আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রাথমিক ব্যর্থতা পেছনে ফেলে নাগরিকদের জন্য আরও দ্রুত করোনা টিকা দেবার উদ্যোগ নিচ্ছে ইইউ৷ ন্যায্য বণ্টনের স্বার্থে অ্যাস্ট্রাজেনিকা কোম্পানির টিকা রপ্তানি বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছেন শীর্ষ নেতারা৷ খবর ডয়চে ভেলের।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় টিকার অনুমোদন ও টিকা কেনার ক্ষেত্রে ঠিক সময়ে যথেষ্ট উদ্যোগ না নেওয়ার অভিযোগে জর্জরিত ইউরোপীয় কমিশন৷ সদস্য দেশগুলি টিকা কেনা ও বণ্টনের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব কমিশনের হাতে ছেড়ে দেওয়ায় সেই চাপ আরও বেড়ে চলেছে৷ যথেষ্ট পরিমাণ টিকা হাতে না পাওয়ায় টিকাকরণ কর্মসূচি অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে৷
এদিকে করোনা সংক্রমণের ‘তৃতীয় ঢেউ’ ইউরোপে সংকটের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে৷ এমনই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ইইউ শীর্ষ নেতারা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলেন৷ তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলিতে করোনা টিকা উৎপাদন আরও বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছেন৷
পাকা চুক্তি, আগাম অর্থ ও প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও টিকা সরবরাহে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনিকা৷ ইউরোপে বিপুল পরিমাণ টিকা উৎপাদন হলেও তার সিংহভাগ বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছে৷ অথচ ইউরোপের বাইরে থেকে টিকা আনার কোনও উদ্যোগ দেখাচ্ছে না৷
ইইউ শীর্ষ নেতারা কোম্পানির এমন আচরণের ফলে চরম বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করে টিকা রপ্তানির প্রক্রিয়ায় আরও কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নিলেন৷ এর আওতায় প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়নকে যথেষ্ট টিকা সরবরাহ না করলে অ্যাস্ট্রাজেনিকা টিকার রপ্তানি বন্ধ রাখা হবে৷
উল্লেখ্য, চুক্তি অনুযায়ী জুন মাসের শেষের মধ্যে এই কোম্পানিকে ৩০ কোটি টিকা সরবরাহ করতে হবে৷ অথচ ইইউ এখনও পর্যন্ত মাত্র ১০ কোটি টিকা হাতে পেয়েছে৷
ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, কমিশনকে বোঝাতে হবে যে, ইউরোপের নাগরিকরা টিকার ন্যায্য ভাগ পাচ্ছেন৷
টিকা রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে ইইউ সামগ্রিকভাবে দোটানায় রয়েছে৷ অনেক নেতা আশা করছেন যে, হুমকির ফলেই কাজ হবে, বাস্তবে এমন সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত কার্যকর করতে হবে না৷ তা না হলে পালটা নিষেধাজ্ঞা শিল্পজগতের ক্ষতি বয়ে আনতে পারে৷
তবে অ্যাস্ট্রাজেনিকা কোম্পানি যেভাবে ব্রিটেনের প্রতি ‘পক্ষপাত’ দেখিয়ে একতরফাভাবে সে দেশে টিকা রপ্তানি করে চলেছে, সেই পথ বন্ধ করার বিষয়ে ঐক্যমত দেখিয়েছেন ইইউ নেতারা৷
ব্রিটেন ইইউ-তে উৎপাদিত দুই কোটি দশ লাখ টিকা পেলেও সে দেশ থেকে একটি টিকাও ইউরোপে না আসার কারণে সেই ক্ষোভ আরও বেড়ে গেছে৷ বুধবার দুই পক্ষই সব নাগরিকের কল্যাণে বিরোধ মেটানোর অঙ্গীকার করেছে৷
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বলেন, এবার ভালোমানুষির দিন শেষ৷
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে করোনা টিকার ব্যাপক ঘাটতির পর আগামী তিন মাসে সরবরাহ অনেক বেড়ে যাবে বলে আশা করছে ইইউ৷ বায়োনটেক-ফাইজার কোম্পানি ২০ কোটি, মডার্না কোম্পানি সাড়ে তিন কোটি এবং জনসন অ্যান্ড জনসন সাড়ে পাঁচ কোটি টিকা সরবরাহের অঙ্গীকার করেছে৷
ইইউ সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেল বলেন, এই বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে৷ টিকা সরবরাহ বাড়ানো এবং ইইউ সদস্য দেশগুলিতে টিকার ন্যায্য বণ্টন চালিয়ে যাওয়া হবে৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।