জেন-জির আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে প্রকাশ্যে ফেরার পর বললেন নেপালের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি— তিনি দেশ ছেড়ে পালাবেন না এবং সংশোধিত পরিস্থিতিতে দেশকে সাংবিধানিক পথে ফেরত আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভক্তপুরের গুন্ডুতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেয়া তার প্রথম প্রকাশ্য বক্তব্যে এসব বলেন তিনি।
কেপি শর্মা ওলি সরকারি বাসভবন ছাড়ার ১৮ দিন পর শনিবার প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে এসে বলেন, “আপনারা কি মনে করেন এই ভিত্তিহীন সরকারের হাতে দেশ ছেড়ে দিয়ে আমরা পালিয়ে যাবো?” তিনি দাবি করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের ম্যান্ডেট গ্রহণ করে নয় বরং ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে।
চলতি মাসের শুরুতে নেপালে জেন-জির নামে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়—সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা দুর্নীতি, কর্মসংস্থান সংকট ও প্রশাসনিক অনিয়মের বিরুদ্ধে সড়কে নেমে পড়ে। বিক্ষোভ দমনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ দমনকালে পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত এবং কয়েকশ আহত হওয়ার খবর আসে। পরবর্তীকালে ৯ সেপ্টেম্বর কেপি ওলি পদত্যাগ করেন।
ওলি তার ভাষণে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “আমি সরকারি কর্মকর্তাদের কী নির্দেশ দিয়েছিলাম, সেই সময়কার নির্দেশনাগুলো জনসমক্ষে প্রকাশ করুন।” একই সঙ্গে তিনি বর্তমান সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থারও সমালোচনা করে বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় তার নিরাপত্তা-হুমকি নিয়ে তথ্য দেয়ার পরও সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
ওলি গত ১৮ সেপ্টেম্বর গুন্ডুতে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন; এরপর থেকেই তিনি সীমিত পরিসরে যোগাযোগ রাখলেও শনিবার প্রথমবার মাঠে এসে সমর্থকদের সামনে বক্তব্য দেন। তিনি আগের বক্তব্যও পুনরায় উল্লেখ করেছেন যে, তাঁর সরকারের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ পায়নি এবং অপ্রাসঙ্গিক শক্তি প্রয়োগের ঘটনাগুলো স্বাধীনভাবে তদন্ত হওয়া উচিত।
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নেপালের সেনাবাহিনী এই ঘটনার সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল—বিক্ষোভ সশম্ত করার প্রেক্ষিতে কিছু সময় সরকার ও মন্ত্রীরা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দৃশ্যপটে উত্তেজনা কমাতে আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সমঝোতার আহ্বানও উঠেছে, তবে পরিস্থিতি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নজরে রয়ে গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।