জুমবাংলা ডেস্ক : জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁর দেশ ও জনগণের স্বার্থ নিয়ে কাজ করার কথা। অথচ তিনিই কি না প্রবাসে জড়ালেন অর্থপাচার ও মানবপাচারের মতো ঘৃণ্য অপরাধে। অর্থ ও মানব পাচারের মামলায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন কুয়েতের আদালত।
এমন নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হওয়ার পরও তার সংসদ সদস্য পদ থাকবে কি থাকবে না এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
সংবিধানে সংসদ সদস্যপদ বাতিল-সংক্রান্ত অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি কোনো উপযুক্ত আদালত তাকে অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা করেন; তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর যদি দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করেন; তিনি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন; তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন; তিনি যদি প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন; সংসদের অনুমতি ছাড়া তিনি যদি একাদিক্রমে নব্বই দিন অনুপস্থিত থাকেন।’
কুয়েতে দণ্ডিত হওয়ায় পাপুলের এমপি পদ থাকবে কি-না, এমন প্রশ্নে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আদালত রায় দিয়েছেন মানেই সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে, বিষয়টি তেমন নয়। সংসদ তখনই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে, যখন তাঁর বিচারের রায়ের কপি সংসদের কাছে পৌঁছবে। তবে সেটা ওই দেশের সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সরকারের কাছে পাঠাতে হবে।’ অবশ্য আদালতের রায়ের সার্টিফায়েড কপিসহ স্পিকারের কাছে কেউ আবেদন করলে তা স্পিকার বিবেচনা করতে পারেন বলে তিনি মনে করেন।
এ বিষয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য যদি ফৌজদারি অপরাধ করেন, সাজা পৃথিবীর যেখানেই হোক, তাহলে তার এমপি পদ থাকবে না। এমপি পদ খারিজের জন্য শুধু প্রমাণ হতে হবে, তিনি ফৌজদারি অপরাধ করেছেন, সেই অপরাধের জন্য তার সাজা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অবশ্যই কুয়েতের আদালতের রায়ের অনুলিপি পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
জানতে চাইলে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, আমাদের সংবিধানে বলা আছে দুই বছরের অধিক কারাদণ্ড হলে সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে। বিচার দেশীয় আইনে হতে হবে কিনা, এখানে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আমার মত হবে, শাস্তি হওয়া, জেল খাটা কয়েদিকে তো আর কেউ এমপি হিসেবে রাখতে চাইবেন না।
তিনি বলেন, এমপি পাপুলের এ বিষয়টি একেবারেই নতুন। এমন প্রশ্ন এর আগে আসেনি। আমি মনে করি, এর ব্যাখ্যা জানতে যদি আদালতে যেতে হয়, তাহলে আদালতও বলবেন, যিনি জেল খেটেছেন, তিনি খারাপ লোক। ফলে তার এমপি পদ থাকতে পারে না। জাতীয় সংসদের স্পিকার ও নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন নিশ্চয়। সূত্র : কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।