জুমবাংলা ডেস্ক: গেল বছর বোরো ধানের দাম কম থাকায় কৃষক উৎপাদন খরচ তুলতে না পারলেও এবার কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওয়রে কৃষক যখন বোরোর বাম্পার ফলনের কারণে স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু পাকা ধান কাটার সাত দিন আগেই ক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় কৃষকের হাসি মুখ মলিন হয়ে যাচ্ছে।
কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার পনরটি হাওরে বি-২৮ জাতের পাকা বোরো ধান ক্ষেতের শীষে নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে। হাওরগুলো হলো বরুলিয়া হাওর, জোহানশাহী হাওর, পরানের চর, রবিরচর, সিংপুর হাওর, ঘোড়াদীঘা হাওর, বাটিবরাটিয়া হাওর, কুর্শা হাওর, ছাতিরচর হাওর, গুরুই হাওর, কারপাশা হাওর, কারপাশা বড় হাওর, দামপাড়া হাওর, জারুইতলা হাওর, ও নিকলীর বড় হাওরগুলোতে নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত বেশি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় জানায়, চলতি মৌসুমে নিকলীতে ৩৬ হাজার ৩৭৫ একর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বি-২৮ ধান চার হাজার ১২৫ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন হাওর ঘুরে ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আর এক সপ্তাহ পর থেকেই ব্রি-২৮ জাতের ধান কাটা শুরু হতো। এর আগেই নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে।
সদর ইউনিয়নের গবীন্দ্র পুর গ্রামের আব্দুল মিয়া বলেন, আমার দেড় একর ব্রি -২৮ ধানের জমিতে নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় জমির পাকা ধান গাছ চোখের সামনে মরে যাচ্ছে।
কারপাশা ইউনিয়নের নানশ্রী গ্রামের কৃষক ইয়াসিন জানান, বড় হাওরে আমার দুই একর জমিতে এ রোগ দেখা দেওয়া দিয়েছে। জমিতে ধান গাছগুলো মরে খড় হয়ে গেছে। ধান গাছ কেটে আর বাড়িতে আনতে হবে না।
সিংপুর ইউনিয়নের কৃষক আসাদুল মিয়া, দামপাড়া ইউনিয়নের ইসমাইল মিয়া, ছাতিরচর ইউনিয়নের আসাদ মিয়া, জারুতলা ইউনিয়নের সাদেকুর রহমান ও গুরুই ইউনিয়নের মো. কাদির মিয়া জানান, হাওরে জমিতে ওই রোগ দেখা দেওয়ায় বছরের এক মাত্র বোরো ফসল ঘরে তুলতে না পারায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ওই রোগে আমাদের জমির ধান সব শেষ করে ফেলেছে। কী করবো আল্লা-মাহমুদ জানেন।
তারা জানান, ব্রি-২৮ জাতের ধানের জমিতে নেক ব্লাস্ট রোগে আমাদের সবস্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে। নিকলী উপজেলার কৃষকের মধ্যে এ মুহূর্তে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তাফা বলেন, নেক ব্লাস্ট রোগের সৃষ্টি হয় রাতে কুয়াশা, দিনে গরম এবং রাতে শীত, গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টি থেকে। কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করছি।
নিকলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ব্রি-২৮ জাতের পাকা বোরো ধানের নেক ব্লাস্ট রোগ ব্যাপক আকারে দেখা দিয়েছে। রোগ প্রতিকারের জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের নাটিবো, এমিস্টার টপ, টুপার ও নামক কীটনাশক একরে ১২০ মিলিগ্রাম ওষুধের সঙ্গে ২০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে জমিতে স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছে।
এই কর্মকর্তার অভিযোগ, চলতি বছর কৃষকরা ব্রি ২৮ জাতের ধান জমিতে না করার জন্য জমি আবাদের আগেই উপজেলা কৃষি অফিস থেকে লিফলেট ও পরার্মশ দিয়েছি। কিন্ত কৃষকরা কথা শুনেনি।
দাম নেই, বিক্রির জন্য ট্রলার ভর্তি তরমুজ আনলেও ফেলা হচ্ছে নদীতে!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।