জুমবাংলা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বন্দর নগরী চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। এ উপলক্ষে উৎসবের আমেজে পুরো চট্টগ্রাম প্রস্তুত।
শেষ মুহূর্তে নগরজুড়ে চলছে সাজসজ্জা ও প্রচার-প্রচারণার কাজ। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নগরীর পলোগ্রাউন্ডে এ জনসভার আয়োজন চলছে।
সাংবাদিকদের ব্রিফ্রিংয়ে চট্রগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাসির উদ্দীন বলেছেন, চট্রগ্রাম আওয়ামী লীগ ও সর্বস্তরের জনগণ প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে চট্রগ্রাম মহানগর জনসমুদ্রে পরিণত হবে।’
চট্রগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরো বলেন, সমাবেশ থেকে চট্রগ্রাম আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করবে এবং যে কোন অপশক্তি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সবগুলো উন্নয়নমুলক কাজ সম্পন্ন হলে চট্রগ্রাম বিশ্বমানের উন্নত নগরীতে পরিণত হবে। প্রধানমন্ত্রী বেশকিছু উন্নয়নমুলক কাজের উদ্বোধন এবং কিছু উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
মহামারি-কোভিড-১৯ এর কারনে প্রায় তিন বছর ঢাকার বাইরে গত ২৪ নভেম্বর যশোরে এক জনসভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামীকালের জনসভাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং সহযোগি সংগঠনগুলো চুড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং মাইকিং ও ব্যাপক প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। শহরের বিভিন্ন সড়কে বণার্ঢ্যতোরন নির্মাণ এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যানার ও পোস্টার টাঙ্গানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানকে স্বাগত জানাতে নেতৃবৃন্দ নগরীর জামাল খান, কাজির দেউরি, হালিশহর, লালখান বাজার, টাইগার পাস,দেওয়ান হাট, কদমতলী, নিউমার্কেট, আন্দরকিল্লাসহ অন্যান্য স্থানে বিলবোর্ড, ব্যানার, বেলুন,ফেস্টুন এবং পোষ্টার টাঙ্গিয়েছে।
চট্রগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যেগে আগামীকালের জনসভাকে কেন্দ্র করে নগরীর বিভিন্ন এলাকার সড়কের সৌন্দয্য বর্ধনের পাশাপাশি ফুটপাত পরিষ্কার, রং করা, ফ্লাইওভারগুলো আলোকসজ্জিত করা হয়।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক দলীয় ফোরামের সভাগুলোতে দলকে এখন থেকে আরো সময় দেয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। আওয়ামী লীগ প্রধান দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিভিন্ন জেলা সফরের পরিকল্পনা করছেন। এরই অংশ হিসেবে গত ২৪ নভেম্বর যশোর স্টেডিয়ামে প্রথম জনসভা অনুষ্টিত হয়।যশোরের জনসভার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা দেশব্যাপী ুিনর্বাচনী প্রচারনা শুরু করেন।
আগামী ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে শেখ কামাল স্টেডিয়ামে শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে দলীয় সভায় ভাষণ দেবেন।
এসব জনসভায় দলীয় প্রধান আওয়ামী নেতা-কর্মী ও জনগণকে নতুন বার্তা দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনব্যাপী সফরে আগামীকাল সকালে চট্রগ্রাম আসবেন এবং বেশ কয়েকটি কর্মসুচিতে যোগদান করবেন।
তিনি সকালে ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে সামরিক বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। দিনব্যাপী সফরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাশে মিলিটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুকাওয়াজ-২০২২যোগ দেবেন।
তিনি সেখানে কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করবেন। সেখান থেকে দুপুরে হেলিকপ্টারে চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে আসবেন। স্টেডিয়াম থেকে গাড়িতে করে প্রধানমন্ত্রী পলোগ্রাউন্ডে জনসভায় যোগ দেবেন। চট্রগ্রাম নগর, চট্রগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যেগে একটি ১৬০ ফুট লম্বা নৌকার আদলে সভা মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে পলোগ্রাউন্ড মাঠে।
চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার স্থলকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, উত্তর জেলা সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীসহ নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যে জনসভার মাঠ পরিদর্শন করেছেন এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ গত ১৯ নভেম্বর মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে প্রস্তুতি সভা করেছিলেন।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি বলেন, ‘চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভূতপূর্ব উন্নয়ন কাজ করেছেন। তাই ৪ ডিসেম্বর জনসভায় আওয়ামী লীগ ছাড়াও সাধারণ জনগণও উপস্থিত হবে। এ কারণে এবারের জনসভা একটি ঐতিহাসিক জনসভায় রূপ নিবে। পলোগ্রাউন্ড মাঠ ছাপিয়ে বাইরেও জনসমুদ্রে পরিণত হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের নেত্রী আসবেন। এটা আমাদের জন্য পরম আনন্দের। দীর্ঘদিন পর আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশ হচ্ছে পলোগ্রাউন্ডে। এখানে ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ সালাম বলেন, ‘আগামীকালের প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি সমাপ্তির পথে। আশা করি, এবার জনসভায় লোক জমায়েতে অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। জনসভা স্বাচ্ছন্দ্যে দেখতে মাঠের বাইরেও এলইডি টিভি বসানো হচ্ছে।’
তিনি বলেন, পটিয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ৬ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। তাই পটিয়াবাসী উন্মুখ হয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রীকে তাদের কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য। পটিয়া থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সর্বস্তরের মানুষ জনসভায় উপস্থিত হবে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম সফরে ৩০টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এ জন্য জনসভার মঞ্চের পাশে ভিত্তিফলকগুলো স্থাপন করা হয়েছে।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।