অর্থনৈতিক মন্দা, বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং তামাকের অতিরিক্ত মজুদের ফলে ইন্দোনেশিয়ার সিগারেট শিল্প বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। দেশটির দুই প্রধান কোম্পানি—ফিলিপ মরিস মালিকানাধীন এইচএম সাম্পোয়েরনা ও গুদাং গারাম—বৃহৎ লোকসানের মুখে পড়েছে, আর পুরো শিল্পখাত অস্তিত্ব সংকটের সম্মুখীন।
নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ায় ধূমপায়ীর সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বেশি। সরকারি জরিপ অনুযায়ী প্রায় ৭ কোটি মানুষ ধূমপান করে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ ১০–১৮ বছরের কিশোর। ২০২৪ সালে সরকার ন্যূনতম সিগারেট কেনার বয়স ১৮ থেকে ২১ করেছে, তবে এর কার্যকর প্রভাব দেখা যায়নি।
গুদাং গারামের মুনাফা গত এক বছরে ৮০ শতাংশের বেশি কমে গেছে, আর সাম্পোয়েরনার বিক্রিও ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। শেয়ারের দামও তিন বছর ধরে পতনের পথে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থায় আঘাত হেনেছে।
সরকারের আয়ও কমেছে; সিগারেট শুল্ক থেকে রাজস্ব ২০২৩ সালে ১৭ বছরের মধ্যে প্রথমবার হ্রাস পেয়েছে। কারণ, আইনি সিগারেটের দাম এতটাই বেশি যে মানুষ অবৈধ সিগারেট কিনছে বেশি। বর্তমানে একটি সিগারেটের অর্ধেকেরও বেশি দাম কর হিসেবে কেটে নেওয়া হয়।
সংকটের মধ্যে কোম্পানিগুলো উৎপাদন কমিয়ে কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছে। শিল্পে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ কর্মরত থাকায় এই পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। শ্রমিক সংগঠনগুলো অভিযোগ করছে, বড় কোম্পানিতে কর্মী সংখ্যা কমছে; গুদাং গারাম বলছে এটি ছাঁটাই নয়, বরং আগাম অবসরের সুযোগ।
সংকট নিরসনে সরকার নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। আগামী বছর আর শুল্ক বাড়ানো হবে না, বরং অবৈধ সিগারেট বাজার বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সাল থেকে শিল্পখাতের পুনরুদ্ধার সম্ভব, তবে তা নির্ভর করবে সরকার কতটা কার্যকরভাবে অবৈধ বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং কোম্পানিগুলো নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে কি না তার ওপর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।