জুমবাংলা ডেস্ক : হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস পরও আলোচিত জয়নাল খুনের আসামিরা কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না, গত ৫ জানুয়ারি জেলার মাসিক অপরাধ পর্যোলোচনা সভায় পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের কাছে কালের কণ্ঠের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করার পর মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে জয়নাল হত্যার ‘প্রধান আসামি’ আলী আকবর (৪৫)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাতে বহুল আলোচিত মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা, নবীনগর থানার এস আই মিশন বিশ্বাস এক বিশেষ অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রামের হালিশহর থেকে আলী আকবরকে গ্রেপ্তার করেন।
নবীনগর থানার ওসি আমিনুর রশীদ গ্রেপ্তারের সত্যতা রাতে নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে প্রেস ব্রিফিং করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
স্থানীয়রা জানান, গত বছরের ২২ জুন নবীনগরের লাউর ফতেপুর ইউনিয়নের লাউর গ্রামে দরিদ্র জয়নাল মিয়াকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশী আলী আকবর ও তার লোকজন প্রকাশ্য দিবালোকে অগণিত মানুষের সামনেই নৃশংসভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ জুন জয়নাল ঢাকায় মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রুখসানা বেগম বাদী হয়ে প্রথমে ছয়জন পরে বিশজনকে আসামী করে মামলা করলেও পুলিশ গত ছয় মাসেও মামলার এজাহারভুক্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
অভিযোগ আছে, খুনিরা একটি প্রভাবশালীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকায় নিহত জয়নালের চিহ্নিত খুনিরা এতদিন ধরা পড়েনি।
এলাকাবাসী জানান, হত্যাকাণ্ডের পর এক পর্যায়ে একটি প্রভাবশালী মহল মোটা অংকের টাকায় মামলাটি ‘আপস রফা’ করতে নিহতের শাশুড়িকে দেওয়া একটি ফোনালাপের অডিও নিয়েও এলাকার সর্বত্র তোলপাড় হয়।
আসামিদের পক্ষে জনৈক মান্নান নামের এক ব্যক্তি নিহত জয়নালের শাশুড়ি তাসলিমা বেগমকে ফোন দেন। দীর্ঘ ৯ মিনিটের ওই ফোনালাপে এক পর্যায়ে এলাকার দুই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার মাধ্যমে মামলাটি আপস মিমাংসা করার কথাও শোনা যায়। ফোনালাপের অডিওটি ওই সময় ‘টক অব দ্য নবীনগর’ এ পরিণত হয়। সেসময় পুলিশ ফোনালাপের প্রধান হোতা মান্নানকেও আটক করতে সক্ষম হননি। এরপর দীর্ঘ ছয় মাস ধরে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে কালের কণ্ঠে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বুধবার রাতে মুঠোফোনে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পর থেকে খুনিদের ধরতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে গেছে। আশা করছি মামলার অন্য আসামিরাও দ্রুত গ্রেপ্তার হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ‘থানাকান্দির আলোচিত পা কাটা মোবারক হত্যার খুনিকে ধরতে পুলিশ বহু জায়গায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আমি নিজে বিভিন্ন জেলার এসপিদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।