আজকাল প্রায় সবারই লম্বা সময় ধরে কাজ করেন ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটারে। আর দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ঘুম ছাড়া বাকি সময়টুকু আজকাল সামাজিক মাধ্যমেই কাটছে সবার। এছাড়া ক্লাসে, অফিসে বা বাড়িতে এসির বাতাস সরাসরি মুখে লাগছে।
অথবা সাইকেল, মোটরসাইকেল চালিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া হচ্ছে দ্রুতগতিতে। এ রকম প্রতিটি ক্ষেত্রেই খেয়াল করলে দেখা যাবে, কিছুক্ষণ সামান্য অস্বস্তি শুরু হবে চোখে, হালকা জ্বালাপোড়া বা চোখে করকর করবে। এই সমস্যাগুলোকে এককথায় বলা যায় ড্রাই আইজ বা চোখের শুষ্কতা।
এর প্রথম এবং প্রধান কারণ হলো আমাদের চোখের যে স্বাভাবিক আর্দ্রতার মাত্রা আছে তার হেরফের হওয়া। এই পরিবর্তনে চোখ জ্বালাপোড়া থেকে শুরু করে চোখের ওপরের পর্দার ক্ষতি—এ রকম নানারকম সমস্যা হতে পারে। আর লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে দুই চোখেই।
লক্ষণ
● চোখ জ্বলা, চুলকানো
● চোখের ভেতর বা চারপাশে ময়লা জমা
● আলোতে সংবেদনশীলতা
● চোখ লাল হয়ে যাওয়া
● সব সময় মনে হওয়া যে চোখে কোনো ময়লা পড়েছে
● কনট্যাক্ট লেন্স পরতে অসুবিধা হওয়া
এই ড্রাই আইজের কারণগুলোর অনুঘটক হয় বয়সের কারণে অশ্রুগ্রন্থির কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, এলার্জি, থাইরয়েডের সমস্যা ইত্যাদি। এ ছাড়া ভিটামিন ‘এ’র ঘাটতি, বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগের ওষুধ যেমন হরমোন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও জন্মবিরতিকরণ ওষুধের লম্বা সময় ধরে ব্যবহার, নার্ভের সমস্যা, কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার ইত্যাদিসহ আছে আরও অনেক কারণ।
বর্তমানে এই সমস্যার সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে ধরা হয় অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারের ব্যবহার আর এয়ারকন্ডিশনে লম্বা সময় ধরে থাকা৷ চোখের শুষ্কতাকে হেলাফেলা করা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়, এর কারণে চোখে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা, যেমন ইনফেকশন, চোখে আলসার, এমনকি দৃষ্টিহীনতার ঝুঁকিও থাকে।
ড্রাই আইজ এড়াতে চিকিৎসকের পরামর্শ
● সবচেয়ে কার্যকর ও সহজ হচ্ছে ২০-২০-২০ পদ্ধতি। অর্থাৎ কাজের ফাঁকে, প্রতি ২০ মিনিটে একটু ব্রেক নিয়ে ২০ মিটার দূরে কোন কিছুর দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে অন্তত ২০ সেকেন্ডের জন্য!
● একটানা দীর্ঘ সময় ধরে স্ক্রিনে কাজ করা যাবে না৷ কাজের ফাঁকে নিয়ম করে চোখের বিশ্রাম নিতে হবে। সবুজের দিকে তাকালে ভালো। মিনিট পাঁচেকের জন্য চোখ বন্ধ করে রাখতে হবে মাঝেমধ্যে।
● চোখে সরাসরি তীব্র বাতাস এড়াতে হবে, হোক সেটা এয়ারকন্ডিশন, হেয়ার ড্রায়ার, বা ফ্যানের বাতাস।
● সাইকেল বা মোটরসাইকেলে পথ চলার সময় সানগ্লাস বা ভালো হেলমেট ব্যবহার করতে হবে।
● শীতের সময় ঘরে বা অফিসে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যায় যাতে বাতাস আর্দ্র থাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।