আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যে হারে স্পেনে মৃত্যু হচ্ছে, বিশেষজ্ঞরা তা আগেই ধারণা দিয়েছিলেন। ‘মৃত্যু উপত্যকা’ স্পেনে গতকাল শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো শানচেজ। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সংকটের মুখোমুখি।’
দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ১১ হাজার ৯৪৭ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২৬ হাজার ১৬৮, সুস্থ হয়েছেন ৩৪ হাজার ২১৯। মৃত্যু ও আক্রান্ত আরও বাড়ার আশঙ্কায় দেশটির চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা। যে কারণে দেশব্যাপী সতর্কতার জন্য আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ান প্রধানমন্ত্রী।
পেদ্রো শানচেজ তার ভাষণে বলেন, ‘আরও দুই সপ্তাহ নির্জন ঘরে একাকী থাকা কতটা কঠিন তা আমি বুঝতে পারছি। কিন্তু এই সংকটের মুখে এ ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই। আরও কয়েক সপ্তাহ আমাদের এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকতে হবে।’
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক পরিবারকে ঘরে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। যারা তরুণ তারা তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাবে। যারা বয়স্ক মানুষ আছেন, আপনারা নিজেদের সুরক্ষিত রাখুন। আপনারা এই মুহূর্তটিতে যা করা দরকার তাই করবেন।’
মহামারি করোনার ভয়াবহতার বর্ণনা দিতে গিয়ে পেদ্রো শানচেজ বলেন, ‘আমরা কতটা শান্ত ও স্থির থাকতে পারি এই দিনগুলো, সেই পরীক্ষাই নিচ্ছে। এই দিনগুলো হলো উন্মাদের মতো। এটা আমাদের নিজ নিজ পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে শঙ্কিত করেছে। আমাদের জীবনে এই দিনগুলোই সবচেয়ে কঠিন দিন।’
করোনায় স্পেনের পরিস্থিতি :
করোনায় শুধু প্রাণহানি নয় মন্দায় পড়েছে স্পেনের অর্থনীতি। মহামারি শুরুর পর থেকে দেশটিতে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ৯ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ছিলেন অস্থায়ী কর্মী। প্রায় তিন বছর পর দেশটিতে বেকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ লাখেরও বেশি।
করোনার বিস্তার ঠেকাতে স্পেনে গত ১৪ মার্চ জরুরি অবস্থা জারির পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার ও ওষুধের দোকানপাট ছাড়া অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত এই অবস্থা চালু থাকবে।
কী অবস্থা বাংলাদেশিদের :
দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ বাংলাদেশি। মারা গেছেন একজন। বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ‘রেড জোন’ ঘোষণার পর অধিকাংশ বাংলাদেশি রোজগার হারিয়েছেন। যে কারণে সপরিবারে দুর্বিষহ দিন যাপন করছেন তারা। স্থানীয় কমিউনিটি নেতাদের সহযোগিতায় বাংলাদেশি সামাজিক সংগঠন প্রায় ২ হাজার অসহায় ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে চাল, ডাল, তেলসহ অতি প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহের কার্যক্রম শুরু করেছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসও ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। ইতিমধ্যে দূতাবাস ৩ শত অসহায় ব্যক্তির নাম ও সংগ্রহ করছে। শিগগিরই তা সরবরাহ করা হবে বলে জানান দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মুহাম্মদ মুহতাসিমুল ইসলাম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।