জুমবাংলা ডেস্ক: জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তৃতীয় জানাযায় সর্বস্তরের জনতার ঢল নেমেছিল। সোমবার বাদ আসর সেখানে তাঁর জানাযা পড়ান বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব।
জানাযার আগে দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এরশাদের জীবনী তুলে ধরেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য তার বিপুল অবদান। ইসলামের জন্য তিনি অনেক কাজ করেছেন। মানুষ হিসেবে কথা ও কাজে ভুলত্রুটি থাকতে পারে। আমি এরশাদের ভাই হিসেবে ক্ষমা চাই। দোয়া চাই। তাকে সবাই ক্ষমা করে দেবেন। তাকে যেন আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।
বিকাল ৫টায় সাবেক রাষ্ট্রপতির মরদেহ ফ্রিজার ভ্যানে বায়তুল মোকাররম মসজিদে আনা হয়। জানাযায় অংশ নিতে আসরের নামাজের এক ঘণ্টা আগে থেকে এরশাদের অসংখ্য ভক্ত, নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক ব্যক্তি মসজিদ প্রাঙ্গনে ভিড় করেন। জাতীয় মসজিদ কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার পর এর আশেপাশের সড়কেও মানুষ ভিড় জমান ।
সকালে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর দুপুর ১২টায় এরশাদের মরদেহ কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে হাজার হাজার নেতাকর্মী ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান আশির দশকের প্রতাপশালী এই সামরিক শাসককে। প্রিয় নেতার নিথর দেহটি দেখে কেউ কেঁদে ফেলেন, কেউ আবার শোকে স্তব্ধ হয়ে যান।
তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দলের চেয়ারম্যানকে একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও বিদায় জানান ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অসংখ্য ভক্ত, নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক ব্যক্তি।
রবিবার বাদ জোহর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত এরশাদের প্রথম জানাযায় হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। জানাযায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম জানাযার সময় এরশাদের ছোট ভাই ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের ভাইয়ের জন্য সবার কাছে ক্ষমা চান। তিনি বলেন, ‘মানুষ মাত্রই ভুলত্রুটি হয়ে থাকে। উনার (এরশাদ) কোনও কাজে ভুল হয়ে থাকলে, তার ওপর কোনও ক্ষোভ থাকলে ক্ষমা করে দেবেন। আমি তার ভাই হিসেবে ক্ষমা চাচ্ছি।’
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল ১০টায় তেজগাঁও বিমনবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে রংপুর নেওয়া হবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মরদেহ।
মরদেহবাহী হেলিকপ্টারে করে রংপুর যাবেন- দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের, এরশাদ পুত্র রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন বাবলা, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, আজম খান, তাজ রহমান ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু।
বাদ জোহর রংপুর ঈদগাহ মাঠে জানাযা শেষে এরশাদের মরদেহ ঢাকায় নিয়ে আসা হবে। বাদ আসর সামরিক কবরস্থানে দাফন করার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান খালেদ আখতার।
রংপুরেও কবর খনন করা হয়েছে। এ বিষয়ে খালেদ আখতার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সামরিক কবরস্থানে দাফনের সিদ্ধান্ত রয়েছে। সে অনুযায়ী ঢাকায় দাফনের জন্য সব প্রস্তুতি রয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদর্শনের সব প্রস্তুতি রয়েছে। রংপুরে তারা যদি জোর করে দাফন করে তাহলে সেরিমনিয়ালটা আর হবে না।’
রবিবার (১৪ জুলাই) সকাল পৌনে ৮টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এরশাদ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।