আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টিউমার শব্দটি আজকাল আর আমাদের কাছে অচেনা নয়। আর তাই আমরা এ কথাও জেনে গিয়েছি, টিউমার তথা শরীরের কোনও উপবৃদ্ধি মাত্রেই ভয়ঙ্ককর নয়। বিপদের আশঙ্কা ডেকে আনে সেই টিউমারগুলোই, যারা মারণরোগ ক্যান্সারের সম্ভাবনাকে উসকে দেয়।
তাই টিউমার ধরা পড়লেই আগেভাগে তার ম্যালিগন্যান্সি বা মারণক্ষমতা পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন চিকিৎসকেরা। যেমন পরামর্শ দিয়েছিলেন ভারতের গুজরাটের আমেদাবাদ শহরের বাসিন্দা এই নারীকেও। তার ওজন বেড়ে যাচ্ছিল হঠাৎ করে, বিশেষ করে পেটের কাছে অহেতুক মেদবৃদ্ধি ঘটছিল।
চিকিৎসকের পরামর্শ মতো আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করিয়ে দেখা গেল, সেখানে বাসা বেঁধেছে একটি টিউমার। তবে পরীক্ষা করে দেখা গেল সে বেশ শান্তশিষ্ট নিরীহ, অর্থাৎ বিনাইন। ক্যান্সারের আশঙ্কা নেই দেখে খানিক নিশ্চিন্ত হওয়া গেল বটে, কিন্তু শরীরে একটি অবাঞ্ছিত অতিথি বয়ে বেড়াতে কারই বা ভাল লাগে!
অতএব, কথা উঠল অপারেশনের। আর এখানেই বাঁধল গোল। দেখা গেল, শরীরের ভেতরের যন্ত্রপাতির সঙ্গে তিনি এমনই বন্ধুত্ব পাতিয়ে বসেছেন যে সেখান থেকে তাকে বের করে আনে এমন সাধ্য আছে কার! অপারেশন করলে অন্য অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে, এমনটাই আশঙ্কা করেছিলেন চিকিৎসকেরা।
তারপর কেটে গিয়েছে ১৮টি বছর। মানুষ দৈর্ঘ্যে প্রস্থে বাড়ে, টিউমারই বা বাড়বে না কেন! দেখতে দেখতে তার ওজন হয়ে দাঁড়িয়েছিল ৪৭ কেজি। ৫৬ বছর বয়সী ওই নারীর চলাফেরা, ওঠাবসা, এক কথায় জীবনযাপনই প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল ওই বিশাল টিউমারের কারণে। টিউমারের জন্য নিজেদের জায়গা থেকে সরে যাচ্ছিল হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, জরায়ু, কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোও। অবশেষে আর কোনও উপায় না দেখে অপারেশনের কথা ভাবেন চিকিৎসকেরা।
সৌভাগ্যই বলতে হবে, সফল হয় এই জটিল অস্ত্রোপচারটি। কেবল ৪৭ কেজি ওজনের টিউমারই নয়, তার সঙ্গে কোশ এবং অতিরিক্ত ত্বকের অংশ মিলে নারীর শরীর থেকে কতখানি ওজন বাদ পড়েছে জানেন? মোট ৫৪ কেজি! আর এই অস্ত্রোপচারের পর রোগীর ওজন হয়েছে ৪৯ কেজি, টিউমারের থেকে মাত্র দু’ কেজি বেশি। নিজের স্বাভাবিক জীবন ফেরত পেয়ে আনন্দে আত্মহারা রোগী। আর এমন বিরল অস্ত্রোপচার সফল হওয়ায় উৎসাহিত চিকিৎসকেরাও। সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।