সাধারণত গাছের পাতা দেখতে সবুজ হয়; ফুলের বিভিন্ন রং আছে—লাল, হলুদ; আকাশ দেখতে নীল ইত্যাদি। একটি বস্তুর রং কীভাবে নির্ধারিত হয়? এটা খুব সহজ, বস্তুর ওপর সাদা আলো ফেললে বস্তুটি সাদা রং থেকে কিছু রং শুষে নেয়। বাকিটা প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে। যে রংগুলো প্রতিফলিত হয়, সেগুলোই বস্তুর রং নির্ধারণ করে; বস্তুটি আলোর যে অংশ গ্রহণ করছে না, সেটুকুই বস্তুটিকে রাঙিয়ে দিচ্ছে।
যে ফুল থেকে আলোর লাল রংটা বেশি প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে, সে ফুলটার রং লাল দেখা যায়। কিন্তু বাতির ক্ষেত্রে অন্য হিসাব, টিউবলাইট থেকে সব রঙের আলো বের হয় বলে টিউবলাইটের আলো দেখতে সাদা হয়। সোডিয়াম লাইটের আলো হলুদ হয়, কারণ এখান থেকে শুধু হলুদ আলো বের হয়ে আসে।
আলো ছাড়া কি আমরা দেখতে পাই না? আমাদের চোখ আলো ছাড়া দেখতে পায় না। কিন্তু অন্ধকার ঘরে একটা শব্দ হলে কি বুঝতে পারি না, ওখানে একটা কিছু হচ্ছে! আমরা অবশ্যই বুঝতে পারি। এবং অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে আমরা হয়তো বলেও দিতে পারি কী হচ্ছে, যেমন কাচের গ্লাস বা বাটি মেঝেতে পড়ার শব্দ আমরা জানি। সে ক্ষেত্রে বলতে পারি, শব্দ দিয়েও আমরা দেখতে পাই।
আচ্ছা, এবার ধরি শব্দও হলো না, কিন্তু হাত দিয়েও তো অনুভব করে বলতে পারি, কী ধরেছি। হয়তো রংটা বলতে পারছি না, কিন্তু জিনিসটা কী, তা তো বুঝতে পারছি, অর্থাৎ অন্যভাবে দেখতে পাচ্ছি! তার মানে হলো, আমাদের ইন্দ্রিয় দ্বারা কোনো কিছু অনুধাবন করতে পারাই হলো দেখা।
একটি সাধারণ প্রশ্ন প্রায়ই আসে, আকাশ কেন নীল! খুবই সহজ এর উত্তর, বায়ুমণ্ডল দ্বারা নীল রঙের আলোর বিচ্ছুরণ বেশি হয় বলে। কারণ হিসেবে বলা হয় যে যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত কম, তার বিচ্ছুরণ তত বেশি (বায়ুমণ্ডলে আলোর বিচ্ছুরণ নির্ভর করে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চতুর্থ ঘাতের ব্যস্তানুপাতে)। শুধু এই কারণেই আকাশের রং নির্ধারিত হলে কিন্তু আকাশের রং বেগুনি হওয়ার কথা। কারণ, বেগুনি রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম। তার মানে শুধু বিচ্ছুরণের মাধ্যমে আকাশের নীল রং ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না।
এই শতকের অনেক বড় একটি আবিষ্কার হলো মহাকর্ষ তরঙ্গ দেখতে পাওয়া, যা আইনস্টাইন গণিতের মাধ্যমে দেখতে পেয়েছিলেন ১৯১৬ সালের দিকে। তার প্রায় ১০০ বছর পর ২০১৬ সালে এই মহাকর্ষ তরঙ্গ বাস্তবে ধরা পড়ে, মানে আমরা দেখতে পাই।
এর সঙ্গে বিজ্ঞান দেখতে পেল দুটো ব্ল্যাকহোলের নাচ, প্রায় ১৩০ কোটি বছর আগে খুব অল্প সময়ের জন্য দুটো ব্ল্যাকহোল নাচতে নাচতে (ঘুরপাক খেতে খেতে) এক হয়ে যায় এবং এই ঘটনা থেকেই বের হয়ে আসে মহাকর্ষ তরঙ্গ। সেই তরঙ্গ ধরা পড়ে লাইগো নামের যন্ত্রটিতে। মহাকর্ষ তরঙ্গ—যা কিনা সবকিছুর ভেতর দিয়েই যেতে পারে—দিয়ে বিজ্ঞান অচিরেই মহাবিশ্ব সম্পর্কে আরও ভালো এবং স্পষ্টতর ধারণা দিতে পারবে, এমনকি মহাবিশ্বের সৃষ্টি সম্পর্কেও বিজ্ঞানের ধারণা স্পষ্ট হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।