জুমবাংলা ডেস্ক : কক্সবাজারের মৎস্যঘাটে উৎসবের আমেজে জেলেদের মধ্যে। উপকূল থেকে বঙ্গোপসাগরে চোখ রাখলেই দেখা মিলে শত শত ট্রলারের সারি। কোনটি যাচ্ছে, কোনটি আসছে, আর কোনটি মাছ ধরছে সাগরে। রাতে এসব ট্রলারের মাছ ধরার দৃশ্য দেখে মনে হয়, সাগরের ওপারে বুঝি একটি গ্রাম আছে। সেখানে কুপি বাতি জ্বালিয়ে পড়ালেখা করছে শিশুরা! কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকের মুখে প্রায়ই শোনা যায় এই মন্তব্য।
ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধি নির্বিঘ্ন করার জন্য প্রতিবছর মে থেকে জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন এবং অক্টোবর মাসে আরো ২২ দিন সাগরে ও নদী মোহনায় মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে সরকার। এ বছরের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা গত ২০ মে থেকে শুরু হয় এবং ২৩ জুলাই মধ্যরাতে অতিবাহিত হয়। এরপরই অনুকূল আবহাওয়ায় সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছে কক্সবাজারের ট্রলারগুলো। বর্তমানে কক্সবাজারের প্রায় শতভাগ ট্রলার সাগরে আসা যাওয়া করছে বলে জানায় ট্রলার মালিক সমিতি। কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ বলেন, কক্সবাজারে ছোট-বড় প্রায় ৭ হাজার মাছ ধরা বোট রয়েছে। এসব ট্রলারের অর্ধলক্ষাধিক জেলে এখন সাগরে নিয়মিত আসা-যাওয়া করছে। দীর্ঘদিন মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ইলিশসহ অন্যান্য মাছ উপকূলের কাছাকাছি চলে এসেছে। ফলে জ্বালানি খরচ কম হওয়ায় কক্সবাজারের প্রায় সকল ট্রলার উৎসব আমেজে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরছে। মাছও ধরা পড়ছে ভালোই।
দুই মাস নির্জীব থাকা জেলেপল্লীগুলো এখন প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর হয়ে ওঠেছে। শহরের প্রধান পোতাশ্রয় কস্তরাঘাট ও ফিশারীঘাটসহ শহর ও শহরতলীর অন্যান্য ঘাটগুলোও জেলেদের আনাগোনায় এখন সদাচঞ্চল।
কক্সবাজার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটস’ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী বলেন, শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ২২ থেকে ২৩ মেট্রিক টন ইলিশ রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্যস’ানে সরবরাহ করা হচ্ছে। ইলিশের দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালোই। তিনি জানান, ওজনভেদে ইলিশের দামও হয়ে থাকে বিভিন্ন রকম। ৩শ-৪শ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৫শ টাকা, ৫শ থেকে ৬শ গ্রামের ইলিশ ৬শ থেকে সাতশ টাকা, সাড়ে ৮শ থেকে ৯শ গ্রামের ইলিশ এক হাজার টাকা। এছাড়া এক কেজি ওজনের ইলিশ এগারশ’ থেকে বারশ’ টাকা এবং দেড় কেজি থেকে ১৮শ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি দেড় হাজার থেকে ১৮শ টাকায় বিক্রি হয়।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ীরা বলেন, ফিশারীঘাটে এখন গড়ে প্রতিদিন ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার পিস ইলিশ আসছে। এর মধ্যে ৫০টি থেকে ১০০টির ওজন থাকে দেড় কেজি থেকে ১ হাজার ৯শ গ্রামের মধ্যে। বেশিরভাগ ইলিশের ওজন ৩শ গ্রাম থেকে সাড়ে ৭শ গ্রামের মধ্যে। আর এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ থাকে মাত্র কয়েকশত।
এর মধ্যে ছোট ইলিশগুলো স’ানীয় বাজারে এবং বড় ইলিশগুলো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস’ানে সরবরাহ করা হয়।
জেলা বোট মালিক সমিতি জানায়, সাগরে মাছ ধরা বড় নৌকায় ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌকায় ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। ট্রলারগুলোর মধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর বঙ্গোপসাগরে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে।
ইলিশ জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে গেলেও মাছ পাওয়া সাপেক্ষে ৩/৪ দিনের মধ্যেও ফিরে আসে। তবে বিহিন্দি জালের বোটগুলো মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায় এবং দিনে দিনেই ফিরে আসে। আর এসব জেলে বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে, যাকে স’ানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়।
চিরবিদায় নিলো শিল্পা শেঠির ‘প্রথম সন্তান’, শোকে যা করলেন বলিউড অভিনেত্রী
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।