জুমবাংলা ডেস্ক : বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হ’ত্যাকাণ্ডের পর থেকেই চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন আবরারের বাবা-মা ও একমাত্র ভাইসহ স্বজনরা। অজানা আতঙ্ক গ্রাস করে ফেলছে গোটা পরিবারটিকে।
ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর আবরারের মা রোকেয়া বেগম সাংবাদিকদের জানান, আবরার নিহত হওয়ার পর থেকেই আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি। এক ছেলেকে হারিয়েছি আর কোনো ছেলেকে হারাতে চাই না। আমি আমার ছোট ছেলের নিরাপত্তা চাই।
এদিকে আবরার নিহত হওয়ার পর থেকে এই পরিবারে সবচেয়ে বেশি আ’তঙ্কের মধ্যে রয়েছে আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। ভয়ে ও আ’তঙ্কে তিনি গণমাধ্যমের সাথে আর কোনো কথা বলতে চাচ্ছেন না। ফাহাদের মত সাহসী ও উদ্যোমী ফাইয়াজ একেবারেই কথা কমিয়ে দিয়েছে। আ’তঙ্ক ও ভয় তার পিছু ছাড়ছে না।
আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ জানান, ছোট ছেলে ঢাকা কলেজে একাদশ শ্রেণিতে (বিজ্ঞান বিভাগ) পড়ে। এখন সে ঢাকায় পড়তে যেতে ভয় পাচ্ছে। সে ঢাকায় পড়তে যেতে চাচ্ছে না। ফাইয়াজ জানান-আমার স্বপ্ন ছিল আমার ভাইয়া, আজ ভাইয়া নেই আমার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। আমি কার অনুপ্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যাবো, কে আমাকে সহযোগিতা করবে? আমি ভাইয়াকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম ভাইয়া লেখাপড়া শেষে অনেক বড় হবে।
ভাইয়ার স্বপ্ন যেমন গুড়িয়ে গেল, ঠিক আমার স্বপ্ন আর কোন অবশিষ্ট থাকলো না। কলেজের উদ্দেশ্যে ঢাকায় কবে রওনা দেবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইয়াজের মুখ থেকে কোন কথা বের হয়নি।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বুয়েট ক্যাম্পাসে স্থায়ীভাবে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ও আবরার হ’ত্যার সঙ্গে জড়িত ১৯ আসামিকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বুয়েট ক্যাম্পাসে ভিসির সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আবরার ফাহাদের বাবা বরকতুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, এই বহিষ্কার যেন স্থায়ী বহিষ্কার হয়। স্থায়ী বহিস্কার হলে আমার পরিবার খুশি।
তিনি বলেন, আবরার হ’ত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিয়ে দ্রুত শেষ করে খু’নিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমার গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় মধ্যে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী নি’র্মমভাবে পি’টিয়ে হ’ত্যা করে। রাত তিনটার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার ম’রদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। ওই হ’ত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরদিন সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হ’ত্যা মামলা করেন নি’হত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।