বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : করিতে পারি না কাজ/ সদা ভয় সদা লাজ,/সংশয়ে সংকল্প সদা টলে/পাছে লোকে কিছু বলে।’ কামিনী রায়ের কবিতার মত যশোরের ঝিকর গাছার মো. লিমনকে হোসেনকে শুনতে হয়েছে। পাড়া প্রতিবেশীর নানা কটু কথা এমনকি সব সময় ল্যাপটপে নিয়ে পড়ে থাকত বলে বাবা-মা ও গালাগাল করত। সে কথায় কান না দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখেন তিনি। আর এখন মাসে লাখ টাকা আয় করে তাদের যোগ্য জবাব দিচ্ছেন এই তরুণ।
যশোর মুসলিম এইডস ইনিস্টিউটের কম্পিউটার সাইন্সে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অধ্যায়নরত এই তরুণের ছোট বেলায় থেকেই প্রযুক্তির প্রতি দারুণ আগ্রহ ছিল। আর তাই বাবা মালয়শিয়া প্রবাসী মো. সাইফুল ইসলাম ছেলের আবদার মেটাতে একটা ল্যাপটপ পাঠান। পড়াশোনার পাশাপাশি ল্যাপটপে বেশি সময় পার করত। এজন্য পাড়ার বন্ধুরা ও আত্নীয় স্বজনেরা ঘর কোণে এমকি মানসিক রোগীও বলেছে।
মন খারাপ হলেও মানুষের কথা কানে না তুলে বরং ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসে শিখে ফেলেন ফ্রিল্যান্সিং ।
প্রথমে গ্রাফিক্সের কাজ শেখে অনলাইনে কাজ শুরু করেন। তার সাথে ইউটিউব মার্কেটিংয়ের কাজও চালিয়ে যান।
কিন্তু সেখানে নিজেকে কিছুতেই খাপ খাওয়াতে পারছিল না। তখন কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েন তবুও দমে যান’নি।
এরপর ইউটিউবে ওয়েব ডেভলপমেন্ট ও অ্যাপস ডেভেলপমেন্টের কাজ শিখে এখন মাস শেষে আয় করছেন লাখ টাকা।
তরুণ এই ফ্রিল্যান্সার মো. লিমন হোসেন বলেন,’ মানুষের বাজে কথা শুনে আমার মন খারাপ হতে। আবার ভালো কিছু করার জেদটা তখন বেশি কাজ করত। তাই কখনো কারো কটু কথা কানে তুলি’নি। ধীরে ধীরে এগিয়ে গেছি নিজের মত করে। কোন প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছাড়া শুধু ইউটিউব দেখে দেখে গ্রাফিক্সের কাজ শিখে ফেলি। এছাড়া ইউটিউবে মার্কেটিং করতাম। কিন্তু হঠাৎ ইউটিউব নতুন নীতিমালা আসে যার কারণে আর মার্কেটিং করে তেমন কিছু হচ্ছেছিল না। এদিকে গ্রাফিক্সের কাজ করেও তেমন আয় হচ্ছে না তখন হতাশ হয়ে পড়ি। কিন্তু কখনো থেমে থাকতে শিখি নাই আবারও ইউটিউবকে কাজে লাগিয়ে ওয়েব ডেভলপমেন্ট ও অ্যাপস ডেভেলপমেন্টের কাজ শিখে নেই ৷
এই ফ্রিল্যান্সার আরও বলেন,’ এরপর আর আমাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়’নি। পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে। গত চার বছর ধরে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ করছি। এখন মাসে লাখ টাকার বেশি আয় হয়। পাঁচজন অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট ও তিন জনকে বিনামূল্যে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ শিখিয়ে,তাদের কাজের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি। আমি নিজে Softnextit নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি যার মাধ্যমে তরুণদের ফ্রিল্যান্সিং শেখাই। এ বছর প্রায় ৫০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এখন ওদের মাসিক ইনকাম আসে ৫০ হাজার।”
দেশের আধুনিকায়নে ভূমিকা রাখে এমন অ্যাপস তৈরি করতে চান তরুণ এই ফ্রিল্যান্সার। স্বপ্ন দেখেন বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।