বিনোদন ডেস্ক : ঠিক ২৭ বছর আগে অজয় দেবগনের সঙ্গে প্রথম দেখা হয় কাজলের, ২৩ বছর আগে বিয়ে। দুই বছর আগে প্রথমবারের মতো অজয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে লেখেন কাজল। তাঁর পোস্ট অবলম্বনে এই লেখা।
প্রায় পঁচিশ বছর আগে আমাদের প্রথম দেখা। ‘হালচাল’-এর সেটে আমি যখন শট দেওয়ার জন্য তৈরি তখন চিত্কার করে উঠলাম—নায়ক কোথায়? সেটেই একজন এক কোণায় ইশারা করে বলেছিল, ‘ওই তো নায়ক। অজয় দেবগন ও কাজল—প্রথম পরিচয়ের সময় দুজনই ছিলেন অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ।
মাত্র ১০ মিনিট আগেই যার নামে বদনাম করছিলাম, সেটেই তাঁর সঙ্গে কথা শুরু করলাম এবং খুব শীঘ্রই খুব ভালো বন্ধুতে পরিণত হলাম। মজার ব্যাপার, সে সময় আমরা দুজনই অন্য সম্পর্কে ছিলাম। একে অপরের কাছে এই সম্পর্ক নিয়ে হতাশার কথা বলতাম। অজয় দেবগন ও কাজল—প্রেমের দিনগুলোতে বেশিরভাগ সময় তাঁরা গাড়িতেই কাটাতেন।
খুব শীঘ্রই আমাদের সেই সম্পর্কগুলোর সমাপ্তি টানলাম। যদিও মুখে কখনই একজন আরেকজনকে ভালবাসার কথাটা বলিনি একবারের জন্যও। তারপরেও হাত ধরা থেকে শুরু হয়ে সম্পর্কটা খুব গভীরে পৌঁছে গেল সময়ের সঙ্গে।
চুটিয়ে প্রেম করতাম। নৈশভোজে আর লং ড্রাইভে আমাদের প্রেমের গল্পগুলো লেখা হচ্ছিল। ও থাকত জুহুতে আর আমি দক্ষিণ বোম্বেতে। দূরত্বের কারণে আমাদের প্রেমের একটা বড় অংশ তাই গাড়িতেই কাটত। আমার বন্ধু-বান্ধব বারবার ওর সম্পর্কে সাবধান করেছিল। ওর সম্পর্কে চারিদিকে বেশ বদনাম ছিল। তবে আমার সঙ্গে অজয় একদম আলাদা একজন মানুষ ছিল।
চার বছর প্রেমের পর আমরা গাঁটছড়া বাঁধার চিন্তা করলাম। ওর পরিবার রাজি হলেও, আমার বাবা তো রেগে আগুন! আমার সঙ্গে চারদিন কথাই বলেননি। তিনি চেয়েছিলেন, আমি ক্যারিয়ারে মনোনিবেশ করি। পরে যদিও বাবা মেনে নিয়েছিলেন। আমরা কিন্তু কেউ কাউকে বিয়ের প্রস্তাব দেইনি। একটা পর্যায়ে বুঝে গিয়েছিলাম, পুরো জীবনটা একসঙ্গে কাটাতে চাই।
আমাদের বিয়েটা ঘরেই হয়েছিল। যদিও সাংবাদিকদের ভুল ঠিকানা দিয়েছিলাম। চেয়েছিলাম, দিনটা শুধু আমাদের হোক। বিয়েটা একই সঙ্গে মারাঠা এবং পাঞ্জাবী রীতির মিশেলে হয়েছিল। আনুষ্ঠানিকতার এক পর্যায়ে অজয় বারবার পুরোহিতকে তাড়া দিচ্ছিল শেষ করার জন্যে। ও এতটাই অধৈর্য হয়ে গিয়েছিলো যে পুরোহিতকে ঘুষ দিয়েছিল তাড়াতাড়ি করার জন্য! আমার ইচ্ছাতেই একটা লম্বা হানিমুনের জন্যে বেড়িয়ে পরেছিলাম। সিডনি, হাওয়াই আর লস অ্যাঞ্জেলেসে পাঁচ সপ্তাহ কাটানোর পর আমি একদমই ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম।
অজয়কে বললাম পরেরদিনের ফ্লাইটেই দেশে ফেরত যেতে। যদিও আমাদের এরপর মিশরে যাওয়ার কথা ছিল। এক সময়ে আমরা আমাদের পরিবারকে বড় করার সিদ্ধান্ত নিলাম। ‘কাভি খুশি কাভি গম’-এর চিত্রায়নের সময়ে আমি গর্ভবতী হয়ে পড়লাম। যদিও সেবার গর্ভপাত হয়েছিল। ছবি হিট হলেও তাই আমি হতাশ ছিলাম। পুরোটা সময় অজয় আমার পাশেই ছিল।
পরবর্তীতে আরো একবার গর্ভপাত হলেও এখন নিসা এবং যুগকে আমাদের পরিবার পরিপূর্ণ। প্রতিদিনই নতুন কিছু করছি আমরা। নিজেদের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান করেছি, অজয় এরমধ্যে নিজের একশতম ছবি করেছে। ওর সঙ্গে জীবনটা খুবই পরিপূর্ণ।
নিজেদের মধ্যে আমাদের কোন পর্দা নেই। আমার মাথায় যখন কিছু আসে, আমি কোন রকম রাখঢাক না রেখেই বলে ফেলতে পারি। যেমন এখন মনে হচ্ছে, ওর আমাকে মিশর নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।