জাতিসংঘের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার সরকার এখন আগের চেয়ে আরও বেশি মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে। বিশেষ করে যারা বিদেশি সিনেমা ও টিভি সিরিজ দেখে বা তা বিতরণ করে, তাদের জন্য এই কঠোর শাস্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, কিম জং উন জনগণের তথ্যপ্রাপ্তির সুযোগ সীমিত করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর জানায়, গত এক দশকে উত্তর কোরিয়া তার নাগরিকদের জীবনের প্রতিটি দিক আরও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। আধুনিক বিশ্বে আর কোনো জনগোষ্ঠীর ওপর এত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গত ১০ বছরে উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে আসা ৩০০-এর বেশি মানুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের পর অন্তত ৬টি নতুন আইন চালু হয়েছে, যা বিদেশি চলচ্চিত্র ও টিভি কনটেন্ট দেখা বা শেয়ার করার মতো অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড প্রযোজ্য করেছে। ২০১৯ সালের পর পালিয়ে আসা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ২০২০ সাল থেকে বিদেশি কনটেন্ট বিতরণের জন্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সংখ্যা বেড়েছে। এসব মৃত্যুদণ্ড জনসমক্ষে গুলি করে কার্যকর করা হয়, যা জনগণের মধ্যে চরম ভয় সৃষ্টি করে।২০২৩ সালে পালিয়ে আসা কাং গিউরি নামের একজন উত্তর কোরিয়ান জানান, তার তিন বন্ধু দক্ষিণ কোরিয়ার কনটেন্ট রাখার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড পান। তিনি বলেন, ‘এখন মাদকাসক্ত অপরাধী এবং বিদেশি কনটেন্ট দেখার অপরাধকে সমান বলে মনে করা হয়।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে উত্তর কোরিয়ার জনগণের ভোগান্তি আরও বাড়বে। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, কিম জং উন ২০১১ সালে ক্ষমতায় এলে জনগণের জীবনে উন্নতির যে আশা তৈরি হয়েছিল, তা দ্রুতই ফিকে হয়ে গেছে। ২০১৯ সাল থেকে যখন তিনি পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে অস্ত্র কর্মসূচিতে জোর দেন, তখন থেকেই মানুষের জীবনযাত্রা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
“https://inews.zoombangla.com/%e0%a7%a8%e0%a7%a8-%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%9f-%e0%a6%b8%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%ae-104/
প্রতিবেদনে উপসংহার টানা হয়েছে যে, ‘গত ১০ বছরে সরকার জনগণের ওপর প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, যার ফলে তারা নিজেদের অর্থনৈতিক, সামাজিক বা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।’ উন্নত নজরদারি প্রযুক্তি এই দমন-পীড়নকে আরও সহজ করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।