্যবহারকারীর জন্য এই নিয়মগুলো প্রযোজ্য।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, কপিরাইট হচ্ছে মালিকানা। ইউটিউবের নিয়ম ভঙ্গ করে অন্য কারও ভিডিও বা কনটেন্ট কিংবা অনুপযুক্ত কিছু শেয়ার করলে চ্যানেলে কপিরাইট স্ট্রাইক আসতে পারে। ছোট ভ্লগিং চ্যানেল হোক কিংবা বহুল পরিচিত কোনো গেম স্ট্রিমার- উপযুক্ত কারণ পেলে যে কারও চ্যানেলেই কপিরাইট স্ট্রাইক দেওয়ার ক্ষমতা রাখে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে ইউটিউব চ্যানেল খোলা খুবই সহজ একটি ব্যাপার। কিন্তু তাই বলে অন্যের ভিডিও আপলোড করে এখান থেকে পার পাওয়া সহজ নয়! আবার কপিরাইট স্ট্রাইক কিন্তু স্বয়ংক্রিয় কোনো বিষয়ও নয়। কোনো কনটেন্টের মালিক তার কনটেন্ট অন্য কেউ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করায় ওই চ্যানেলকে কপিরাউট স্ট্রাইক প্রদান করতে পারেন। কনটেন্টের মালিকের কপিরাইট স্ট্রাইকের আবেদন গৃহীত হলে কপিরাইট ম্যাটেরিয়ালযুক্ত ওই ভিডিও টেকডাউন বা সরিয়ে নেবে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ।
অযাচিতভাবে অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করার ফলে প্রযুক্ত শাস্তি ও ওয়ার্নিং হিসেবে দেখা যায় কপিরাইট স্ট্রাইককে। কোনো চ্যানেলে কপিরাইট স্ট্রাইক দেওয়া হলে ওই চ্যানেলের মালিককে ইউটিউবের ‘কপিরাইট স্কুলে’ প্রদত্ত পাঠ গ্রহণ করতে বলা হয়। ফলে ক্রিয়েটররা ইউটিউবে কীভাবে কপিরাইট আইন কাজ করে তা জানতে পারেন। সেই সঙ্গে তাদের ভিডিওতে স্ট্রাইক আসার কারণ সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারেন।
কোনো চ্যানেলে অ্যাক্টিভ কপিরাইট স্ট্রাইক থাকলে ওই ইউটিউব চ্যানেল থেকে এডসেন্স এর মাধ্যমে আয় করার পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ স্ট্রাইক থাকলে চ্যানেল মনিটাইজেশনে সমস্যা হয়। কপিরাইট স্ট্রাইকের কারণে লাইভস্ট্রিম রিমুভ করা হলে সেক্ষেত্রে ৯০ দিন লাইভস্ট্রিম ফিচার ব্যবহার করা যাবে না। ওই কপিরাইট স্ট্রাইক থাকা চ্যানেলে।
কপিরাইট স্ট্রাইক দূর করার তিনটি উপায়
স্ট্রাইক এক্সপায়ার হওয়ার অপেক্ষা করুন : কপিরাইট স্ট্রাইক ৯০ দিন পর এক্সপায়ার বা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। তাই চ্যানেলে কপিরাইট স্ট্রাইক এলে সাবধানে কনটেন্ট আপলোড করলে ৯০ দিন পর স্ট্রাইক চলে যাবে। প্রথমবারের মতো কপিরাইট স্ট্রাইক এলে ইউটিউব কপিরাইট স্কুলের পাঠ সম্পন্ন করা অত্যাবশকীয়।
নেটওয়ার্কিং করে স্ট্রাইক দূর করা : আগেই জেনেছি যে, কপিরাইট স্ট্রাইক ইউটিউব নয়, বরং কনটেন্টের স্বত্বাধিকারী প্রদান করে। কপিরাইট স্ট্রাইক আসলে ওই তথ্য থেকে কপিরাইট স্বত্বাধিকারীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে কপিরাইট স্ট্রাইক তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানাতে পারেন।
কাউন্টার নোটিফিকেশন সাবমিট করা : যদি কোনো অযোগ্য বা ভিত্তিহীন কারণে কপিরাইট স্ট্রাইকের মাধ্যমে চ্যানেলের ভিডিও রিমুভ করা হয়, সেক্ষেত্রে কাউন্টার নোটিফিকেশন সাবমিট করার সুযোগ পাবেন ইউটিউব ক্রিয়েটররা। ওই কাউন্টার নোটিফিকেশন সাবমিশন যদি যুক্তিযুক্ত হয়, তবে কপিরাইট স্ট্রাইক তুলে নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।