জুমবাংলা ডেস্ক : লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় আহমদিয়া কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ইসরাত জাহান নাফিজা’র আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ ও প্রেমিকের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে শিক্ষার্থীর সহপাটিসহ স্বজনরা অভিযুক্ত প্রেমিককে গ্রেফতার ও এঘটনার বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করে। রামগতি বাজার এলাকায় এ আয়োজন করা হয়। এসময় স্থানীয় কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ স্বজনরা মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা শিক্ষার্থীর মৃ’ত্যুর ঘটনার অভিযুক্তকে গ্রেফতারসহ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, ন্যায় বিচার, পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধনে দাবী তুলেন।
এর আগে গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় অপমান সইতে না পেরে নাফিজা বিষপান করে আত্মহ’ত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে ১০ আগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে ১১ আগস্ট উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নেয়ার পথে সে মারা যান। সে চরআফজল গ্রামের হেলালের মেয়ে।
মানববন্ধনে নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, রামগতি উপজেলার বড়খেরি এলাকায় ইয়াছিনের ছেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ লাইন্সে কর্মরত পুলিশ সদস্য ইউসুফ মাহমুদের সঙ্গে নাফিজার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সুযোগে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে নাফিজার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে সে। এ সময় প্রেমিকার আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি ধারণ করেন সে। এরপর থেকে ভিডিও ও ছবিগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়।
তবে এ ঘটনায় বক্তব্য জানতে রামগতি উপজেলার ইউসুফ মাহমুদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্দ পাওয়া যায়।
এক পর্যায়ে নাফিজা বিষয়টি তার পরিবারের লোকজনকে জানালে ইউসুফ ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। সেই সঙ্গে নাফিজার বোনের ইমোতে ওই ছবি ও ভিডিও পাঠানো হয়। এটি দেখে গত ১ আগস্ট ওই ছাত্রী ইউসুফের বাড়িতে গেলে তাকে অপমান করে বের করে দেয়া হয়। বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় নাফিজা বিষপান করে আত্মহ’ত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে ১০ আগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নেয়ার পথে (১১ আগস্ট) সে মারা যায়।
নিহতের চাচা মো. রাশেদ জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেওয়া হয়নি। পরে নাফিজার বাবা হেলাল বাদী হয়ে ২৯ আগস্ট ইউসুফ মাহমুদ, তার মা রহিমা বেগম ও বোন ঝর্ণা বেগমের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন। বর্তমানে ওই মামলাটি বিজ্ঞ বিচারক আমলে নিয়ে নোয়াখালী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামি এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।
মানববন্ধনে ওই শিক্ষার্থীর মৃ’ত্যুর ঘটনার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারসহ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, ন্যায় বিচার, পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী জানানো হয়। মানববন্ধনে স্থানীয় বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও নিহত শিক্ষার্থীর স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
রামগতি থানার ওসি এ টি এম আরিচুল হক জানান, মামলা নেইনি ঘটনা সঠিক নয়। আত্মহ’ত্যার ঘটনায় ইউডি মামলা হয়। তাই হয়েছে। এর আগে পরে কি হয়েছে তা ময়না তদন্তের পর প্রতিবেদন অনুযাই পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহন করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।