জুমবাংলা ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা ভোট শুরুর চেষ্টা করলেও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের প্রতিবাদের মুখে ভোট গ্রহণ স্থগিত রয়েছে।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত ভোট শুরু না করার দাবিতে বিক্ষোভ করছেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।
আজ সকাল ১০টা থেকে এই ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হওয়ায় ভোট গ্রহণ স্থগিত হয়েছে।
সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে ভোটকেন্দ্রের বুথের সামনে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা অবস্থান নিয়ে মিছিল করেন। পুলিশ মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে চাইলে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়।
এ সময় পুলিশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির গেটের প্রধান ফটকের কলাপসিবল গেট আটকে দেয়। অন্যদিকে বাইরে থেকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা গেট খোলার দাবিতে গেটে ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে।
একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের হট্টগোল হয়। তারা বার ভবনের নিচ তলা ও বারান্দায় স্লোগান দিচ্ছেন। এ অবস্থায় সেখানে টানটান উত্তেজনা চলছে সেখানে।
গতকাল রাতে প্রায় তিন হাজার ব্যালট পেপার ছিঁড়ে ফেলা হয়। এ ছাড়া নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান পদত্যাগ করার পর সমিতির বিএনপি ও আওয়ামী সমর্থক নেতারা পৃথক দুজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেন।
এ অবস্থায় আজ বুধবার এই ভোট কীভাবে হবে, কার পরিচালনায় ভোট হবে—এমন অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মিলছিল না। যদিও আওয়ামী সমর্থক আইনজীবী নেতারা জানিয়েছিলেন, ভোট বুধবার সকাল ১০টা থেকেই অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া বিএনপি সমর্থক আইনজীবী নেতারা জানিয়েছিলেন, বুধবার ৯টার মধ্যে আশা করি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। প্রধান বিচারপতি সুষ্ঠু সমাধান করে দেবেন।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৩-২৪ সেশনের কার্যকরী কমিটির নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হয়। আজ ১৫ ও আগামীকাল ১৬ মার্চ দুই দিনব্যাপী এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কার্যকরী কমিটির সভাপতি পদে একটি, সহসভাপতি পদে দুটি, সম্পাদক পদে একটি, কোষাধ্যক্ষ পদে একটি, সহসম্পাদক পদে দুটি এবং কার্যকরী কমিটির সদস্যপদে সাতটি পদসহ সর্বমোট ১৪টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন নিয়ে শুরুতেই বিভেদ দেখা দেয়। পরে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন পরিচালনার জন্য জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করেন।
তবে একাধিক সূত্র জানায়, নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ভোট গণনার মেশিন ব্যবহার করতে চাইলে বর্তমান সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল তাতে বাধা দেন। তিনি ব্যালট পেপারে ভোটের পক্ষে মত দেন। এ নিয়ে বিরোধের জেরে মনসুরুল হক পদত্যাগ করেন।
সমিতির বর্তমান সভাপতি ও আওয়ামী সমর্থক সাদা প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন ফকির কালবেলাকে বলেছিলেন, ‘বিএনপি সমর্থকরা ব্যালট পেপার ছিনতাই করেছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে। তারপরও বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান পদত্যাগের পর আমি সভাপতি ও সম্পাদক মিলে একটি নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করেছি। আইন আনুযায়ী এই কমিটি করেছি।’
অন্যদিকে বিএনপি ফোরামের আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল বলেছিলেন, ‘আওয়ামী সমর্থকরা নিজেরা নিজেরা সিনক্রিয়েট করে প্রায় তিন হাজার ব্যালট ছিঁড়ে ফেলেছেন। ধারণা করছি, তারা তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকে এটি করেছেন। আমরা সকাল ৯টা পর্যন্ত দেখব, আমাদের অভিভাবক প্রধান বিচারপতি কী সিদ্ধান্ত নেন। এরই মধ্যে আমরা একটি নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করেছি। আশা করছি, সকাল ৯টার মধ্যে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। এরপর ১০টা থেকে ভোট হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।