বর্তমান বিশ্বের অর্থনীতি-বাণিজ্য, গুপ্তচরবৃদ্ধি, শিক্ষা, প্রযুক্তি সবকিছুকে ইসরায়েল যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে তাতে এই রাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব মনে হচ্ছে। ইসরায়েল এভাবে প্রভাব বিস্তার করতে থাকলে হয়তো অপ্রতিরোধ্য রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে যাবে।
বিংশ শতাব্দীর সময়ে অনেক জায়নিস্ট ইহুদি অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তাদের এই শক্তিমত্তা বিশ্বের অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্রের সরকারকে নিজেদের পক্ষে কথা বলতে বাধ্য করেছে।
১৮৯৭ সালের জায়োনিস্ট সম্মেলন হয় যার প্রধান লক্ষ্য ছিল ফিলিস্তিনের বুকে ইসরায়েল নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। ইউরোপের বুকে ইসরায়েল এর অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক প্রভাবের ফলে তাদের সাথে পশ্চিমা বিশ্বের স্বার্থের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
মধ্যপ্রাচ্যে ইজরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এখানে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ অক্ষুন্ন থাকছে। ইজরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়ার মাত্র ১০ মিনিট এর মধ্যেই আমেরিকা তাদের স্বীকৃতি দেয়। প্রথমে অনেক রাষ্ট্র ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে চায়নি। আর তাদের ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবের ফলে এখন বিশ্বের ৮৩ শতাংশ দেশ তাদের স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছে।
এ রাষ্ট্রের একটি উদ্দেশ্য হচ্ছে তারা এতটা শক্তিমত্তা প্রদর্শন করতে চায় যে যেন তাদের কেউ অস্বীকার করতে না পারে। আরবরা শুরুতে না চাইলেও বারবার ইজরায়েল এর কাছে যুদ্ধে হেরে তারা এখন এ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে।
বাহরাইন, সুদান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, মরক্কো ইত্যাদি মুসলিম রাষ্ট্র ইজরায়েলকে স্বীকৃতি এবং সহযোগিতা করতে বাধ্য হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ইজরায়েলের হস্তক্ষেপ করা একটি সাধারণ বিষয়। এজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইজরায়েলের অনেক লবিস্ট গ্রুপ রয়েছে। এর মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী হচ্ছে ক্রিস্টিয়ান ইউনাইটেড ফর ইসরাইল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর যেন জয়লাভ করে সেজন্য তারা মিলিয়ন ডলারের উপরে ফান্ডিং করে থাকে। নোবেল পুরস্কার জেতা আমেরিকার 37% লোকই ইহুদি। ইসরাইল একই সাথে রাশিয়ার সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে।
প্রায় এক লাখ ইসরাইলি নাগরিক রাশিয়ায় বসবাস করে। রাশিয়াকে করোনার টিকে উৎপাদনে মূল্যবান সহযোগিতা প্রদান করে ইসরাইল। বর্তমানে ইজরাইল সামরিক শক্তিতে খুবই পারদর্শিতা দেখাতে সক্ষম হচ্ছে।
ইসরাইলের সেনাবাহিনী কখনো কোন যুদ্ধে পরাজিত হতে চায় না। তাদের নারী-পুরুষ যুবকসহ সকল নাগরিককে বিশেষ সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হয়। ২০২১ সালে তারা ২৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি শুধু সামরিক খাতে ব্যয় করে।
ইজরাইল একই সাথে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। বড় বড় মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি জায়নিস্ট সদস্যদের দখলে। ওয়ার্নার ব্রুস, পারামাউন্ট, সিবিএস এর মত মিডিয়া জায়ান্ট তাদের লোকেরাই নিয়ন্ত্রণ করে। আমাজন, পেপাল এবং অনেক টেক জায়ান্ট কোম্পানির উপর ইহুদিদের প্রভাব বিদ্যমান।
আপনি ইসরাইলকে বিশ্বের মোড়ল না বললেও বর্তমান দুনিয়ার মোড়লদের নিয়ন্ত্রণ করতে এবং তাদের পক্ষে নিয়ে আসার সক্ষমতা এ রাষ্ট্রের রয়েছে। ইজরায়েল যদি এভাবে উন্নতি করতে থাকে তাহলে হয়তো তারা আসলেই অপ্রতিরোধ্য রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।