ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনেকেই কম খাওয়ার অভ্যাস দিয়ে শুরু করেন। তারা মনে করেন, খাবার খাওয়া কমিয়ে দিলে দ্রুত ওজন কমানো সহজ হবে। এতে ক্যালোরি গ্রহণ কমানো সম্ভব হলেও শরীর এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর অপ্রত্যাশিত এবং ক্ষতিকারক প্রভাব পড়তে পারে। পুষ্টির ঘাটতি থেকে ধীর বিপাক পর্যন্ত কম খাওয়ার সম্ভাব্য ক্ষতি ক্ষণস্থায়ী সুবিধার চেয়ে বেশি। আপনার খাবারের পরিমাণ কমানোর আগে এর সম্ভাব্য ক্ষতিগুলো সম্পর্কেও জানা জরুরি-
মেটাবলিক স্লোডাউন
ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ অনেকটা কমিয়ে দিলে আমাদের শরীর এটিকে তার শক্তির মজুদের জন্য হুমকি বলে মনে করে। যার ফলে শক্তি সংরক্ষণের জন্য বিপাক ধীর হয়ে যায়। ফলস্বরূপ শরীর বিশ্রাম এবং শারীরিক কার্যকলাপের সময় কম ক্যালোরি পোড়ায়। এই বিপাকীয় অভিযোজন ওজন কমানোর প্রক্রিয়া কঠিন করে তোলে এবং স্বাভাবিক খাওয়ার ধরন পুনরায় চালু করা হলে তা ফিরে পাওয়া সহজ করে তোলে।
পেশী ক্ষয়
মারাত্মকভাবে ক্যালোরি কমানোর ফলে চর্বি হ্রাসের পাশাপাশি পেশী ক্ষয় হতে পারে। পেশী বিপাকীয়ভাবে সক্রিয় টিস্যু, যার অর্থ এটি চর্বির চেয়ে বেশি ক্যালোরি পোড়ায়, এমনকি বিশ্রামেও। পেশী ক্ষয়ের ফলে বেসাল মেটাবলিক রেট (BMR) হ্রাস হয়, য বিপাককে আরও ধীর করে দেয়। পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ এবং প্রতিরোধের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশী ভর বজায় রাখা বা বৃদ্ধি করা স্বাস্থ্যকর বিপাক এবং কার্যকর ওজন হ্রাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুষ্টির ঘাটতি
বেশিরভাগ সময়ই কম খাওয়া মানে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সহ সবকিছু কম খাওয়া। ক্যালোরি গ্রহণ অত্যাধিক কম হলে ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে যা শরীরের সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজন। এই ঘাটতিগুলো দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হাড়ের ঘনত্ব হ্রাস এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা দুর্বল সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ওজন কমানোর সময় সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
মানসিক প্রভাব
খাবার খাওয়ার পরিমাণ অনেকটা কমিয়ে দিলে তা মানসিক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি খিটখিটে মেজাজ, বাড়তি তৃষ্ণা এবং খাবারের প্রতি উচ্চ আকাঙ্ক্ষার কারণ হতে পারে। এর ফলে বেশি খেয়ে ফেলার ভয়ও সৃষ্টি হতে পারে। তাই মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে চাইলে খাবারের পরিমাণ খুব বেশি কমাবেন না। বরং যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু খাওয়ার অভ্যাস করুন।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
খুব কম খাওয়ার অভ্যাস হরমোনের ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে, যা ক্ষুধা, তৃপ্তি এবং বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। তৃপ্তি হরমোন লেপটিনের মাত্রা হ্রাস পেলে ক্ষুধার হরমোন ঘেরলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। হরমোনের এই ভারসাম্যহীনতা আপনাকে খাওয়ার পরেও ক্ষুধার্ত রাখতে পারে। ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।